অভিনেত্রী ঋতাভরীর প্রস্তাবে মমতার সায়, তৈরি হবে ‘বিশেষ কমিশন’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ‘হেমা কমিশনের’ ধাঁচে একটি কমিশন তৈরির প্রস্তাব করেছেন অভিনেত্রী ঋতাভরী।
কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক নারী নিগ্রহের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। এ পরিস্থিতিতে সিনে জগতে যৌন হেনস্থা রুখতে উদ্যোগী হয়েছেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী।
আনন্দবাজার লিখেছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ‘হেমা কমিশনের’ ধাঁচে একটি বিশেষ কমিশন তৈরির প্রস্তাব তুলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয় নবান্নে ঋতাভরী দেখা করেছেন মঙ্গলবার বিকেলে। সেখানে তাদের আধাঘণ্টার বৈঠক হয়। বিশেষ কমিশন গঠনে ঋতাভরীর প্রস্তাবে সায় দেন মুখ্যমন্ত্রী, যে কমিশন পশ্চিমবাংলার বিনোদন দুনিয়ার সব স্তরের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নারীদের সুরক্ষা চেয়ে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। এবার সরাসরি দেখা করে কমিশন গঠনের প্রস্তাব রাখেন।
ঋতাভরী সোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টে লিখেছিলেন, “মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের যৌন হেনস্থার ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছে হেমা কমিশনের রিপোর্টে। আমি ভাবছি, বাংলা চলচ্চিত্র জগতে কেন এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে না?”
২০১৭ সালে এক মালয়ালম অভিনেত্রী তার নিজের গাড়িতে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে কেরালার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
তখন ‘উইমেন ইন সিনেমা কালেক্টিভ’ নামের এক সংগঠন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নিয়ে সমীক্ষার জন্য একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। কেরালার হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বে এরপর কমিটি গঠিত হয়।
ওই কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার সাড়ে চার বছর পর কেরালা সরকার গত ১৯ অগাস্ট সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতে নারীদের যৌন হেনস্থার নানা তথ্য উঠে আসে। ঘটনাটি পরিচিতি পাচ্ছে ‘হেমা কমিটির রিপোর্ট’ নামে।
২৩৫ পাতার এই রিপোর্টে যৌন হয়রানি, বেআইনি নিষেধাজ্ঞা, বৈষম্য, মাদক ও অ্যালকোহলের অপব্যবহার, পারিশ্রমিক বৈষম্য, এবং কাজে ক্ষেত্রে অমানবিক পরিবেশের বিবরণ উঠে এসেছে।
এদিকে টালিগঞ্জেও একের পর এক নারীনিগ্রহের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে পরিচালক অরিন্দম শীল, অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এর জেরে ডিরেক্টরস গিল্ড থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে অরিন্দম শীলকে। এছাড়া অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন এক অভিনেত্রী।