img

১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল

প্রকাশিত :  ১৬:০৩, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:৩৭, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল

১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল করেছে সরকার। আজ সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শন করার বিধান অর্থ আইন ২০২৪ এর মাধ্যমে সংযোজন করা হয়েছিল। কিন্তু একজন নিয়মিত করদাতাকে তার আয়ের ওপর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আয়কর প্রদান করতে হয় এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে প্রদেয় করের ওপর আরও সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ প্রদান করতে হয়। তাই মাত্র ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদান করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দেওয়া একটি ন্যায়নিষ্ঠ সমতাভিত্তিক কর ব্যবস্থার জন্য বৈষম্যমূলক।

এমতাবস্থায়, একটি ন্যায়নিষ্ঠ সমতাভিত্তিক রাজস্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন (এস আর ও নং ৩০৩-আইন/আয়কর-৪৬/২০২৪, তারিখ: ০২/০৯/২০২৪) দ্বারা, ১৫ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে নগদ অর্থসহ অপ্রদর্শিত সমজাতীয় পরিসম্পদ প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা হলো। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ানুগ ও প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অঙ্গীকারাবদ্ধ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

সূত্র জানায়, এ আদেশের ফলে শেয়ার মার্কেট, নগদ, ব্যাংকে থাকা অর্থ, ফাইন্যান্সিয়াল স্কিম অ্যান্ড ইন্সট্রুমেন্টসহ সব ধরনের আমানতের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুবিধা বাতিল হল। এসব ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করতে হলে এখন প্রযোজ্য কর, যা সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ– সেটি দিতে হবে এবং ওই প্রদেয় করের ওপর ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে।

এছাড়া, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল হলেও ফ্ল্যাট, বাড়ি ও জমি কেনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে টাকা সাদা করার বিদ্যমান সুবিধা বাতিল হয়নি।

প্রসঙ্গত, জুলাই মাসে অনুমোদিত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার নিয়ম রাখে। তৎকালীন সরকারের এ সিদ্ধান্ত তখন তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিল। কারণ বৈধ করদাতাদেরকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আয়করের পাশাপাশি অতিরিক্ত সারচার্জ দিতে হয়। সমালোচকেরা বলেছিলেন, ১৫ শতাংশ করের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অনুমতি আর্থিক খাতের অনিয়মকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কালো টাকা সাদা করার বিতর্কিত পদ্ধতিটি বাদ দেওয়ার উপায় বের করার চেষ্টা করছিল অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকার গঠনের পর গত ২৮ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কালো টাকা সাদা করার বিধান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। 


অর্থনীতি এর আরও খবর

img

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দুর্নীতির তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত :  ১১:৫০, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:৩২, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পলায়নকারী শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীনে করা চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় গঠিত জাতীয় কমিটি জনগণের কাছে দুর্নীতির তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়।

ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে কোনো ব্যক্তি ওই আইনের অধীনে চুক্তিবদ্ধ দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্থাগুলোর দুর্নীতি সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণাদি কমিটিতে পাঠাতে পারবেন। আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে nationalreviewcommittee@gmail.com ই-মেইল করে জাতীয় রিভিউ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল করা যাবে। তবে কমিটি প্রয়োজন মনে করলে পরে অভিযোগ দাখিলকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

এছাড়া ওই চুক্তির অধীনে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করে জাতীয় কমিটি প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে দুই বছরের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন’ করে। পরে তিন দফায় ওই আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৪ বছর। ওই আইনে বলা হয়েছে, বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি আমদানি অথবা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন অথবা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অন্য কোনো কার্যক্রম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সে কারণে এ আইনকে বিদ্যুৎ খাতের ‘দায়মুক্তি আইন’ বলেন সমালোচকরা।

এই আইনের সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিপুল অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের ভাষায়, বিগত সরকারের সময় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ‘অনিয়মের মহোৎসব’ হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীনে করা চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করতে গত ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের জাতীয় কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী। আর সদস্য হিসেবে আছেন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজি বাংলাদেশ এর সাবেক সিওও ফেলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট (এফসিএ) আলী আশফাক, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল অ্যান্ড সোশাল সায়েন্সের অধ্যাপক (অর্থনীতি) মোশতাক হোসেন খান।

এই কমিটি তাদের কাজের জন্য যে কোনো সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় যে কোনো নথি নিরীক্ষা করতে পারবে, সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শুনানিতে আহ্বান করতে পারবে। কমিটি 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০' এর আওতায় ইতোমধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে সরকারের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কিনা তা নিরীক্ষা করবে। নিরীক্ষার ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক ও আনুষঙ্গিক সহায়তা দিবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।