img

ভারতে যে ডিম ৫ টাকা, একই ডিম বাংলাদেশে ১৩ টাকা

প্রকাশিত :  ১১:৫৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতে যে ডিম ৫ টাকা, একই ডিম বাংলাদেশে ১৩ টাকা

পার্শ্বর্তী দেশ ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হলেও বাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি, কমেনি দাম। ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় ডিমের ডজন কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ডিমের বাজার কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে? এমন প্রশ্ন ক্রেতাদের। ভারতে যে ডিম ৫ টাকার আশপাশে, সেখানে আমদানির পর তা বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে অন্তত ১৩ টাকায়।

সীমান্তের ওপারে ভারতে যে ডিমের দাম ৫ টাকা; বাংলাদেশের বাজারে একই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়। দামের পার্থক্য আকাশ-পাতাল।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ক্যারেটে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এখান থেকে নিয়ে প্রতি ডজন ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে হয় আমাদের। মাল পাচ্ছিনা, যারা গাড়িতে ৮০ হাজার মাল আনতো তারা এখন পাচ্ছে ৪০ হাজার। 

নানা উদ্যোগেও যখন বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছিল না; তখন ভারত থেকে ডিম আমদানি শুরু করেছে সরকার। প্রতি পিসের দাম আমদানি পর্যায়ে ৫ টাকা ৭০ পয়সা। এর সাথে ডিমপ্রতি ১ টাকা ৮৩ পয়সা শুল্কসহ যোদ করলে প্রতিটির দাম ৭ টাকা ৫৩ পয়সা।

একই ডিমের দামে এতো পার্থক্য কেন। এমন প্রশ্নে উৎপাদকরা বলছেন, ভারতে ফিড তৈরির কাঁচামাল সহজলভ্য ও সস্তা। এ কারণে উৎপাদন ব্যয় বাংলাদেশের তুলনায় কম।   

নারিশ পোল্ট্রি ও হ্যাচারি লিমিটেডের ম্যানেজার ডা. মো. মেহেদী হাসান বলেন, “ইন্ডিয়াতে ১৮ টাকা দরের ভুট্টা দিয়ে ফিড উৎপাদন করতে পারছে, সেই ভুট্টা আমাদের কিনতে হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকায়।”

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফিড সস্তা হওয়ার কারণেই ভারতের ডিমের দাম কম, এমনটা পুরোপুরি সঠিক নয়। দেশটির বাজারে পূর্ণ প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। অন্যদিকে, বাংলাদেশে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ আছে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. ফকির আজমল হুদা বলেন, “যদি মার্কেট সিস্টেমটা ভেঙে দেওয়া যায় তাহলে আমিদানিকারকরা বাধ্য হবেন ফিডের দামটা কম রাখতে।”

এদিকে, আমদানি অব্যাহত থাকলে স্থানীয় পোল্ট্রি শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের।

এক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানি হলে ডিমের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। দামও সহনীয় পর্যায়ে আসবে। তবে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষার কথাও বলছেন তারা।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “খামারিদেরকে ডিম উৎপাদনে উৎসাহিত করতে হবে এবং তারা যাতে অপেক্ষাকৃত কম খরচে ডিম উৎপাদন করতে পারেন এই বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।”

আগামী দুই মাসে ভারত থেকে আরও কমপক্ষে ৪৭ লাখ ডিম আমদানি হবে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দুর্নীতির তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত :  ১১:৫০, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:৩২, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পলায়নকারী শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীনে করা চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় গঠিত জাতীয় কমিটি জনগণের কাছে দুর্নীতির তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়।

ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে কোনো ব্যক্তি ওই আইনের অধীনে চুক্তিবদ্ধ দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্থাগুলোর দুর্নীতি সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণাদি কমিটিতে পাঠাতে পারবেন। আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে nationalreviewcommittee@gmail.com ই-মেইল করে জাতীয় রিভিউ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল করা যাবে। তবে কমিটি প্রয়োজন মনে করলে পরে অভিযোগ দাখিলকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

এছাড়া ওই চুক্তির অধীনে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করে জাতীয় কমিটি প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে দুই বছরের জন্য ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন’ করে। পরে তিন দফায় ওই আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৪ বছর। ওই আইনে বলা হয়েছে, বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি আমদানি অথবা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন অথবা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অন্য কোনো কার্যক্রম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সে কারণে এ আইনকে বিদ্যুৎ খাতের ‘দায়মুক্তি আইন’ বলেন সমালোচকরা।

এই আইনের সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিপুল অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের ভাষায়, বিগত সরকারের সময় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ‘অনিয়মের মহোৎসব’ হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীনে করা চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করতে গত ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের জাতীয় কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী। আর সদস্য হিসেবে আছেন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজি বাংলাদেশ এর সাবেক সিওও ফেলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট (এফসিএ) আলী আশফাক, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল অ্যান্ড সোশাল সায়েন্সের অধ্যাপক (অর্থনীতি) মোশতাক হোসেন খান।

এই কমিটি তাদের কাজের জন্য যে কোনো সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় যে কোনো নথি নিরীক্ষা করতে পারবে, সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শুনানিতে আহ্বান করতে পারবে। কমিটি 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০' এর আওতায় ইতোমধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে সরকারের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কিনা তা নিরীক্ষা করবে। নিরীক্ষার ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক ও আনুষঙ্গিক সহায়তা দিবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।