img

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১৬ হাজার পাউন্ডের উপহার নেয়ার প্রতিবাদে ক্যান্টারবারির এমপির পদত্যাগ

প্রকাশিত :  ১৪:০৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১৬ হাজার পাউন্ডের উপহার নেয়ার প্রতিবাদে ক্যান্টারবারির এমপির পদত্যাগ

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার লেবার পার্টির সহকর্মী ওয়াহিদ আলীর কাছ থেকে কাজের পোষাক, চশমা এবং স্ত্রীর জন্য আরও বেশ কিছু উপহার গ্রহণের প্রতিবাদে ক্যান্টারবারি আসনের এমপি রোসি ডাফিল্ড পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাঁর দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের জনগণের প্রতি নিষ্ঠুর নীতি গ্রহণ করেছেন এবং নিজের জন্য ১৬ হাজার পাউন্ডের উপহার সামগ্রি গ্রহণ করে ব্রিটিশ মূল্যবোধের সাথে প্রতারণা করেছেন।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার তিনি সংসদের হুইপের নিকট তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দেন। তিনি বলেন, জুলাইয়ে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাজকর্ম বিষ্ময়কর ও আপত্তিকর ছিল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বয়স্ক জনগোষ্ঠির জন্য শীতকালীন জ্বালানি সহায়তা বাতিল করে তিনি নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, রোসি ডাফিল্ড ২০১৭ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রোসিসহ আরও সাত জন এমপি দুই সন্তানের সুবিধার ক্যাপ বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাবে ভোট দিয়ে ব্রিটেনের রাজার বক্তৃতার বিদ্রোহ করেছিলেন। ডাফেল্ড আগামিতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে হাউজ অব কমন্সে আসতে চান বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ বছর জুলাইয়ের নির্বাচনের আগে তাঁর ছেলের জিসিএসই পরীক্ষার জন্য বাড়ির বাইরে কোনো ধরনের মিডিয়াকর্মীর ভিড় এড়ানোর জন্য লর্ড আলীর কাছ থেকেও ২০ হাজার পাউন্ডের আবাসন সুবিধা গ্রহণ করে বিতর্কিত হয়েছিলেন।

পদত্যাগ পত্রে রোসি ডাফিল্ড জানান, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজের সুবিধা, স্বজনপ্রীতি ও লোভের সীমা অতিক্রম করেছেন। এর ফলে এক সময়ের গর্বিত দল লেবার পার্টিকে কলঙ্কিত ও অপমানিত হতে হয়েছে। তিনি এই সকল ঘটনায় লজ্জিত বলেও পদত্যাগ পত্রে জানান। তিনি স্যার কিয়ার স্টেমারকে প্রধানমন্ত্রী পদের অযোগ্য বলেও উল্লেখ করেন।

ডাফিল্ডের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায়, নটিংহাম ইস্টের লেবার এমপি নাদিয়া হুইটম বলেছেন, এটি গভীরভাবে হতাশাজনক যে তাঁকে পদত্যাগ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কারণ তাঁর অনেক আগেই এ পদ হারানো উচিত ছিল। কিন্তু স্ট্রাউডের লেবার এমপি ডাঃ সাইমন ওফার বলেছেন যে, তিনি সত্যিই দুঃখিত পার্টি তাকে হারিয়েছে। যদিও আমি তাঁর সমস্ত রাজনীতির বিষয় ভাগাভাগি নাও করতে পারি, তবু, আমি জানি যে একসাথে কাজ করে আমাদের অনেক কিছু অর্জন করার আছে।

ডাফিল্ডকে কনজারভেটিভ পার্টিতে স্বাগত জানানো হবে কিনা বিবিসি জানতে চাইলে, টোরি নেতৃত্বের প্রতিযোগী টম টুগেনধাত বলেছেন, \"এটি সত্যিই তাঁর জন্য একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে, আমি দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করি যে তাকে এ ব্যাপারে কোন কিছু  জিজ্ঞাসা করা হবে না। তিনি আরও বলেন, লেবার পার্টি ও কিয়ার স্টারমার আত্মসেবায় নিয়োজিত হয়েছেন। এটা কখনোই ব্রিটিশ জনগণের সেবা হতে পারে না।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

মৃত্যুর ১০ বছর পর হ্যারডসের প্রাক্তন মালিক ফায়েদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত :  ২১:৫৬, ০১ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ২২:১৫, ০১ অক্টোবর ২০২৪

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানি হ্যারডস এর সাবেক মালিক মৃত মোহাম্মদ আল ফায়েদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন কোম্পানিতে কাজ করা বিশ জনের বেশি সাবেক নারী কর্মী। যৌন নির্যাতনের শিকার বিশ জন নারীর মধ্য থেকে পাঁচ জন নারী গত ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিবিসি ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই অভিযোগ তুলে সে সময়কার নির্যাতনের গল্প করেন। বাকিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে হ্যারডসে কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায় কি ভাবে ফায়েদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তার বিবরণ দেন। তাঁদের মধ্যে নির্যাতনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া লিন্ডসে নামক একজন নারী বলেন, কাজের কথা বলে তাঁকে প্যারিসের হ্যারডসে পাঠানো হয়। সেখানে ফায়েদ তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

বিবিসির গল্পে একজন নারী অভিযোগ করেন, ফায়েদ প্যারিসের হ্যারডসে তাঁর কামড়ায় তাঁকে ডেকে নিয়ে তাঁর পরিধেয় কাপড়ের বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেন। ফায়েদ তাঁকে ভাল ও দামি পোষাক কেনার কথা বলে তাঁর সাথে যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ করেন এবং এক পর্যায়ে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিবিসি প্রাথমিক তদন্তে বিশজনেরও বেশি নারীর সাথে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য গ্রহণের কথা জানায়। এই বিশজনের মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ফায়েদ তাঁদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে যৌন হয়রানী এবং ধর্ষণ করেছেন। প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ আল ফায়েদ ১৯৮৫ সাল থেরেক ২০১০ সালে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হ্যারডসের মালিক ছিলেন।

নারীদের এসব অভিযোগের ব্যাপারে হ্যারডসের বর্তমান মালিকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, আল ফায়েদের মালিকাধীন হ্যারডস আর বর্তমান মালিকদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হ্যারডস এক নয়। বর্তমানের সাথে তুলনা করতে গেলে আগের সংস্থাটির চেয়ে বর্তমান সংস্থাটি সম্পূর্ণ আলাদা। তাঁরা জানান, হ্যারডসে কর্মরত সকল স্তরের কর্মীদের কল্যাণে তাঁরা সব কিছুই করে থাকেন। তবে, তারা এটাও বলেন, নির্যাতিত নারীদের জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই এড়িয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্যাতনের দাবিটি নিষ্পত্তি করতে চান তাঁরা।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর