img

আজ তদন্তে নামছে জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল’

প্রকাশিত :  ০৭:২৭, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৩৬, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজ তদন্তে নামছে জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল’

বাংলাদেশে জুলাই ও আগস্ট মাসে হতাহতের ঘটনা নিয়ে আজ শনিবার থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল’। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রে বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল বাংলাদেশে এসেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বা পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল তাদের কাজ শুরু করবে।

জানা গেছে, দলটি গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তদন্ত করবে। ঘটনাগুলোর কারণ (রুট কজ) পর্যালোচনা করবে এবং ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

এখন পর্যন্ত সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আট শতাধিক ব্যক্তি নিহত এবং হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রায় ৫০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আন্দোলনের সময় হতাহতের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। 

জাতীয় এর আরও খবর

img

বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় : ফখরুল

প্রকাশিত :  ১৫:২৮, ০২ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপি দেশের কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? এ বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আরেকটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে বিএনপির চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ও কূটনীতিক সাবিহ উদ্দিন আহমদের স্মরণসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, দেশে একটা অনিশ্চয়তা আবার শুরু করার জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। যেটা কোনো ইস্যু না, সেটাকে ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। আমি মনে করি এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সচেতন হওয়া দরকার।

স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল-এই সমাজটাকে পরিবর্তন করব, বদলে দেব। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি, সাবিহ চলে গেছেন সরকারি চাকরিতে। সরকারি চাকরিতে গেলেও কখনো তিনি তার লক্ষ্য থেকে সরে যাননি। সাবিহ যেখানেই ছিল সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগণের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি আমার মনে পড়ে যে, যখন আমাদের ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। তখন দেখেছি যে, তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেছেন।’

শেখ হাসিনার শাসনামলে সরকারের রোষানল ও নির্যাতিত হওয়ার বর্ণনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওই সময়ে তার ওপরে প্রচণ্ড আক্রমণও হয়েছিল। রিয়াজ রহমানের গুলি লেগেছিল, সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আরেকজনের ওপরও আক্রমণ হয়েছিল। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। বহুবারই বিভিন্ন গ্রেপ্তার হওয়ার মুহূর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে, ভিকটিম হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি। তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা যারা একসঙ্গে ছিলাম তাদের কাছে এটা বেদনার। সাবিহর ছবিটা এখানে দেখে আঁতকে উঠলাম।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ভাইয়ের মতোই ছিলাম। অফুরন্ত প্রাণশক্তি ছিল তার। মনে হয়েছে টগবগ করছে সবসময় জীবনী শক্তি নিয়ে। কোনো কিছুতে ভেঙে পড়ার লোক ছিল না, লড়াই করেছে শেষ পর্যন্ত। আজকে সে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতো ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখে।’ 

স্মরণসভায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাবিহ উদ্দিন ছিলেন রিয়াল ন্যাশনালিস্ট। দেশ ও জনগণের প্রশ্নে তার কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমরা হারিয়েছি সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম সবুজকে। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।’ 

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘সাবিহ শেষদিন পর্যন্ত দেশের কথা ভেবেছেন, দশের কথা ভেবেছেন। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপস তিনি করেননি। আমি বিশ্বাস করব, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ জান্নাতবাসী হয়েছেন। জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে আল্লাহ তাকে স্থান দিয়েছেন।’ 

রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে প্রয়াত কূটনীতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার শাসনামলে সাবিহ উদ্দিন আহমেদ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন।

প্রয়াত সাবিহ উদ্দিনের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ওপরে স্মৃতিচারণ করেন প্রবীণ সম্পাদক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, এবিএম শাহেদ আখতার, প্রয়াত সাবিহ উদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা। প্রয়াত সাবিহ উদ্দিনের সহধর্মিনী রওনক আহমেদ, ছেলে সাইয়াব আহমেদ, বিএনপি মহাসচিবের সহধর্মিনী রাহাত আরা বেগমসহ নিকট স্বজনরাও ছিলেন স্মরণ সভায়।