ভারতে যে ডিম ৫ টাকা, একই ডিম বাংলাদেশে ১৩ টাকা
পার্শ্বর্তী দেশ ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হলেও বাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি, কমেনি দাম। ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় ডিমের ডজন কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ডিমের বাজার কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে? এমন প্রশ্ন ক্রেতাদের। ভারতে যে ডিম ৫ টাকার আশপাশে, সেখানে আমদানির পর তা বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে অন্তত ১৩ টাকায়।
সীমান্তের ওপারে ভারতে যে ডিমের দাম ৫ টাকা; বাংলাদেশের বাজারে একই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়। দামের পার্থক্য আকাশ-পাতাল।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ক্যারেটে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এখান থেকে নিয়ে প্রতি ডজন ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে হয় আমাদের। মাল পাচ্ছিনা, যারা গাড়িতে ৮০ হাজার মাল আনতো তারা এখন পাচ্ছে ৪০ হাজার।
নানা উদ্যোগেও যখন বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছিল না; তখন ভারত থেকে ডিম আমদানি শুরু করেছে সরকার। প্রতি পিসের দাম আমদানি পর্যায়ে ৫ টাকা ৭০ পয়সা। এর সাথে ডিমপ্রতি ১ টাকা ৮৩ পয়সা শুল্কসহ যোদ করলে প্রতিটির দাম ৭ টাকা ৫৩ পয়সা।
একই ডিমের দামে এতো পার্থক্য কেন। এমন প্রশ্নে উৎপাদকরা বলছেন, ভারতে ফিড তৈরির কাঁচামাল সহজলভ্য ও সস্তা। এ কারণে উৎপাদন ব্যয় বাংলাদেশের তুলনায় কম।
নারিশ পোল্ট্রি ও হ্যাচারি লিমিটেডের ম্যানেজার ডা. মো. মেহেদী হাসান বলেন, “ইন্ডিয়াতে ১৮ টাকা দরের ভুট্টা দিয়ে ফিড উৎপাদন করতে পারছে, সেই ভুট্টা আমাদের কিনতে হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকায়।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফিড সস্তা হওয়ার কারণেই ভারতের ডিমের দাম কম, এমনটা পুরোপুরি সঠিক নয়। দেশটির বাজারে পূর্ণ প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। অন্যদিকে, বাংলাদেশে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ আছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. ফকির আজমল হুদা বলেন, “যদি মার্কেট সিস্টেমটা ভেঙে দেওয়া যায় তাহলে আমিদানিকারকরা বাধ্য হবেন ফিডের দামটা কম রাখতে।”
এদিকে, আমদানি অব্যাহত থাকলে স্থানীয় পোল্ট্রি শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের।
এক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানি হলে ডিমের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। দামও সহনীয় পর্যায়ে আসবে। তবে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষার কথাও বলছেন তারা।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “খামারিদেরকে ডিম উৎপাদনে উৎসাহিত করতে হবে এবং তারা যাতে অপেক্ষাকৃত কম খরচে ডিম উৎপাদন করতে পারেন এই বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।”
আগামী দুই মাসে ভারত থেকে আরও কমপক্ষে ৪৭ লাখ ডিম আমদানি হবে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।