img

অবশেষে নগদ টাকার সংকট কাটছে ৫ ব্যাংকের

প্রকাশিত :  ১৩:৫৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অবশেষে নগদ টাকার সংকট কাটছে ৫ ব্যাংকের

নগদ টাকা না থাকায় ক্ষমতার পালাবদলের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গ্রাহককে অর্থ দিতে না পারা পাঁচ ব্যাংকের সংকট আপাতত কাটছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন মেলায় অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে এসব ব্যাংকের।

তারল্য সংকটে থাকা এই পাঁচ ব্যাংককে সহায়তা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য টাকা ধার দেওয়া ব্যাংককে ‘গ্যারান্টি দিচ্ছে’ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হল- বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকগুলো এতদিন এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সরকার পতনের পর এগুলোর পর্ষদ এস আলম মুক্ত করা হয়েছে। আগের পর্ষদ ভেঙে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আপাতত তীব্র সংকটে পড়া পাঁচ ব্যাংককে প্রথম ধাপে তারল্য সহায়তা দেওয়া হলেও আবেদনের প্রেক্ষিতে বাকি ব্যাংকগুলোকেও তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দিতে অনুমিত দেওয়ার তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে বলেন, পাঁচ ব্যাংক তারল্য সহায়তা পাবে। যেসব ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে সেগুলো সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে অর্থ দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে চুক্তি সইয়ের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মতি জানিয়ে পাঁচ ব্যাংককে বৃহস্পতিবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। নানা অনিয়মে ধুকতে থাকা এই পাঁচ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। কারণ এসব ব্যাংকে তীব্র তারল্য সংকট চলছে। আপাতত এসব ব্যাংক আন্তঃব্যাংক থেকে টাকা ধার পেলে গ্রাহকদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে পারবে। তাতে তারল্য কিছুটা সংকট কাটবে।

এসব ব্যাংকের বাইরে ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক তারল্য সংকটে রয়েছে। এ পর্যন্ত বিশেষ ধার চেয়ে আট ব্যাংক চিঠি দিয়েছে বলে কর্মকর্তারা বলেছেন।

গত ৫ অগাস্ট সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংকখাতে নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। এস আলমের এসব শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোকে আগের সরকারের সময়কার গভর্নরের বিশেষ সুবিধায় দেওয়া তারল্য সহায়তা বন্ধ করে দেন নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

এতে ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়। অন্য দিকে অনিয়মের মাধ্যমে এস আলমের বিপুল ঋণ নেওয়ার তথ্য সামনে এলে গ্রাহকরা এসব ব্যাংকে নতুন করে আমানত রাখতে দ্বিধায় পড়ে। এতে এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা চাহিদা মোতাবেক নগদ টাকা তুলতে না পেরে বিপাকে পড়েন।

এরপর গভর্নর আহসান মনসুর এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা যাতে টাকা তুলতে ও লেনদেন করতে পারেন সেজন্য আন্তঃব্যাংক থেকে টাকা ধার নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এজন্য যেসব ব্যাংক টাকা ধার দেবে তাদের গ্যারান্টি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার গণমাধ্যমকেকে বলেন, তারল্য সংকটের বিষয়টি সব ব্যাংকে নয়, কিছু কিছু ব্যাংকে সমস্যা আছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে যাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেই সব ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। বোর্ডের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে অনেক ঋণ দেওয়া হয়েছে। আসলে অলিগার্করা ব্যাংক ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই আমরা গভর্নরের সাথে পরামর্শ নিতে কাজ করছি এসব দুর্বল ব্যাংকে কীভাবে ঠিক করা যায়।

তিনি বলেন, আমানত নিয়ে আসার জন্যও চেষ্টাও করা হচ্ছে। কারণ দুর্নীতির কারণে এসব ব্যাংকে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, তাইলে আমানত আসবে। আমানত আসলে ব্যাংক ঘুড়ে দাঁড়াবে।


অর্থনীতি এর আরও খবর

img

১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত :  ১৫:৪৩, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১১ হাজার ৮৩৯ কোটি ২০ লাখ টাকা।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য বলছে, চলতি মাস অক্টোবরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি ২২ লাখ ডলার বা ৯৮৬ কোটি টাকার রেমিট্যান্স আসছে। এভাবে রেমিট্যান্স আসার ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে আড়াই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে প্রবাসী আয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, এই সময়ে রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে একটি ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

এই সময়ে ১১ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স পাঠাননি প্রবাসীরা। ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাবাক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।

উল্লেখ্য, গত জুন মাসে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার প্রবাসী আয় আসার পর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল প্রায় ১৯১ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম আয় ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় গত আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর গত সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।


অর্থনীতি এর আরও খবর