img

দেশের উন্নয়ন ও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের USA সফর: করিম চাচার চোখে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ!

প্রকাশিত :  ০৯:৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশের উন্নয়ন ও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের USA সফর: করিম চাচার চোখে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ!

প্রিয় ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

আসসালামু আলাইকুম। আমি করিম চাচা, একজন সাধারণ কৃষক, দেশের অতি সাধারণ মানুষ। আপনার প্রতি আমার যে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা, তা আসলে অজস্র মানুষের মতোই। আজকের এই খোলা চিঠির পেছনের কারণ আপনার সাম্প্রতিক USA সফর এবং সেই সফরের মাধ্যমে যে সাফল্য আপনি অর্জন করেছেন, তার প্রতি আমার গভীর অনুভূতি প্রকাশ করা।

আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা কোনো নতুন ঘটনা নয়। ২০০৬ সালে যখন আপনি নোবেল পুরস্কার অর্জন করলেন, সেই সময় থেকেই আমার মনের কোণে আপনাকে নিয়ে গর্বের জন্ম নেয়। কিন্তু নোবেল পাওয়া শুধু আপনার জীবনের একটি সফলতার অধ্যায় ছিল না, এটি ছিল সমগ্র বাংলাদেশের জন্য এক অমূল্য অর্জন। এই পুরস্কার প্রমাণ করেছিল যে, আমাদের দেশের মানুষও বিশ্বের দরবারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।

আমি তো গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার যে অবদান, সেটা চোখের সামনেই দেখেছি। ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে দরিদ্র মানুষদের জীবনে আপনি যে পরিবর্তন এনেছেন, সেটাই আমাদের জন্য এক বিপ্লবের সূচনা ছিল। আপনার সাফল্যের গল্প শুধু আমাদের জন্য নয়, সারা বিশ্বকে বুঝিয়েছে, কীভাবে একজন মানুষ সঠিক ইচ্ছা ও উদ্যোগ নিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

আপনার সাম্প্রতিক USA সফর আমাদের জন্য আরেকটি গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে। আমি জানি, আপনি সেই সফরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন, যেখানে উন্নত বিশ্বের সামনের মানুষদের সাথে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সম্ভাবনার কথা। আপনার মুখে যখন আমাদের দেশের উন্নয়নের গল্প শোনা যায়, তখন মনে হয়, আমাদের অজানা গ্রামের মানুষগুলোর জীবন সংগ্রামও একদিন সারা বিশ্ব জানবে। আপনি শুধু একটি সফরে অংশ নেননি, আপনি বাংলাদেশের এক স্বপ্নের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

আপনার USA সফর এবং সেখানকার সাফল্য শুধু আপনার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। বৈশ্বিক মঞ্চে আপনি আমাদের দেশের সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন, কীভাবে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব, তা দেখিয়েছেন। আপনার এই প্রচেষ্টা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এক নতুন আশার আলো হিসেবে কাজ করছে।

আমি শুনেছি, আপনার সম্মানে USA তে আরও অনেক বড় বড় পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আপনার নোবেল প্রাপ্তির পর আরও পুরস্কার আপনার জন্য খুব স্বাভাবিক বিষয় হলেও, আমাদের সাধারণ মানুষের জন্য তা খুব গর্বের। যখন আপনি এমন পুরস্কার অর্জন করেন, তখন তা শুধুমাত্র আপনার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং পুরো দেশের সম্মান।

ডঃ ইউনুস, আপনি শুধু একজন সফল মানুষ নন, আপনি আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য দিশারী। আপনি যেভাবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে আপনি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছেন। আপনি দেখিয়েছেন যে, ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব।

আপনার USA সফরের সাফল্য আমাদের দেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। আপনি বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন। উন্নত বিশ্বের সামনে দেশের সম্ভাবনা, বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মডেল উপস্থাপন করে আপনি প্রমাণ করেছেন যে, বাংলাদেশে শুধুমাত্র সম্ভাবনার কথা নয়, বাস্তবায়নেরও অনেক কিছু করা হয়েছে। এই সফরের মাধ্যমে আপনার উদ্যোগগুলো আন্তর্জাতিক সমর্থন পাবে এবং আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে।

আপনার ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের সাফল্য শুধু আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে নয়, বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য দূরীকরণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর মাধ্যমে দেশের গরিব মানুষ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পেরেছে, যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি যে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন, তা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রেখেছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নারীরাও আর্থিক স্বাধীনতা লাভ করেছে, যা তাদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। আপনি দেখিয়েছেন যে, দেশের উন্নয়ন শুধু বড় বড় শিল্প কিংবা অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করেও সম্ভব।

ডঃ ইউনুস, আপনার কাজ আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। আপনার নেতৃত্ব আমাদের বুঝিয়েছে, সঠিক ইচ্ছা এবং সৎ উদ্যোগ থাকলে, দেশের উন্নয়নে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আমরা বিশ্বাস করি, আপনার মতো নেতা যদি দেশের নেতৃত্বে থাকে, তবে আমাদের দেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে।

আমাদের দেশের অনেক সমস্যা রয়েছে, কিন্তু আপনি প্রমাণ করেছেন, সমস্যা থাকলেও সমাধানের পথ রয়েছে। আমাদের দেশের নেতৃত্বে এমন সৎ, নিষ্ঠাবান মানুষদের প্রয়োজন, যারা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে।

আপনার USA সফর আমাদের দেশের জন্য শুধু সম্ভাবনার নয়, উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। উন্নত বিশ্ব এখন বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, এবং আপনার নেতৃত্বে আমাদের দেশের সম্ভাবনাগুলো আরও বেশি উজ্জ্বল হয়েছে। আপনি শুধু এক ব্যক্তি নন, আপনি আমাদের দেশের উন্নয়নের প্রতীক।

আমি বিশ্বাস করি, আপনার হাত ধরেই আমাদের দেশ আরও উন্নত হবে। আপনার নেতৃত্বে নতুন নতুন আন্তর্জাতিক সুযোগ তৈরি হবে, যা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। আপনি শুধু বাংলাদেশের একজন নেতাই নন, আপনি আমাদের দেশের ভবিষ্যতের পথ প্রদর্শক।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস, আপনার সাফল্য আমাদের দেশের জন্য গর্বের বিষয়। আপনি শুধু একজন সফল ব্যক্তি নন, আপনি আমাদের দেশের মানুষের জন্য আশার আলো। আপনার USA সফর এবং সেই সফরের সফলতা আমাদের দেশের উন্নয়নের পথে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আপনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা চিরকাল থাকবে। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন, আপনাকে দীর্ঘজীবন দান করুন, যাতে আপনি আরও অনেক কাজ করতে পারেন আমাদের দেশের জন্য। আমরা আপনার পাশে আছি, থাকবো, এবং আপনার নেতৃত্বে আমাদের দেশ একদিন উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছাবে—এই আশাতেই আমরা দিন গুনছি।


ইতি,

করিম চাচা

একজন গর্বিত বাংলাদেশি

img

যৌনতা এবং শারীরিক চাহিদা থেকে জীবনের পরিধি আরও অনেক বড় – এ আর রহমানের আত্মোপলব্ধি

প্রকাশিত :  ০৭:৩২, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:১১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

রেজুয়ান আহম্মেদ

অস্কারজয়ী সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমান, যিনি পৃথিবীকে সুরের মাধ্যমে নতুনভাবে চিনিয়েছেন, সম্প্রতি নিজের জীবনের এক অদেখা অধ্যায় প্রকাশ্যে এনেছেন। সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পর, এক দীর্ঘ নীরবতার শেষে রহমান তাঁর ব্যক্তিগত যাত্রা সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে জীবনের উদ্দেশ্য এবং মানবিক সম্পর্কের মধ্যে শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদার সীমা থাকে না; জীবনের পরিধি আরও অনেক বড় এবং গভীর।

তিনি তাঁর একটি বক্তব্যে বলেন, ‘‘যৌনতার মতো শারীরিক চাহিদা মেটানোই জীবনের সব নয়, কখনও…’’ তাঁর এই উক্তি শুধু একটি সঙ্গীতশিল্পীর দৃষ্টিকোণ নয়, বরং একটি জীবনদৃষ্টি, যেখানে আত্মিক পরিপূর্ণতা এবং মানসিক শান্তি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। রহমানের মতে, আমাদের জীবনে একটি গভীর শূন্যতা রয়েছে, যা শুধুমাত্র শারীরিক সুখ দ্বারা পূর্ণ হতে পারে না। আমাদের আধ্যাত্মিক বা মানসিক উন্নতির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা জীবনকে অর্থবহ এবং পূর্ণতা দেয়।

প্রায়ই সমাজে যৌনতা এবং শারীরিক সম্পর্ককে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু রহমানের অভ্যন্তরীণ জগতের এই খোলামেলা উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের জীবনের অঙ্গনের অনেক বৃহৎ ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে আনন্দ, শান্তি এবং পূর্ণতা আসতে পারে। ‘‘শুধুমাত্র শারীরিক চাহিদা মেটানোই জীবনের সব নয়’’—এই কথায় তিনি একদিকে যেমন জীবনের উদ্দেশ্য অনুসন্ধান করছেন, তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বও তুলে ধরছেন।

এ আর রহমানের মতে, একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য তখনই ভালো থাকতে পারে, যখন সে জীবনের গভীরে প্রবাহিত হতে পারে। তিনি বলছেন, ‘‘অবসাদ ঘিরে ধরে, কারণ আমার মনে হয়, আমাদের সবার মধ্যেই একটা শূন্যতা রয়েছে।’’ এরই মধ্যে গল্পকাররা, দর্শন, বিনোদন, এমনকি কখনও কখনও ওষুধের মাধ্যমে এই শূন্যতা পূর্ণ করা যায়। কিন্তু জীবনের উদ্দেশ্য সেই সব জিনিসে সীমাবদ্ধ নয়।

এখানে উল্লেখযোগ্য হলো, রহমানের ব্যক্তিগত জীবনের অধ্যায়গুলো। তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলীর প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি একটি অন্তর্দৃষ্টি দেয়, যে যেখানে তিনি তাঁর শূন্যতা, দুঃখ এবং সঙ্কটের মধ্যে থেকেও জীবনের একটি বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ খুঁজে পেয়েছেন। ‘‘এমনকি ভগ্ন হৃদয়ের ভারে ঈশ্বরের সিংহাসনও কেঁপে উঠতে পারে’’—রহমান তাঁর নিজের দুঃখ এবং সংগ্রামকে পৃথিবীর বৃহত্তর দুঃখের সঙ্গে তুলনা করছেন, যেখানে ক্ষতি এবং হতাশা একে অপরকে অনুসরণ করে। তবুও, তিনি এই ভঙ্গুরতার মধ্যে জীবনের অন্য অংশগুলির জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এ আর রহমানের এই বক্তব্যে প্রতিটি মানুষের জীবনের বিভিন্ন দিকের প্রশংসা করা হয়েছে—মানসিক শান্তি, আত্মিক উন্নতি, এবং অন্যের জন্য বাঁচার আকাঙ্ক্ষা। তিনি বলেছেন, ‘‘যখন তুমি অন্যের জন্য বাঁচবে, তখন তোমার মধ্যে এই চিন্তাগুলি আসবে না।’’ এর মাধ্যমে তিনি আমাদেরকে জীবনকে শুধুমাত্র নিজের সুখের জন্য না, বরং একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বাঁচার পরামর্শ দিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এমন একটি নৈতিক ভিত্তি খুঁজে পাওয়া উচিত, যা শুধুমাত্র আমাদের শারীরিক চাহিদা পূরণে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের আধ্যাত্মিক এবং মানসিক উন্নতি, আমাদের জীবনের বাস্তব মূল্যমানের পরিচয় দেয়।





রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

মতামত এর আরও খবর