img

গাজীপুরের গার্মেন্টস মালিকদের হৃদয়বিদারক আকুতি, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজির কবলে পড়ে অসহায় ফ্যাক্টরি মালিকরা

প্রকাশিত :  ২০:৪১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ২০:৪৮, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের গার্মেন্টস মালিকদের হৃদয়বিদারক আকুতি, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজির কবলে পড়ে অসহায় ফ্যাক্টরি মালিকরা

রেজুয়ান আহম্মেদ, ঢাকা  : গাজীপুরের গার্মেন্টস শিল্প বর্তমানে এক চরম সংকটে নিপতিত হয়েছে। দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি এই গার্মেন্টস সেক্টর, যা লাখ লাখ মানুষের রুটি-রুজির উৎস, এখন সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির শিকার হয়ে বন্ধ হওয়ার পথে। প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্তে কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ফ্যাক্টরিতে ঢুকে চাঁদার দাবি করছে। তাদের দাবি পূরণ না করলেই, ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। 

গার্মেন্টস মালিকরা এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছেন, কিন্তু এই পরিস্থিতি তাদের এতটাই অসহায় করে তুলেছে যে, তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গাজীপুরের একটি নামকরা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক তার চোখের জল সংবরণ করতে করতে বললেন, "আমরা এই ফ্যাক্টরির মাধ্যমে হাজার হাজার শ্রমিকের পেট চালাই। অথচ প্রতিদিন সন্ত্রাসীদের চাঁদার দাবির মুখে আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে চলেছে।"

গার্মেন্টস মালিকদের এই বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যেই মহামারির প্রভাব, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা, এবং পণ্যের রপ্তানি কমে যাওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা চলছে। তার উপর এই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম গার্মেন্টস সেক্টরের অবস্থা আরও শোচনীয় করে তুলছে। 

গার্মেন্টস মালিকদের জীবন এখন রাত-দিন আতঙ্কের মধ্যে কাটছে। তারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কিত থাকেন যে কখন কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের ফ্যাক্টরিতে হানা দেবে, কখন তাদের শ্রমিকরা আতঙ্কে পালিয়ে যাবে, আর কখন তাদের ব্যবসা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। 

এ অবস্থায় গার্মেন্টস মালিকদের একমাত্র আশা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি। তারা তাকে তাদের আকুল আবেদন জানিয়েছেন যেন তাদের এই অসহায়ত্বের দিনগুলির অবসান ঘটাতে তিনি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেন। 

গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন, "আমরা শুধুমাত্র সুস্থভাবে আমাদের ব্যবসা চালাতে চাই, শ্রমিকদের বেতন দিতে চাই, এবং দেশের অর্থনীতিতে আমাদের অবদান রাখতে চাই। আমরা আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে চাই না, কিন্তু আমরা যদি চাঁদাবাজদের চাহিদা পূরণ করতে থাকি, তাহলে আমাদের পক্ষে ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে না।"

তাদের আকুতি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। তারা চায় তাদের ফ্যাক্টরিতে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক, যেন শ্রমিকরা শান্তিতে কাজ করতে পারে, আর তারা তাদের ব্যবসা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে পারে। 

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি গার্মেন্টস মালিকদের আবেদন, যেন তিনি দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হন এবং সন্ত্রাসীদের এই চাঁদাবাজি কার্যক্রম থেকে গার্মেন্টস শিল্পকে রক্ষা করেন। 

গাজীপুরের গার্মেন্টস মালিকরা এখন তাদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের স্বপ্ন, শ্রম, এবং মেধার ফসল আজ ধ্বংসের মুখে। তাই তারা দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে শেষ আশ্রয়স্থল খুঁজে পেয়েছেন। এখন শুধু অপেক্ষার পালা, দেখতে হবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা তাদের এই অসহায়ত্বের অবসান ঘটাতে কতটা দ্রুত এগিয়ে আসেন। 

গার্মেন্টস সেক্টরের এই সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ, যা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ফ্যাক্টরি মালিকদের সুরক্ষা প্রদান করবে। দেশের অর্থনীতি এবং লাখ লাখ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ এখন এই সংকটের সমাধানের উপর নির্ভর করছে।

বাংলাদেশ এর আরও খবর

img

ঢাকা থেকে সরে গেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মেলন

প্রকাশিত :  ১১:০৬, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী অক্টোবরে ঢাকায় পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলনের ভেন্যু বদলেছে। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এই সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন কি না এমন আলোচনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এল। 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা।  আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে। গণহত্যার দায়ে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে।  এরমধ্যে কিছু মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে। 

এমন পরিস্থিতিতে অক্টোবরে পূর্ব নির্ধারিত আঞ্চলিক সম্মেলন ঢাকায় হবে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কারণ পুতুল ঢাকায় এলে তাকে গ্রেফতার করা হবে কি না এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।

তবে আপাতত এমন কোনো সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। ঢাকার একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে,  ঢাকার পূর্ব ঘোষিত সম্মেলন হবে ভারতের নয়াদিল্লিতে।  ফলে পুতুলকেও আসতে হচ্ছে না।

সূত্রটি বলছে, আগামী ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে সম্মেলনটি হবে।

ঢাকা এবং দিল্লির কূটনীতিক সূত্রের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতায়াতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জাতিসংঘের ভ্রমণ দলিল ব্যবহার করার কথা, যা সাধারণভাবে জাতিসংঘ পাসপোর্ট হিসেবে গণ্য হয়।  

ফলে জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার বিশেষ আইনি ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কূটনৈতিক ছাড় নাও পেতে পারেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে এই আইনের দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন রকম হতে পারে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচালক হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল।  দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজের দেখভাল করে দিল্লিভিত্তিক আঞ্চলিক দপ্তরটি। 

বাংলাদেশ এর আরও খবর