বাবা-মাকে শাস্তি দিতে শিশুদের আটক করছে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিরোধীদের দমনে ব্যাপক মাত্রায় গ্রেপ্তার ও হত্যা চালাচ্ছে । জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছরে ৫ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে জান্তাবাহিনী।
গেল এক বছরে ৫০ শতাংশ বেড়েছে নিহতের সংখ্যা। নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে মারা যাচ্ছে শিশুরাও। বিভিন্ন শহরে গ্রেফতার করে চলছে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হলে সহিংসভাবে তা দমনে নামে সেনাবাহিনী।
সাড়ে তিন বছরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়, লড়াই চলছে একাধিক ফ্রন্টে। বিভিন্ন অঞ্চলে এখন পতনের মুখে জান্তা সরকার। এ অবস্থায় বিরোধীদের দমনে গ্রেপ্তার ও হত্যার ব্যাপকতা আরও বাড়িয়েছে তারা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে তার চিত্র।
এতে বলা হয়, ২০২১ থেকে ২০২৩ এর মার্চ পর্যন্ত ২৫ মাসে সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ২ হাজার ৯৩৬ জন। আর এপ্রিল ২০২৩ থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত ১৪ মাসে মারা গেছেন ২ হাজার ৪১৪ জন। এক বছরে ৫০ শতাংশ বেড়েছে নিহতের সংখ্যা।
প্রতিবেদনে উঠে আসে, নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে হতাহতের তথ্য। এ পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার সাড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে ৮৮ শিশু ও নারী ১২৯ জন।
সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ দিতে চলছে গ্রেফতার-আটক। এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ২৭ হাজারের বেশি। এরমধ্যে রয়েছে শিশুরাও। জাতিসংঘ বলছে, বাবা-মাকে রাজনৈতিক বিরোধিতার শাস্তি দিতেই শিশুদের আটক করছে সেনাবাহিনী।
প্রতিবেদনে বন্দিদের ওপর বর্বর নির্যাতনেরও বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পুরো পরিস্থিতির বর্তমান চিত্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার হাইকমিশন।