ইতিহাস সৃষ্টি করে ২ লাখ কোটি ছাড়াল খেলাপি ঋণ
খেলাপিদের নানা সুবিধা দিয়েও এই সূচকের লাগাম টানতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৪ সালে জুন শেষে দেশের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের রেকর্ড।
এর আগে গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি। অর্থাৎ মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, বিগত সরকারের আমলে সুশাসন ও খেলাপি ঋণই বর্তমান ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা ছিল। ব্যাংক খাতে সুশাসন না থাকার কারণে দিন দিন খেলাপি বেড়েছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় ঢালাওভাবে ছাড় দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের তথ্য গোপনেরও একটি প্রচেষ্টা ছিল। সবমিলিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খেলাপি তথ্য গোপন না করায় হঠাৎ এই সূচকে বড় লাফ দিয়েছে।
ইতিহাস সৃষ্টি করে ২ লাখ কোটি ছাড়াল খেলাপি ঋণ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে দেশে বর্তমানে মোট ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ৩ মাস আগে মার্চ শেষে এই ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬ মাসের ব্যবধানে খেলাপি বেড়েছে ৬৫ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বা ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য বলছে, জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১২ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকাই খেলাপি। যা বিতরণকৃত ঋণের ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রাষ্ট্রের বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ