img

প্রিয় ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

প্রকাশিত :  ১৬:০৭, ৩০ আগষ্ট ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ২১:৩১, ৩০ আগষ্ট ২০২৪

প্রিয় ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

প্রিয় ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

আসসালামু আলাইকুম। আমি করিম চাচা, আপনার কাছে এই চিঠি লিখছি আমাদের দেশের মানুষের পক্ষ থেকে। আপনি একজন মহান নেতা এবং এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমরা আপনাকে দেশের সেবায় নিয়োজিত দেখতে পেয়ে অত্যন্ত গর্বিত ও আশাবাদী। আজ আমি আপনাকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই—এ দেশ যেন সত্যিকার অর্থে দুর্নীতিমুক্ত এবং উন্নত দেশে পরিণত হয়।

স্যার, আমাদের দেশের ছাত্রসমাজের ইতিহাস গৌরবময়। তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, রক্তের দামে আমাদের জন্য দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। কিন্তু আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তারা আজও বুঝতে পারছি না সেই স্বাধীনতা কতটা সার্থক হয়েছে। আমরা দেখছি, সেই স্বাধীনতার পরও দেশের অনেক মানুষ এখনো পুরোনো সমস্যাগুলোর সাথে লড়াই করে যাচ্ছে। বিশেষ করে ফুটপাতে বসে যারা ব্যবসা করে, তারা আজও চাঁদাবাজদের অত্যাচারের শিকার। চাঁদার টাকা না দিলে তাদের ব্যবসা করা সম্ভব হয় না। স্যার, এমন স্বাধীনতা কি আমরা চেয়েছিলাম?

আমরা চেয়েছিলাম একটি স্বাধীন, সুষ্ঠু, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, যেখানে সাধারণ মানুষ তার পরিশ্রমের পূর্ণ মূল্য পাবে। কিন্তু আমরা আজও সেই সমাজের দেখা পাইনি। রাজনীতির নামে, ক্ষমতার দোহাই দিয়ে, চাঁদাবাজি এবং লুটতরাজ চলছে। যারা ফুটপাতে ব্যবসা করেন, তারা দিনরাত পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন, অথচ তাদের আয় থেকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। স্বাধীনতার পরেও তারা যদি চাঁদার ভয়ে ব্যবসা করে, তাহলে স্বাধীনতা লাভ করে আমরা কী পেয়েছি?

স্যার, এই অবস্থা পরিবর্তন করার দায়িত্ব আজ আপনার ওপর। আমরা জানি, আপনি সবসময় মানুষের কল্যাণের কথা ভাবেন। আপনাকে আমরা আমাদের  একজন সত্যিকারের পথপ্রদর্শক হিসেবে দেখি। আপনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আপনি দেশের মানুষের এই কষ্টগুলো দূর করুন। আপনি আমাদের জাতির সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করুন, যেখানে সাধারণ মানুষ তার অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে।

আপনি আমাদের দেশের যেভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা দেখে আমরা আশা করি আপনি আমাদের দেশের এই দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করবেন। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য আপনাকে দেশের সর্বস্তরে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনি জানেন, আমাদের দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো দুর্নীতি। এটি শুধু অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে না, বরং আমাদের সমাজের নৈতিকতাও ধ্বংস করছে। আমরা চাই, আপনার নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দুর্নীতিমুক্ত হোক।

আপনি যদি দেশের এই অসাধু লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তবে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ নিরাপদে এবং সৎভাবে তাদের জীবনযাপন করতে পারবে। আমরা চাই, ফুটপাতে যারা ব্যবসা করে, তারা যেন আর কোনো চাঁদার ভয়ে ব্যবসা করতে না হয়। তারা যেন তাদের কাজের যথাযথ মূল্য পায় এবং একটি সৎ, ন্যায়পরায়ণ সমাজে বাস করতে পারে।

স্যার, আমরা জানি আপনার নেতৃত্বে আমরা এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারব। আপনি আমাদের দেশের যুবসমাজের পথপ্রদর্শক। আমরা আপনার কাছে আশার আলো দেখতে পাই। আমাদের ছাত্ররা যে স্বাধীনতার জন্য এত কষ্ট করেছে, তার পূর্ণতা আসবে তখনই, যখন এই দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে। আমরা চাই, আপনি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এই জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।

আপনার নেতৃত্বে আমরা চাই এমন একটি দেশ, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষিত হবে। যেখানে চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, আর দুর্নীতির কোনো স্থান থাকবে না। আমরা চাই, আমাদের দেশ উন্নত দেশে পরিণত হোক, যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ তার অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

আপনার কাছে আমাদের আরেকটি অনুরোধ হলো, আপনি যেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে শুদ্ধ করেন। আমরা চাই, রাজনীতিবিদরা জনগণের সেবা করবে, তাদের থেকে কিছু নেওয়ার জন্য নয়, বরং তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করবে। আপনি জানেন, রাজনীতির নামে অনেক অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে। আপনি যদি এই অবস্থা পরিবর্তন করেন, তাহলে দেশের মানুষের মনে সত্যিকারের স্বাধীনতার আনন্দ আসবে।

স্যার, আমাদের দেশের মানুষ আপনার ওপর অনেক আস্থা রাখে। আমরা জানি, আপনার নেতৃত্বে আমাদের দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে। আমরা চাই আপনি আমাদের এই স্বপ্নপূরণের পথে নেতৃত্ব দিন। দুর্নীতিমুক্ত এবং উন্নত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আপনার হাতে থাকা ক্ষমতা ও সুযোগকে সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।

স্যার, এই জাতির প্রতি আপনার দায়িত্ব অনেক। আমরা বিশ্বাস করি, আপনি এই দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে সফল হবেন। আমরা আপনার নেতৃত্বে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সুশৃঙ্খল, এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। আমাদের ছাত্রসমাজের কষ্ট আর ত্যাগের মূল্যায়ন হবে তখনই, যখন আপনি আমাদের দেশের মানুষের জন্য একটি সত্যিকার অর্থে উন্নত সমাজ গঠন করবেন।

আপনার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসা জানাই। আপনার সুস্থতা, শক্তি, এবং সফলতা কামনা করি। আপনার নেতৃত্বে আমরা আমাদের দেশের নতুন ভোরের অপেক্ষায় আছি, যেখানে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ এবং উন্নত দেশের স্বপ্ন সত্যি হবে।


অসংখ্য ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা সহ,  

করিম চাচা  

বাংলার মানুষের পক্ষ থেকে

বাংলাদেশ এর আরও খবর

img

ঢাকা থেকে সরে গেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলন

প্রকাশিত :  ১১:০৬, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী অক্টোবরে ঢাকায় পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলনের ভেন্যু বদলেছে। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এই সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন কি না এমন আলোচনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এল। 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা।  আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে। গণহত্যার দায়ে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।  এরমধ্যে কিছু মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে। 

এমন পরিস্থিতিতে অক্টোবরে পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলন ঢাকায় হবে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কারণ পুতুল ঢাকায় এলে তাকে গ্রেফতার করা হবে কি না এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।

তবে আপাতত এমন কোনো সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। ঢাকার একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে,  ঢাকার পূর্ব ঘোষিত সম্মেলন হবে ভারতের নয়াদিল্লিতে।  ফলে পুতুলকেও আসতে হচ্ছে না।

সূত্রটি বলছে, আগামী ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে সম্মেলনটি হবে।

ঢাকা এবং দিল্লির কূটনীতিক সূত্রের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতায়াতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জাতিসংঘের ভ্রমণ দলিল ব্যবহার করার কথা, যা সাধারণভাবে জাতিসংঘ পাসপোর্ট হিসেবে গণ্য হয়।  

ফলে জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার বিশেষ আইনি ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কূটনৈতিক ছাড় নাও পেতে পারেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে এই আইনের দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন রকম হতে পারে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালক হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল।  দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজের দেখভাল করে দিল্লিভিত্তিক আঞ্চলিক দপ্তরটি। 

বাংলাদেশ এর আরও খবর