img

রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে খান কলমি শাক

প্রকাশিত :  ০৮:১৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে খান কলমি শাক

কলমি শাক একটি আঁশজাতীয় খাবার। পুষ্টি গুণে কলমি শাক অনন্য। এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে খাদ্য উপাদান। এই শাক দামে সস্তা ও সহজলভ্য, কিন্তু পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। তবে কলমি শাক গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত সাধারণ শাক হলেও আজকাল শহরের মানুষরাও খেতে পছন্দ। মহান আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার প্রত্যেকটি শাক সবজি, ফল মূল, খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে মানবজাতির জন্য উপকারী সব গুণাগুণ দিয়ে ভরিয়ে রেখেছেন। যেমনই একটি সবজি কলমি শাক।

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কলমি শাক রাখলে সরাসরি অনেক উপকার পাওয়া যেতে পারে। কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লোহা ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। হেলেঞ্চা, থানকুনি, কচু ও পুঁইশাকের চেয়ে কলমিশাকে থায়ামিন অর্থাৎ ভিটামিন বি-১ রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণ।

১০০ গ্রাম কলমিশাকে ১ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ, ৯ দশমিক ৪ গ্রাম শর্করা, শূন্য দশমিক ১৪ মিলি গ্রাম ভিটামিন বি-১, শূন্য দশমিক ৪ মিলি গ্রাম ভিটামিন বি-২ অর্থাৎ রিবোফ্লোবিন, ৪২ মিলি গ্রাম ভিটামিন-সি, ১০৭ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩ দশমিক ৯ মিলি গ্রাম লোহা, ১০ হাজার ৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন ও খাদ্য শক্তি রয়েছে ৪৬ কিলোক্যালরি।

এছাড়া এই শাকটি খেলে মুক্তি মিলবে বেশ কয়েকটি রোগ থেকে। চলুন জেনে নেই।

রক্ত শূন্যতায়

কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ থাকায় রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য খুব উপকারী। সারা দেহে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখতে এই শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কোষ্ঠকাঠিন্যে

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে কলমি শাকে উপকার মিলতে পারে। কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।

সর্দি কাশি সারাতে

কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলে খেতে পারেন। তবে খুব বেশি সময় ধরে রান্না না করাই ভালো।

বসন্ত রোগে

কলমি শাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 

দাঁত ও মাড়ি মজবুত রাখতে

কলমি শাকে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি থাকায় আমাদের দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করে।

এন্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে

কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।

লিভার ভালো রাখে

লিভার ভালো রাখতে কলমি শাক বেশ কার্যকরী। এটি জন্ডিসের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কলমি শাকে থাকা কিছু উপাদান লিভার থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।

জ্বালাপোড়া কমায়

জ্বালাপোড়া করলে কলমির রস করে ৩ বা ৪ চামচ পরিমাণ ৩ সপ্তাহ খেলে ওই জ্বালা কমে যায়। আর হাত-পা বা শরীর জ্বালা করলে কলমি শাকের রসের সঙ্গে একটু দুধ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

হার্ট ভালো রাখে

কলমি শাকে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। সেইসঙ্গে এই শাকে আরও থাকে প্রচুর ভিটামিন সি। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে এই দুই উপাদান। যে কারণে দূরে থাকে হৃদরোগের মতো অসুখ। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত কলমি শাক খান তাদের হার্টের রক্তনালির ভেতর চর্বি বা ময়লা জমে না। হার্ট ভালো রাখতে এই শাক নিয়মিত খেতে পারেন।

ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে

ক্যান্সারের মতো মরণঘাতি রোগকে দূরে রাখতেও কাজ করে কলমি শাক। এই শাকে থাকে ১৩ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে সব ধরনের ফ্রি র্যাডিকেলস বের করে দেয়। ফলে শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির আশঙ্কা কমে। তাই ক্যান্সারের প্রতিরোধে এই শাক খেতে হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত অসুখ থেকে দূরে থাকা যায়। এই কাজে আপনাকে সাহায্য পারে কলমি শাক। এই শাকে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে কাজ করে এই ভিটামিন। যে কারণে সংক্রামক অসুখ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।


img

বৃষ্টির দিনে বিপদ এড়াতে খেয়াল রাখুন

প্রকাশিত :  ১৬:০৫, ০৯ জুলাই ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৬:৩১, ০৯ জুলাই ২০২৫

বৃষ্টি-বাদলের সময় টানা বর্ষণে পানির উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে ঘরবাড়িতে পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর ফলে নানান বিপদও সামনে আসে। তাই নিরাপদ থাকতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

জেনে নেওয়া যাক বৃষ্টির দিনে যেসব বিষয়কে নজরে রাখতে হবে:

 জানালা ও দরজা

বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে নিশ্চিত করুন সব জানালা ও দরজা বন্ধ আছে। এতে ঘরে পানি প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং ঘরের ভেতর পানি জমা থেকে রক্ষা করবে। বিশেষ করে শোবার ঘরের জানালাগুলোকে পর্যবেক্ষণ করুন, কারণ সেখান থেকে পানি ঢুকে বিছানা নষ্ট করে দিতে পারে। দরজাগুলো সঠিকভাবে বন্ধ হচ্ছে কিনা তাও দেখুন।

বিদ্যুৎ সরঞ্জাম

বৃষ্টির দিনে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে বিদ্যুতের যন্ত্রপাতিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, যেমন টিভি, কম্পিউটার এবং ওয়াশিং মেশিনের প্লাগ খুলে রাখুন। ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখাই শ্রেয়। এটি আপনার ঘর ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ছাদের অবস্থা

বৃষ্টির কারণে ছাদে পানি জমলে তা গৃহের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। ছাদের গর্ত ও ফাটলগুলো ঠিক করে নিন এবং নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করুন। বৃষ্টির পরে ছাদে পানি জমে গেলে তা দ্রুত নিষ্কাশন করার ব্যবস্থা করুন, যাতে ছাদের কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা

নিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রবাহ বন্ধ থাকলে বৃষ্টির পানি দ্রুত জমতে পারে। তাই খেয়াল রাখুন, পানি নিষ্কাশনের জন্য যে নল বা পাইপগুলো আছে, সেগুলো পরিষ্কার এবং ব্লকিং মুক্ত আছে কিনা। নিয়মিতভাবে এই পাইপগুলো পরীক্ষা করুন, যাতে বৃষ্টির সময়ে পানি জমে না যায়।

 ফ্লোরের পরিচ্ছন্নতা

বৃষ্টির কারণে মেঝে পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই নিশ্চিত করুন, ফ্লোরে কোনো আবর্জনা, মাটির গাদা বা পানি জমে নেই, যাতে পড়ে গিয়ে আঘাত না লাগে। বিশেষ করে বাড়িতে ছোট বাচ্চা বা প্রবীণ সদস্য থাকলে তাদের নিরাপত্তার দিকে বেশি নজর দিন। পিচ্ছিল জায়গা দ্রুত মুছে ফেলুন।

ফায়ার এলার্ম

বৃষ্টির কারণে বৈদ্যুতিক সমস্যা সৃষ্টি হলে ফায়ার এলার্ম সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিন। নিয়মিতভাবে এটি পরীক্ষা করা উচিত। যদি কোন ফায়ার এলার্ম বা সিকিউরিটি সিস্টেমে সমস্যা থাকে, তাহলে তা দ্রুত মেরামত করুন।

জরুরি কিট

বৃষ্টির দিনে বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্য একটি জরুরি কিট প্রস্তুত রাখুন। এতে ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক, গ্লুকোজ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখতে হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে এই কিট সাহায্য করবে এবং আপনাকে দ্রুত সাহায্য পাওয়ার সুযোগ দেবে।

খাবারের সংরক্ষণ

পানি জমলে খাদ্যপণ্যের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তাই খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন এবং দরজায় বা জানালার পাশে খাবারের প্যাকেট না রাখার চেষ্টা করুন। বৃষ্টির দিনে খাদ্যদ্রব্যের সংরক্ষণ নিয়ে সতর্ক থাকুন, বিশেষ করে কাঁচা পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে।

গাছপালা

বৃষ্টির দিনে গাছের ডাল ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গাছপালা নিয়মিত তদারকি করুন এবং বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা গাছগুলো কেটে ফেলুন। বাড়ির আশেপাশের গাছপালা থেকে পানি পড়ে গিয়ে বাড়ির পরিবেশ নষ্ট না হয়, তা লক্ষ্য রাখুন।

 নিরাপত্তা

নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। একা বের হওয়ার প্রয়োজন হলে নিরাপদ পন্থা অবলম্বন করুন এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে বাইরে বের হওয়ার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে পরিকল্পনা করুন।