img

প্রিয় ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

প্রকাশিত :  ১৯:৪৯, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

প্রিয় ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার,

প্রিয় ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার ,

আমি করিম চাচা, একজন সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। আজ আমি নিজের অসহায়ত্ব থেকে এই চিঠি লিখতে বসেছি। বয়স হয়েছে, হাড়ের জোরও কমে এসেছে, কিন্তু বাজারের দিকে তাকালে মনে হয়, এই বয়সে আবার নতুন যুদ্ধ করতে হবে—জীবনধারণের জন্য। হ্যাঁ, আমি বলছি সেই ভয়াবহ যুদ্ধের কথা, যে যুদ্ধ আমরা প্রতিদিন লড়ছি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে।

আমরা নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত—সত্যি বলতে গেলে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের ব্যয় মাপার ক্ষমতা সীমিত। কিন্তু আজ বাজারে গেলে মনে হয়, সেই সীমা কোথায় হারিয়ে গেল? এক কেজি চাল কিনতে গেলে বুক কেঁপে ওঠে, একটু সবজি কিনতে গেলে শঙ্কিত হই—পরের বেলায় খাবারটা হবে তো? পরিবারে যারা আছেন, তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে অজান্তেই চোখে পানি এসে যায়। কীভাবে বলি যে, সব কিছুই হাতের বাইরে চলে গেছে?

স্যার, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, শুধু আমাদের ঘরে অন্নের অভাব হচ্ছে না। আজ আমাদের পকেট ফাঁকা, মনের দুঃখ সীমাহীন। আমরা যারা প্রতিদিনের খাবার সংগ্রহ করতে কষ্ট করি, সেই আমরা আজ একবেলা খাবার কমিয়ে জীবন চালাতে বাধ্য হচ্ছি। যারা একসময় শাক-সবজি দিয়ে একটু পুষ্টি পেতো, তারাও আজ শুধু ভাত-লবণেই সন্তুষ্ট। কি এই জীবনের নাম?

আমি তো শ্রমজীবী মানুষ। দিনশেষে যা উপার্জন করি, তাতে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাই। কিন্তু আজ যেটা কষ্টকর, সেটা হচ্ছে, আমার সন্তানদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার সামর্থ্যও আর নেই। ওরা শীতকালে শীত নিবারণের উপায় খুঁজে পায় না, চিকিৎসার জন্য দোরগোড়ায় যেতেও সাহস পাই না।

অথচ বাজারে যখন যাই, দেখি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম আকাশে তুলছে। তারা নিজেদের মুনাফার জন্য আমাদের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা সবকিছুকে হাস্যকর করে তুলছে। কোথায় আছে সরকার, কোথায় আছে প্রশাসন? তারা কেন এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না?

দয়া করে আমাদের আরেকটু সময় দিন, আমাদের ওপর আরেকটু নজর দিন। আমরা আপনাদের কাছে দয়া চাই না, চাই শুধু সঠিক বিচার ও ন্যায়বিচার। বাজার মনিটরিং করুন, মধ্যস্বত্বভোগীদের দমন করুন, সরবরাহের চেইন ঠিক রাখুন। আমরা শুধু একটু সচ্ছল জীবন চাই—যে জীবনে দু\'বেলা খাবার থাকবে, সন্তানের জন্য পুষ্টি থাকবে, আর আমাদের মুখে একটু হাসি থাকবে।

আল্লাহ আমাদের দেখছেন, এই নীরব দুর্যোগের দিনে আমরা যে কীভাবে টিকে আছি, সেটাও তিনি জানেন। কিন্তু আমাদের আশা আপনাদের কাছেই, আপনি যদি আমাদের কথা না শোনেন, যদি আমাদের দুর্দশার সমাধান না করেন, তাহলে এই দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ধ্বংসের পথে ধাবিত হবে।

এই চিঠি দিয়ে আমি শুধু আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আমাদের কথা শুনুন, আমাদের জীবন থেকে ব্যথা দূর করুন, আমাদের সচ্ছল জীবনের পথে ফিরিয়ে আনুন।


ইতি,

করিম চাচা

একজন অসহায় শ্রমজীবী

img

রাতে ১ মিনিট ‘ব্ল্যাকআউট’ থাকবে দেশ

প্রকাশিত :  ০৬:২২, ২৫ মার্চ ২০২৫

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের স্মরণে এক মিনিট অন্ধকারে (ব্ল্যাক আউট) থাকবে সারা দেশ। আজ মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি স্থাপনাসমূহ এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের রাতটি ছিল ভয়াবহতম একটি রাত। মানব ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যায় সেই কালরাতে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী মেতেছিল উল্লাসে। ঢাকা শহর হয়েছিল ধ্বংসস্তূপ। এত বছর পেরিয়ে গেলেও এমন আতঙ্কের রাত আর আসেনি ২৫ মার্চে।

অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে বাঙালির জাতীয়তাবাদী, স্বাধিকার আন্দোলনকে সশস্ত্র হামলার মাধ্যমে দমন করতে চেয়েছিল তারা।

এ গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের আদেশে পরিচালিত, যা ১৯৭০-এর নভেম্বরে সংঘটিত ‘অপারেশন ব্লিটজ’-এর পরবর্তী সামরিক আক্রমণ।

২৫ মার্চে পাকিস্তানি সামরিক অপারেশনের আসল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সব বড় বড় শহর দখল করে নেওয়া। এ ছাড়া রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।

দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকাসহ সারা দেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। আমি দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করি সেই কালরাতের সব শহীদকে। নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞে জাতি আজও শোকাহত।