img

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

প্রকাশিত :  ১৭:০৩, ২৯ আগষ্ট ২০২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

রেজুয়ান আহম্মেদ


ড. মুহাম্মদ ইউনুস, বাংলাদেশের অন্যতম সম্মানিত ব্যক্তিত্ব, বর্তমানে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্বব্যাপী নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং মাইক্রোক্রেডিটের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত ড. ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ড. ইউনুসের অন্যতম লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে পুনর্গঠন করা। তিনি বিশ্বাস করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবলমাত্র শহরকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়, বরং গ্রামাঞ্চল এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়া উচিত। এ জন্য তিনি সামাজিক ব্যবসা মডেলকে আরও সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করেছেন। তার ধারণা, মাইক্রোক্রেডিট এবং সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগগুলো দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে সহায়ক হবে।

দারিদ্র্য বিমোচন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি ড. ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মূল স্তম্ভ। তিনি চান, দেশের প্রতিটি মানুষ স্বনির্ভর হয়ে উঠুক। এজন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঋণ সুবিধা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান করা হবে। ড. ইউনুস বিশ্বাস করেন, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।

ড. ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, একটি সুস্থ ও শিক্ষিত জাতি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন। পাশাপাশি, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে, যাতে করে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি উন্নতমানের শিক্ষা লাভ করতে পারে।

ড. ইউনুস দেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতায় সজ্জিত করতে চান। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশে একটি \'ইনোভেশন সেন্টার\' প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেখানে তরুণরা নতুন প্রযুক্তি ও ব্যবসায় উদ্যোগের জন্য কাজ করতে পারবে। এছাড়া, দেশের প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সেবার আওতায় আনতে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। 

ড. ইউনুসের পরিকল্পনায় পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, পরিবেশের সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। তার পরিকল্পনায় বনাঞ্চল রক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার মতো বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন ড. ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি চান, দেশের প্রতিটি নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হোক এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব দিক। এজন্য নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ঋণ সুবিধা এবং ব্যবসায় উদ্যোগে সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।

দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ড. ইউনুস দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, দুর্নীতির কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়, এবং এটি দেশের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই, তার নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি স্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতি দমন করার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

ড. ইউনুস রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পারস্পরিক সহাবস্থানের গুরুত্বকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি চান, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পরিক সমঝোতা এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধান করুক। তার বিশ্বাস, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। 

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তার নেতৃত্বে দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে, তা দেশের জনগণের জন্য আশাব্যঞ্জক। এখন, দেশের মানুষ তার নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে। ড. ইউনুসের এই দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনা বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।





রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

বাংলাদেশ এর আরও খবর

img

ঢাকা থেকে সরে গেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলন

প্রকাশিত :  ১১:০৬, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী অক্টোবরে ঢাকায় পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলনের ভেন্যু বদলেছে। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এই সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন কি না এমন আলোচনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এল। 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা।  আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে। গণহত্যার দায়ে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।  এরমধ্যে কিছু মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে। 

এমন পরিস্থিতিতে অক্টোবরে পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলন ঢাকায় হবে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কারণ পুতুল ঢাকায় এলে তাকে গ্রেফতার করা হবে কি না এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।

তবে আপাতত এমন কোনো সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। ঢাকার একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে,  ঢাকার পূর্ব ঘোষিত সম্মেলন হবে ভারতের নয়াদিল্লিতে।  ফলে পুতুলকেও আসতে হচ্ছে না।

সূত্রটি বলছে, আগামী ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে সম্মেলনটি হবে।

ঢাকা এবং দিল্লির কূটনীতিক সূত্রের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতায়াতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জাতিসংঘের ভ্রমণ দলিল ব্যবহার করার কথা, যা সাধারণভাবে জাতিসংঘ পাসপোর্ট হিসেবে গণ্য হয়।  

ফলে জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার বিশেষ আইনি ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কূটনৈতিক ছাড় নাও পেতে পারেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে এই আইনের দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন রকম হতে পারে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালক হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল।  দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজের দেখভাল করে দিল্লিভিত্তিক আঞ্চলিক দপ্তরটি। 

বাংলাদেশ এর আরও খবর