img

২৪ ঘণ্টায় সেনা কমান্ডারসহ ৩ ইসরাইলি নিহত

প্রকাশিত :  ০৭:৩০, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

২৪ ঘণ্টায় সেনা কমান্ডারসহ ৩ ইসরাইলি নিহত

 হামাসের অভিযানে অধিকৃত পশ্চিম তীরের দক্ষিণের শহর আল-খালিলে দুই ইহুদি দখলদার নিহত এবং অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

রোববার সকালে হেবরনের উত্তরে তারকুমিয়া চেকপয়েন্টের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

ইসরাইলি সূত্রের বরাত দিয়ে মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববার সকালে হেবরনের উত্তরে তারকুমিয়া চেকপয়েন্টের কাছে ৩৫ নম্বর রুটে একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলায় দুই ইসরাইলি নিহত এবং অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছে।

ইসরাইলের ইয়েনেট নিউজ জানিয়েছে, একটি পাসিং গাড়ি থেকে বন্দুকের ওই গোলাগুলি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে শনিবার অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে ইসরাইলি বাহিনীর চালানো চার দিনব্যাপী মারাত্মক অভিযানের সময় হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে এক ইসরাইলি সামরিক কমান্ডার নিহত হন।

শনিবার এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এলকানা নাভন নামের ২০ বছর বয়সি ওই কমান্ডার দিনের শুরুতে উত্তর পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন। তার মৃত্যুকে স্কোয়াড কমান্ডার হিসাবে বর্ণনা করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

একই ঘটনায় আরেক সেনা সদস্য গুরুতরভাবে আহত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরাইলি বাহিনী যখন শহরের শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে আক্রমণ করেছিল, তখনই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

শনিবারকে জেনিনসহ পশ্চিম তীরজুড়ে চালানো ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানের চতুর্থ দিন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।যে অভিযানে দখলদার বাহিনী পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে এর উত্তর অংশে অবস্থানরত এলাকায় তীব্র বিমান হামলা এবং স্থল আক্রমণ চালিয়েছে।

জেনিনে সফররত ইসরাইলি সেনাপ্রধান হারজি হালেভি বলেন, শনিবারও গোয়ন্দা বিমান ইউনিটসহ ইসরাইলি বাহিনী শহর থেকে শহরে, শরণার্থী শিবির থেকে শরণার্থী শিবিরে চমৎকার বুদ্ধিমত্তা এবং সক্ষমতার সঙ্গে খুব শক্তিশালী এবং খুব ভালো অভিযান চালিয়েছে। 

ইসরাইলি অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গাজা উপত্যকা-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, দখলদার ও যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুর সরকার অবরুদ্ধ গাজায় গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত চালানো গণহত্যামূলক যুদ্ধকে আরও প্রসারিত করতে চাইছে। যে আগ্রাসনের মাধ্যমে বর্বর ইসরাইল এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৭শ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

অন্যদিকে গাজায় হামাসের সহযোগী ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) ঘোষণা দিয়েছে, ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোকে ইসরাইলি আগ্রাসন ও দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে হামাসের চলমান প্রচেষ্টায় তারা আরও উৎসাহিত হয়ে কাজ করবে এবং হামাসকে যথাযত সাহায্য করবে।

সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

হিজবুল্লাহর ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলের এতটা ভেতরে ঢুকে হামলা চালাল

প্রকাশিত :  ০৮:০৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

দখলদার ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই ‘নির্ভরযোগ্য’ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে গতকাল রোববার ইসরায়েলের অনেকটা ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম হয় হিজবুল্লাহর ড্রোন।

লেবাননের ইরান-সমর্থিত রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলাটি হয়েছে মধ্য-উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনাঘাঁটিতে।

হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আহত ৬০ জনের বেশি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে হতাহত হওয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলায় আহত সাত সেনার অবস্থা গুরুতর।

স্থানীয় সময় গতকাল দিনের শেষ ভাগে এই ড্রোন হামলা হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর গতকাল অন্যতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলো ইসরায়েল।

আইডিএফ বলেছে, হিজবুল্লাহর পাঠানো একটি ড্রোন বিন্যামিনা শহর-সংলগ্ন একটি ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায়। শহরটির অবস্থান তেল আবিবের উত্তরে। লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে।

গতকাল হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিন্যামিনায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি পদাতিক প্রশিক্ষণ শিবির নিশানা করে হামলা চালাতে একঝাঁক ড্রোন পাঠিয়েছে।

হিজবুল্লাহর এমন কথার পর ইসরায়েলে ড্রোন হামলার খবর এল।

হিজবুল্লাহ বলে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে হামলা চালায় ইসরায়েল। বদলা হিসেবে তারা গতকাল ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ২২ জন নিহত হন। আহত ১১৭ জন।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেডকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

গোলানি ব্রিগেড আইডিএফের একটি পদাতিক ইউনিট। এই ইউনিটের সদস্যদের দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।

হামলার দায় স্বীকার করার কিছু আগে হিজবুল্লাহ তাদের সদ্য প্রয়াত নেতা হাসান নাসরুল্লাহর একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে। এ বার্তায় তিনি হিজবুল্লাহর সদস্যদের নিজেদের লোকজন, পরিবার, জাতি, মূল্যবোধ ও মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানান। গত মাসের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নাসরুল্লাহর নিহত হন।

গতকাল দিনের শুরুর দিকে আইডিএফ বলেছিল, লেবানন থেকে পাঠানো একটি ড্রোন তারা রুখে দিয়েছে। তবে এ ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা তারা নির্দিষ্ট করে বলেনি।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই নির্ভরযোগ্য। কিন্তু গতকাল এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পেরেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন। গতকাল হিজবুল্লাহর ড্রোন ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালায়।

সিএনএন আরও বলেছে, গতকাল হামলার সময় বিন্যামিনা এলাকায় কোনো সতর্কবার্তার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যতিব্যস্ত রাখার জন্য উত্তর ইসরায়েলি শহর নাহরিয়া ও একর নিশানা করে বেশ কয়েক ডজন রকেট ছোড়ে। একই সঙ্গে তারা একঝাঁক ড্রোন পাঠায়।

হিজবুল্লাহ বলেছে, এই ড্রোনগুলো শনাক্ত হওয়া এড়াতে পেরেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা রাডারগুলোকে ফাঁকি দিতে পেরেছে। ড্রোনগুলো বিন্যামিনার অভিজাত গোলানি ব্রিগেডের প্রশিক্ষণ শিবিরের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছায়।

আইডিএফের শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনা তদন্ত করবে। কীভাবে ঘাঁটিতে ড্রোন প্রবেশ করল, কিন্তু সতর্কসংকেত বাজল না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

ঘাঁটিটি থেকে দেওয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে হাগারি বলেন, তাঁরা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন। তাঁরা ঘটনাটি তদন্ত করবেন।

আইডিএফের এই মুখপাত্র বলেন, তাঁরা যুদ্ধের শুরু থেকেই ড্রোনের হুমকি মোকাবিলা করে আসছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় উন্নতি দরকার।