ছুটি না নিয়েই ইউপি চেয়ারম্যান ব্রিটেনে
সুনামগঞ্জ জেলাস্থ জগন্নাথপুর উপজেলার ৩ নং মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন বিদেশে গমনের জন্য ছুটির আবেদন করেন তা মঞ্জুর হওয়ার আগেই বিধি বহির্ভূতভাবে ব্রিটেনে চলে গেছেন তিনি। প্রায় দুই মাস ধরে ভুক্তভোগীরা তাকে পাচ্ছেন না। এমনকি ফোনও বন্ধ রয়েছে।
৩ নং মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তরিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান শেরীনের যুক্তরাজ্যে গমনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ ত্যাগ করেন মাহবুবুল হক শেরীন। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। প্রায় এক মাস ধরে চেয়ারম্যান এলাকায় না থাকায় ইউনিয়নবাসী পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান শেরীন যেভাবে বিধি বহির্ভূতভাবে ব্রিটেনে গেছেন ঠিক তেমনি ইউপি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আব্দুল ওহাব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনও বিধিবহির্ভূত ও অবৈধ।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার ৩নং মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেরীন বহির্বিশ্ব যুক্তরাজ্যে গমনের জন্য ইউএনও’র মাধ্যমে
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবর ৯০ দিনের ছুটির জন্য একটি আবেদন করেন। আবেদনে ছুটির যৌক্তিক কারণ না থাকায় ৯ জুন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে ছুটির যুক্তিসঙ্গত কারণ জানাতে জেলা প্রশাসকের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে জেলা প্রশাসক তা জগন্নাথপুর ইউএনও বরাবর পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এই তদন্তের দুই মাস আগেই ইউপি চেয়ারম্যান শেরীন যুক্তরাজ্যে চলে যান।
ইউপি সচিব তরিকুল ইসলাম জানান, ইউপি চেয়ারম্যান শেরীন যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন । সেখানে তিনি ৩ মাস থাকবেন। যাওয়ার আগে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ইউপি সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি ৯০ দিনের ছুটি নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান অন্তত দুই মাস আগে যুক্তরাজ্যে গেছেন। ইউপি সচিব, ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ প্রথম দিকে ইউনিয়নে সেবাগ্রহীতাদের চেয়ারম্যান ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গেছেন বলে বিভ্রান্ত করেছেন। ঈদের পর থেকে বলছেন তিনি ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে গেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)আল-বশিরুল ইসলাম বলেন, ৩ নং মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শিরীন যুক্তরাজ্যে গমনের বিষয়টি তার জানা আছে। তবে ইতিপূর্বে তিনি যুক্তরাজ্যে গমনের জন্য ৯০ দিনের ছুটির জন্য একটি আবেদন করেছেন। আবেদনটি অনুমোদন হয়নি, এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ছুটির অনুমোদন ছাড়া বিদেশ গমন বিধিবহির্ভূত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ নিয়মে দায়িত্ব হস্তান্তর না হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনও বিধি বহির্ভূত। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।