img

পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত :  ১১:৪৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত

পোশাক শ্রমিকদের ১০ শতাংশ হারে ‘ইনক্রিমেন্ট’ বাড়ানোসহ ১৮ দফা দাবি মালিকপক্ষ মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তাদের আন্দোলনের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা। এতে ভাটা পড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ে। অবশেষে শ্রমিকদের সেই ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ও মালিকপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উপস্থিত ছিলেন। 


শ্রমিকদের ১৮ দফা

১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ

২. যে সকল কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি তা দ্রুত বাস্তবায়ন

৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে

৪. কোনো শ্রমিকের চাকরি ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে/চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে, এর সাথে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্যান্য ধারাসমূহ সংশোধন

৫. সকল প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ

৬. হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সকল কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে

৭. সকল কারখানায় প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যবস্থা চালু

৮. বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ করা

৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা চালু

১০. বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। (বায়োমেট্রিক হল আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে কারখানায় প্রবেশাধিকার। আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ না করলে কারখানায় প্রবেশ করতে পারেন না কর্মীরা।)

১১. সকল প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার

১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ

১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করতে হবে (নারী-পুরুষ সমান হারে নিয়োগ)

১৪. জুলাই বিপ্লবে ‘শহীদ’ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত

১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ

১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সকল কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন

১৭. অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও

১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ

img

নিলামে উঠছে হামিদ ফেব্রিক্সের সম্পদ

প্রকাশিত :  ০৮:৪৫, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হামিদ ফেব্রিক্সের ৫৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বকেয়া ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংক এশিয়ার কোম্পানিটির সম্পদ নিলাম ঘোষণা করেছে।

গত সপ্তাহে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে আগ্রহী ক্রেতাদের ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্য কোটেশন জমা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নিলামে নরসিংদীতে অবস্থিত কারখানা ভবন ও যন্ত্রপাতিসহ ২৯৬.৫০ ডিসিমেল জমি রয়েছে, যার সবগুলোই হামিদ ফেব্রিক্সের মালিকানাধীন।

হামিদ ফেব্রিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং আশা করছি শীঘ্রই এটি সমাধান হয়ে যাবে।

ব্যাংকটির সূত্র জানায়, কোম্পানিটি প্রথমে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ডিমান্ড লোন নেয়, যা পরে মেয়াদি ঋণে রূপান্তরিত হয়। একাধিক নোটিশ সত্ত্বেও, হামিদ ফেব্রিক্স সময়মতো ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করে ব্যাংকটি।

হামিদ ফেব্রিক্সের কারখানায় তিনটি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে। বোনা ফ্যাব্রিক ইউনিটের বার্ষিক ৩২.৪০ মিলিয়ন ইয়ার্ড উৎপাদন করার ইনস্টল ক্ষমতা রয়েছে। তাঁত ইউনিটগুলির বার্ষিক ক্ষমতা ৯.৮৮ মিলিয়ন ইয়ার্ড এবং ডাইং ইউনিটের প্রায় ১.৩৭ মিলিয়ন কেজি সুতা উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামিদ ফেব্রিক্সের সম্পদের মূল্য ৫৭১ কোটি টাকা এবং ইক্যুইটি মোট ২৯৬ কোটি টাকা।

শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, হামিদের কারখানার এলাকাসহ পুরো নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী অঞ্চল গ্যাস সংকটে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ কারখানাই পূর্ণ ক্ষমতায় চলতে পারছে না।

এই সমস্যাটি প্রশমিত করার জন্য কোম্পানিটি এলপিজির মতো বিকল্প শক্তির উৎসগুলিতে বিনিয়োগ করেছে। এতে তাদের পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। যার ফলে কোম্পানিটির ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে।

হামিদ ফেব্রিক্স ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিন বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ হারে ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এরপর ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ শতাংশ হারে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২৪ অর্থবছরে ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ৬ পয়সা লোকসান করেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৬ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ১১ পয়সা।