img

প্রত্যাহার হওয়া ২৫ জেলায় নতুন ডিসি

প্রকাশিত :  ১০:১৬, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:২১, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রত্যাহার হওয়া ২৫ জেলায় নতুন ডিসি

সরকার দেশের ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে। সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানভীর আহমেদকে ঢাকা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লাকে ফরিদপুর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পিকেএম এনামুল কবিরকে সিলেট, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. ফরিদুর রহমানকে হবিগঞ্জ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব মুফিদুল আলমকে ময়মনসিংহ জেলার ডিসি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব তরফদার মাহমুদুর রহমান শেরপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারহানা ইসলাম কুষ্টিয়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল ঝিনাইদহ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব মো. অহিদুল ইসলাম মাগুরা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল রংপুরের ডিসি হয়েছেন। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদকে গাইবান্ধা, দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালকে নওগাঁ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামকে পাবনা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হোসনা আফরোজাকে বগুড়া, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২ এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুজ্জামানকে জয়পুরহাট, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে কক্সবাজারের ডিসি করা হয়েছে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব ফরিদা খানম চট্টগ্রাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব ইশতিয়াক আহমেদ নোয়াখালী, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন চাঁদপুর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাসিমা আরেফীন গাজীপুর, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আমিরুল কায়সার কুমিল্লা, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন মৌলভীবাজার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খুলনা এবং ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্মাান গোপালগঞ্জের ডিসি হয়েছেন।

এর আগে গত ২০ আগস্ট এসব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে বদলি করা হয়।

এর মধ্যে প্রথম প্রজ্ঞাপনে ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা জানানো হয়েছে।

দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে ফরিদপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট ও চাঁদপুরের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়। ডিসি পদ থেকে এসব কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন দপ্তরে উপ-সচিব পদে বদলি করা হয়।

img

বাংলাদেশিদের সুখবর দিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত :  ১১:৫২, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একমত হয়েছেন ।

এরই অংশ হিসেবে টিকিট জটিলতায় মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার শ্রমিককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

আজ শুক্রবার (৪ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুখবর দেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালোয়েশিয়ার শ্রমবাজারে প্রথম পর্যায়ে ১৮ হাজার বাঙালি নেওয়া হবে। বাংলাদেশে যেসব মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদেরও সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছি।

আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, আমাদের দেশে আরও জনশক্তি প্রয়োজন। তবে উভয় দেশের মধ্যে শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সচ্ছতা থাকতে হবে। এছাড়া সেমি কন্ডাক্টর, ডেটা সেন্টার, এআই, নিউ টেকনলোজির বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।

এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলে জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং সর্বাত্মক সহযোগী হিসেবে আমরা পাশে থাকব। এছাড়াও এ অঞ্চল শান্তিপূর্ণ রাখতে মালয়েশিয়া আসিয়ানকে আরও কার্যকর করতে চায় বলেও জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির তালিকায় চতুর্থ দেশ হিসেবে রয়েছে মালয়েশিয়া। কিন্তু এরপরও দেশটির শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশের কর্মীদের এক ধরনের অনিশ্চয়তা বরাবরই ছিল। এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে বিভিন্ন সময় নানা টানাপোড়েনও সামনে এসেছে। গত দেড় দশকে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় বন্ধ ছিল সেখানকার বাংলাদেশের শ্রমবাজার।

এ বিষয়ে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার প্রথম দফায় বন্ধ হয় ২০০৯ সালে। আর সবশেষ গত ১ জুন শেষ হয়ে যায় মালয়েশিয়ায় কর্মী ভিসায় যাওয়ার সময়। শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবারই শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে চক্র বা সিন্ডিকেটের বিষয়গুলো আলোচনা এসেছে। এসব চক্রের বিরুদ্ধে উঠেছে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুসের অভিযোগ জানা গেছে, গত চার মাস ধরে বাংলাদেশের মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু কর্মীদের জন্য দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে।

সর্বশেষ ৩১ মে দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ করা হয়। এতে বিএমইটি কার্ড ও ভিসা থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১৭ হাজার ৭৭৭ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে যেতে পারেননি। ৩১ মের পর যেতে না পারা এসব কর্মী ফের যাওয়ার চেষ্টা ও টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য এজেন্সিগুলোতে ধর্না দেন। টাকা খুইয়ে এসব কর্মীর অনেকে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন।

এরপর ২০২২ সালে মালয়েশিয়া সরকার আবার শ্রমবাজার খুলে দিলে নতুন করে চক্র গড়ে ওঠে। চলতি বছরের মার্চে মালয়েশিয়া সরকার জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। যারা অনুমোদন ও ভিসা পেয়েছেন, তাদের ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় যেতে হবে। এভাবে দফায় দফায় শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ায় প্রবাসী আয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

এ অবস্থায় শ্রমবাজারে আনোয়ার ইব্রাহিমের এই ঘোষণা খুবই ইতিবাচক মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ১৮ হাজার একটা বড় সংখ্যা। এতগুলো লোক যেতে না পারা আমাদের জন্য একটা বিরাট সমস্যা ছিল। এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হলে এটি সহমর্মিতার একটা ভালো দৃষ্টান্ত হবে। এই সমস্যাটির আশু সমাধান হলে মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের জায়গাটা আরেকটু জোরদার হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এম হুমায়ুন কবির বলেন, মালয়েশিয়া একটা সময়সীমা বেধে দেওয়ার কারণে এই লোকগুলো আটকে ছিলো। এখন যদি তারা যেতে পারে অন্ততপক্ষে সাময়িকভাবে সমস্যাটির সমাধান হবে। এটি বাস্তবায়ন হতে হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে। তবে যেহেতু দুইদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এটি আলোচনা হয়েছে, আশা করছি দ্রুতই ফলাফল পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, এই সরকার কয়েকদিন আগেই আরব আমিরাত থেকে ৫৭ জন বন্দিকে ফিরিয়ে এনেছে। আর মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের এই সমস্যাটির সমাধান হলে এটি সরকারের জন্যও একটা ইতিবাচক জায়গা তৈরি করবে। মানুষের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ভাবমূর্তি আরেকটু সজীব হবে, শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি অনেকগুলো মানুষের জীবন একটা ইতিবাচক সমাধান পাবে।

এর আগে, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান আনোয়ার ইব্রাহিম। তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রয়েছে।

তারও আগে, বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের পর গত ১৪ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম খুব দ্রুত বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সে সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানাতে ফোন করে এ ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।