img

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাবনায় দেশের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত: ব্যবসায়ীদের হাত ধরে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত :  ১৯:০৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাবনায় দেশের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত: ব্যবসায়ীদের হাত ধরে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ!

রেজুয়ান আহম্মেদ


বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে নানা সময়ে নানা মতামত উঠে এসেছে, কিন্তু সাম্প্রতিককালে একটাই নাম ভেসে উঠছে সকলের মুখে—ড. মুহাম্মদ ইউনুস। নোবেলজয়ী এই মহামানবের নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠায় যে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, তা নিয়ে আজ সারা দেশে আলোচনা তুঙ্গে। তাঁর অনন্য চিন্তাধারা, বিশেষ করে দেশের ব্যবসায়ীদের উপর ভরসা রেখে উন্নয়নকেন্দ্রিক পরিকল্পনা, যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

ড. ইউনুসের মতে, দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব তখনই যখন ব্যবসায়ীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তিনি বিশ্বাস করেন, অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো উদ্যোক্তা ও করদাতা শ্রেণি। দেশের সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন যথাযথ শিল্পায়ন, ব্যবসা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন বিনিয়োগ সুযোগ তৈরি করা। তাঁর কথা, \"একটি দেশ তখনই প্রকৃত উন্নত হয় যখন তার ব্যবসায়ীরা শক্তিশালী হয় এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন কার্যক্রমে অবদান রাখে।\"

সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বে ঘোষিত পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের ছোট ও মাঝারি ব্যবসার প্রসারকে। তাঁর মতে, “দেশের উন্নয়ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাতে নয়, বরং যেসব মানুষ সরাসরি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে, তাঁদের কাঁধে তুলে দেওয়া উচিত।” দেশের মানুষকে এই নতুন ভাবনার সঙ্গে একাত্ম করে তুলতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও।

দেশের প্রতিটি অঞ্চলে উন্নয়ন ছড়িয়ে দিতে তিনি চাইছেন সমতাভিত্তিক পরিকল্পনা। তাঁর উদ্ভাবনী চিন্তা অনুসারে, শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক উন্নয়ন নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিল্প স্থাপন এবং বিনিয়োগ বাড়িয়ে আঞ্চলিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা উচিত। এই লক্ষ্যেই তিনি একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা করেছেন, যেখানে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ড. ইউনুসের চিন্তাধারায় শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক উন্নয়নের দিকটিও গুরুত্ব পেয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থার সাফল্যের পর তিনি চাইছেন দেশের প্রতিটি পরিবারে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে। সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে এনে দেশকে একতাবদ্ধ করাই তাঁর লক্ষ্য। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এমন, যেখানে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে সমাজের প্রতিটি স্তরেই উন্নয়ন ছড়িয়ে পড়বে।

এই উন্নয়নকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা নিয়ে সারাদেশে এখন আলোচনা তুঙ্গে। ড. ইউনুসের ভাবনায় গড়ে উঠতে যাচ্ছে এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হবে ব্যবসায়ীরা, আর তাঁদের অবদানে দেশ পাবে এক নতুন পরিচয়—একটি সমৃদ্ধ, শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল বাংলাদেশ।

ড. ইউনুসের প্রতি দেশবাসীর অগাধ আস্থা এবং তাঁর চিন্তাধারার প্রতি সমর্থন যেন আগামী দিনের উন্নয়নের পথে আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের সকল স্তরে এই ভাইরাল ভাবনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং দেশবাসী আজ প্রত্যাশা করছে এক নতুন দিনের, যেখানে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।


রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম
img

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে করিম চাচার খোলা চিঠি

প্রকাশিত :  ১৫:৫৭, ১৫ মার্চ ২০২৫

বিষয়: বেঁচে থাকার আকুতি—আমাদের দুঃখ দেখুন, আমাদের কষ্ট শুনুন!

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যার,  

আমার নাম করিম মিয়া। বয়স ষাট পেরিয়েছে। গাজীপুরের এক বস্তির কুঁড়েঘরে বাস করি। জীবনের চল্লিশ বছর কাটিয়েছি গার্মেন্টসের যন্ত্রপাতির সাথে সংগ্রাম করে। দুই সন্তানকে মানুষ করেছি এই শ্রমের অর্থে। কিন্তু আজ? আজ আমি নিঃস্ব, কাজহারা এক বৃদ্ধ। শুধু আমি নই, পাশের ঘরের লতিফ, সামনের বস্তির জাহানারা—সবাই আজ অন্ধকারে হাতড়াচ্ছে। আমাদের চুলোয় আগুন জ্বলে না, বাচ্চারা ক্ষুধায় কাঁদে, মায়েরা কষ্টে চোখের জল চেপে রাখে, আর পুরুষরা দিনরাত ঘুরে বেড়ায় এক মুঠো ভাতের আশায়।  

মাননীয় মহোদয়, এই গাজীপুর শহর একদিন কত প্রাণবন্ত ছিল! টঙ্গী, কালিয়াকৈর, নারায়ণগঞ্জ—সারাদিন মেশিনের আওয়াজে মুখরিত থাকত। আমরা কাজ করতাম, মজুরি পেতাম, সংসার চালাতাম। এখন? এখন সেই কারখানাগুলো শুধু মাকড়সার জালে আবৃত। মালিকেরা দেশ ছাড়ছেন, বিনিয়োগকারীরা দূরে সরে যাচ্ছেন। গত বছরেই গাজীপুরে ৩০০টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়েছে। পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক রাস্তায়—এটা কি মানুষের বাঁচার উপায়?  

আমার মেয়ে রেশমা এইচএসসি পাস করে ঘরে বসে আছে। ওর স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। এখন তো দুই বেলা ভাত জোটানোই দায়। ছেলে শফিকের চাকরির খোঁজে পাগলের মতো ঘুরি। কারখানার গেটে দাঁড়ালে শুধু বলে, \"দেশের অবস্থা খারাপ, পরে আসুন।\" মহোদয়, \"পরে\" বলতে কী বোঝায়? আমাদের তো আজই ভাত চাই!  

আমার পাশের বস্তির অমিতের কথা শুনেছেন? সেও গার্মেন্টসে কাজ করত। কারখানা বন্ধ হওয়ার পর স্ত্রী চলে গেল, দুটি সন্তান নিয়ে রাস্তায় বসে থাকতে বাধ্য হয়েছিল। গত মাসে শুনলাম, ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মহোদয়, এভাবে কত জীবন নিভে যাবে? কত করিম-অমিত মরবে?  

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আমরা কখনো রাজনীতির দাবিদার হইনি। চাইনি সোনার বাংলা। শুধু চেয়েছি ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র। সন্তানদের মুখে ভাত দিতে পারলেই হয়। কিন্তু এখন তো সেই ভাতের গ্রাসও হাতছাড়া। আমাদের ঘামে-রক্তে গড়া এই দেশের অর্থনীতি, অথচ আমরা কেন এভাবে মরছি?  

আপনার কানে কী আমাদের কান্না পৌঁছায় না? আপনি কি জানেন, রাতের বস্তিতে কত মা অভুক্ত সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর গান গায়? আমরা তো আর কিছু চাই না—শুধু একটি সুযোগ চাই। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎটুকু বাঁচান।  

আপনার পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছি। কারখানার তালা খুলুন, বিনিয়োগকারীদের ডাকুন, আমাদের হাতে কাজ দিন। আমরা রাজনীতি বুঝি না, বুঝি শুধু ক্ষুধার যন্ত্রণা। আমাদের ভোট না পেতে চান, তাতেও আপত্তি নেই—শুধু বাঁচতে দিন।  

আপনি আমাদের শেষ ভরসা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। এই ভরসার প্রদীপ নিভিয়ে দেবেন না।  


করিম মিয়া  

(একটি ক্ষুধার্ত, আশাহত বাতাসে দোল খেয়ে চলা জীবন)  

গাজীপুর বস্তি, ১৫ মার্চ ২০২৫