img

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত :  ২১:০৪, ২৮ আগষ্ট ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ২১:২৯, ২৮ আগষ্ট ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন

রেজুয়ান আহম্মেদ

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই নিয়োগ নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের এই পদে নিয়োগ দেওয়ার পেছনে তার অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার অভাব রয়েছে।

প্রথমেই বলতে হয়, উপাচার্যের পদটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব। এটি এমন একটি পদ যা শুধুমাত্র প্রশাসনিক দক্ষতা নয়, বরং উচ্চ শিক্ষার নীতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রেও গভীর অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের নিয়োগ নিয়ে প্রকাশিত তথ্য ও তার পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বর্তমানে ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান। এই পদটি তার প্রশাসনিক দক্ষতার প্রমাণ দেয় কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক উচ্চপদে তার অভিজ্ঞতা বা যোগ্যতার পরিচয় দেয় না। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, উপাচার্যের পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় সামগ্রিক প্রশাসনিক, একাডেমিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে নেতৃত্বের দক্ষতা। বর্তমানে, তিনি মূলত একটি নির্দিষ্ট বিভাগে সীমাবদ্ধ, যার ফলে তার অন্যান্য প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।

বিএসএমএমইউতে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত অভিজ্ঞতা ও প্রমাণিত নেতৃত্বের গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান নিয়োগে এসব মানদণ্ড পূরণ হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের পদোন্নতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন এবং শিক্ষার মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক উন্নয়ন সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে উপাচার্যের পদে নিয়োগ দেওয়া জরুরি। তা না হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও শিক্ষার মানের ক্ষতি হতে পারে। 

অতএব, প্রশাসনিক পদে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষকে উচিত হবে অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনমানসে বিশ্বাস ও আস্থা রক্ষায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

img

যৌনতা এবং শারীরিক চাহিদা থেকে জীবনের পরিধি আরও অনেক বড় – এ আর রহমানের আত্মোপলব্ধি

প্রকাশিত :  ০৭:৩২, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:১১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

রেজুয়ান আহম্মেদ

অস্কারজয়ী সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমান, যিনি পৃথিবীকে সুরের মাধ্যমে নতুনভাবে চিনিয়েছেন, সম্প্রতি নিজের জীবনের এক অদেখা অধ্যায় প্রকাশ্যে এনেছেন। সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পর, এক দীর্ঘ নীরবতার শেষে রহমান তাঁর ব্যক্তিগত যাত্রা সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে জীবনের উদ্দেশ্য এবং মানবিক সম্পর্কের মধ্যে শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদার সীমা থাকে না; জীবনের পরিধি আরও অনেক বড় এবং গভীর।

তিনি তাঁর একটি বক্তব্যে বলেন, ‘‘যৌনতার মতো শারীরিক চাহিদা মেটানোই জীবনের সব নয়, কখনও…’’ তাঁর এই উক্তি শুধু একটি সঙ্গীতশিল্পীর দৃষ্টিকোণ নয়, বরং একটি জীবনদৃষ্টি, যেখানে আত্মিক পরিপূর্ণতা এবং মানসিক শান্তি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। রহমানের মতে, আমাদের জীবনে একটি গভীর শূন্যতা রয়েছে, যা শুধুমাত্র শারীরিক সুখ দ্বারা পূর্ণ হতে পারে না। আমাদের আধ্যাত্মিক বা মানসিক উন্নতির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা জীবনকে অর্থবহ এবং পূর্ণতা দেয়।

প্রায়ই সমাজে যৌনতা এবং শারীরিক সম্পর্ককে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু রহমানের অভ্যন্তরীণ জগতের এই খোলামেলা উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের জীবনের অঙ্গনের অনেক বৃহৎ ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে আনন্দ, শান্তি এবং পূর্ণতা আসতে পারে। ‘‘শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদা মেটানোই জীবনের সব নয়’’—এই কথায় তিনি একদিকে যেমন জীবনের উদ্দেশ্য অনুসন্ধান করছেন, তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বও তুলে ধরছেন।

এ আর রহমানের মতে, একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য তখনই ভালো থাকতে পারে, যখন সে জীবনের গভীরে প্রবাহিত হতে পারে। তিনি বলছেন, ‘‘অবসাদ ঘিরে ধরে, কারণ আমার মনে হয়, আমাদের সবার মধ্যেই একটা শূন্যতা রয়েছে।’’ এরই মধ্যে গল্পকাররা, দর্শন, বিনোদন, এমনকি কখনও কখনও ওষুধের মাধ্যমে এই শূন্যতা পূর্ণ করা যায়। কিন্তু জীবনের উদ্দেশ্য সেই সব জিনিসে সীমাবদ্ধ নয়।

এখানে উল্লেখযোগ্য হলো, রহমানের ব্যক্তিগত জীবনের অধ্যায়গুলো। তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলীর প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি একটি অন্তর্দৃষ্টি দেয়, যে যেখানে তিনি তাঁর শূন্যতা, দুঃখ এবং সঙ্কটের মধ্যে থেকেও জীবনের একটি বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ খুঁজে পেয়েছেন। ‘‘এমনকি ভগ্ন হৃদয়ের ভারে ঈশ্বরের সিংহাসনও কেঁপে উঠতে পারে’’—রহমান তাঁর নিজের দুঃখ এবং সংগ্রামকে পৃথিবীর বৃহত্তর দুঃখের সঙ্গে তুলনা করছেন, যেখানে ক্ষতি এবং হতাশা একে অপরকে অনুসরণ করে। তবুও, তিনি এই ভঙ্গুরতার মধ্যে জীবনের অন্য অংশগুলির জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এ আর রহমানের এই বক্তব্যে প্রতিটি মানুষের জীবনের বিভিন্ন দিকের প্রশংসা করা হয়েছে—মানসিক শান্তি, আত্মিক উন্নতি, এবং অন্যের জন্য বাঁচার আকাঙ্ক্ষা। তিনি বলেছেন, ‘‘যখন তুমি অন্যের জন্য বাঁচবে, তখন তোমার মধ্যে এই চিন্তাগুলি আসবে না।’’ এর মাধ্যমে তিনি আমাদেরকে জীবনকে শুধুমাত্র নিজের সুখের জন্য না, বরং একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বাঁচার পরামর্শ দিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এমন একটি নৈতিক ভিত্তি খুঁজে পাওয়া উচিত, যা শুধুমাত্র আমাদের শারীরিক চাহিদা পূরণে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের আধ্যাত্মিক এবং মানসিক উন্নতি, আমাদের জীবনের বাস্তব মূল্যমানের পরিচয় দেয়।





রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

মতামত এর আরও খবর