img

‘আমার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই সাইফুজ্জামানের ৭২টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে’

প্রকাশিত :  ০৭:৪৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৫৭, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

‘আমার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই সাইফুজ্জামানের ৭২টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে’

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একের পর এক সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলছে। এমনই একজন মন্ত্রী হলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। সামান্য সরকারি বেতন পেয়েও ভিনদেশে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিষয়ে মুখ খুলেছেন। পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস আসন থেকে তিনি টানা দুবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আপসানা বেগম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। শেখ হাসিনা সরকার যেভাবে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছেন তার প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রোপার্টির সন্ধানের বিষয়সহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন আপসানা বেগম। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যের সম্পত্তির বিষয়ে তদন্তের জন্য দেশটির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠিও লিখেছেন আপসানা বেগম।

আপসানা বেগম সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রোপার্টির সন্ধান বিষয়ে বলেন, প্রথমেই বলব, আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব অবাক হয়েছি। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, আমাদের জানামতে যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়ও অনেক সম্পদ রয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর। আমার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই তাঁর (সাইফুজ্জামান) ৭২টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। তাই এ বিষয়ে নজর দিয়েছি। আমার অবস্থান হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারসহ যারাই দুর্নীতি করেছে, সব খতিয়ে দেখা উচিত এবং অনুসন্ধান করা উচিত। কারণ, বাংলাদেশ অনেক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের উচিত এটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রোপার্টির সন্ধান বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য আপনি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) কাছে চিঠি লিখেছেন। জবাব পেলেন?

জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমি ওদের কাছে অনুসন্ধান করার সহায়তা চেয়েছি। আমার জানামতে, মহাপরিচালকের কার্যালয় বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। টাওয়ার হ্যামলেটসে অনেক বাংলাদেশি আছেন। তাঁরাও চান এর সঠিক বিচার হোক।

সাইফুদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ অবৈধ সম্পদ যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন বলে শোনা যায়। এই সম্পদ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কীভাবে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা পেতে পারে?

উত্তরে আপসানা বেগম বলেন, মানি লন্ডারিং এবং সম্পত্তি চুরি করার বিষয়টা পুরো দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে দেয়। আমরা যারা তৃণমূল থেকে এসেছি, তাঁরা চাই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিকভাবে মাথা তুলে দাঁড়াক। কোনো সন্দেহ নেই এসব ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা দরকার হবে। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো... যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে আমি জানি, বাংলাদেশের অনেক মানুষ যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বে বাস করেন। অভিবাসীর সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে। আমাদের যুক্তরাজ্যের আলাদা একটা লিগ্যাসি আছে, যা আর কারও নেই। মহামারি কভিড দেখিয়ে দিয়ে গেছে যে বৈষম্যের কারণে কীভাবে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র আর দুর্বল মানুষেরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবকিছু ভেবে দেখলে আমি মনে করি, যুক্তরাজ্যের যে লিগ্যাসি, সেই দিক থেকে বাংলাদেশকে যুক্তরাজ্যে করা উচিত।

বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্রদের জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আপনি সমর্থন জানিয়েছেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এত দূরে থেকে কীভাবে আপনি ছাত্রদের আকুতি বুঝতে পারলেন?

প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যাপারে অনেকভাবেই অবগত ছিল। সংসদে অনেকে আমার মোশন উত্থাপনকে (একটি নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে পার্লামেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ) স্বাক্ষর করে সহমত জানিয়েছিলেন। ভালো দিক ছিল, জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই এতে সহমত জানিয়েছিল। তরুণেরা চায় বাংলাদেশের উন্নতি হোক। দেশে সুন্দর পরিবর্তন আসুক, যেন দেশে থেকে সুন্দরভাবে বাঁচা যায়। তাই সবাই এগিয়ে এসেছিল। দেশে মানবাধিকারের বিষয়টা জোরদার হোক, সেটা খুব করে উঠে এসেছিল তরুণ জেন-জির মাধ্যমে। তারা জনগণকে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল, যা বিরোধী দলগুলো পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি না থাকার কারণে করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আমাদের এ বিষয়গুলো ভাবা উচিত।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের তরুণ প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আপনি কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আপসানা বেগম বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবন এবং বিশ্বাস থেকে শেখা-সবকিছুতে সমবণ্টন, সবাইকে নিয়ে সুস্থ এবং নির্মল একটা সমাজ গড়া। বাংলাদেশের ছাত্ররা যা অর্জন করেছে, সেটা ঐতিহাসিক। এই অর্জনকে বিফল হতে দেওয়া যাবে না। বিগত সরকারের ব্যর্থতার কারণগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাইকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা উচিত। সাধারণ মানুষের আস্থা হারানোই বিগত সরকারের পতনের মূল কারণ বলে আমি মনে করি। এখন নতুনভাবে সবাই মিলে আবার সুন্দর করে গড়ে তুলবে, এটাই আশা করি।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

গার্ডিয়ানের নিবন্ধ

img

টিউলিপকে ডুবিয়েছে বাংলাদেশ-ব্রিটিশ রাজনীতির ‘আঁতাত’

প্রকাশিত :  ০৫:৩৯, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

টিউলিপ (সদ্য পদত্যাগ করা ব্রিটিশ ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক) এমন দুটি জগতের অংশীদার হয়ে উঠেছিলেন, যেখানে আলাদা নিয়মে খেলা চলে। এখন তার পরিবারের সুনাম বাংলাদেশ ও ব্রিটেন—উভয় জায়গায়ই কলঙ্কিত। আর তিনি কোনো জায়গাতেই সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না। দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এমন বক্তব্য তুলে ধরেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক ও সাংবাদিক সলিল ত্রিপাঠী। তার মতে, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে অদ্ভুতভাবে নীরব থেকেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

সলিল লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্রিটিশ ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। এ বিষয়টি সত্যিই অস্বাভাবিক। ড. ইউনূস বাংলাদেশে অর্থ পাচারকে ‘সরাসরি ডাকাতি’ বলে অভিহিত করে তা থেকে টিউলিপ সুবিধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এবং তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের সঙ্গে টিউলিপের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। বিপদে থাকা ব্রিটিশ ট্রেজারি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে। তিনি চীন সফরে যাওয়া সরকারি প্রতিনিধিদলে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন এবং মন্ত্রীদের আচরণবিধি নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে বিষয়টি তদন্তের জন্য তুলে দেন এবং অবশেষে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন। টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

চলতি মাসে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, টিউলিপ তার খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনের কেন্দ্রে একটি দুই-বেডরুমের ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন। টিউলিপ দাবি করেন, এই ফ্ল্যাটটি তিনি তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন। তবে ম্যাগনাসকে তিনি জানান, এই বাড়িটি যে একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর উপহার ছিল, তা তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন।

টিউলিপ ২০১৮ সাল পর্যন্ত হ্যাম্পস্টেডে তার ছোট বোনের নামে থাকা আরেকটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। এই ফ্ল্যাটটিও হাসিনা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরেক ব্যবসায়ী উপহার দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি ব্রিটিশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ীর ভাড়া করা বাড়িতে বসবাস করছেন। ২০১৫ সালে সিদ্দিক প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে জয়ের পর তিনি তার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান, বিশেষ করে ব্রিটিশ আওয়ামী লীগের বাংলাদেশি সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

টিউলিপ সিদ্দিককে ঘিরে ২০১৩ সালের একটি ছবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ছবিটিতে তাকে তার খালা হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা গেছে। ছবিটি বাংলাদেশে ১২ বিলিয়ন ডলারের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় তোলা। টিউলিপ দাবি করেন, এটি স্রেফ একটি পারিবারিক সফর এবং তিনি সেখানে গিয়েছিলেন পর্যটক হিসেবে। ম্যাগনাস তার ব্যাখ্যা মেনে নিয়েছেন। তবে এখন টিউলিপ বাংলাদেশের ওই চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি।

এদিকে, লরি ম্যাগনাস লন্ডনে টিউলিপের বাড়িগুলোর বিষয়েও কোনো নিয়ম ভঙ্গের প্রমাণ পাননি এবং লেনদেনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেননি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, তার কাছে তথ্য ছিল সীমিত এবং টিউলিপের পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট ভাবমূর্তি ঝুঁকি সম্পর্কে আরও সচেতন হতে পারতেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে চাইলে করতে পারেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, টিউলিপ পদত্যাগে বাধ্য হন।

সলিল ত্রিপাঠী আরও লেখেন, তবে হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে হয়তো বিষয়গুলো ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু গত বছর আগস্টে হাসিনার ক্রমবর্ধমান অজনপ্রিয় শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। হাসিনা সরকারের আমলে গুম, নিখোঁজ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে যায়। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের ওপর দমনপীড়ন চালানো হয়। ভিন্নমতাবলম্বী, মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়। হাসিনা তার পিতার খ্যাতি পুনঃস্থাপনে অনেক কাজ করলেও তার শাসনামলের এত বিরোধিতা সৃষ্টি হয় যে, তার পতনের পর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়ি আক্রমণ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তার ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়।

সলিল লেখেন, মুজিবের অসম্মানের জন্য হাসিনা অনেকাংশেই দায়ী। তিনি নিজেকে সারা বিশ্বের কাছে ধর্মীয় মৌলবাদ মোকাবিলায় দৃঢ় অবস্থানে থাকা একজন নেতা হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো একজন শক্তিশালী মিত্র পেয়েছিলেন। অন্যদিকে, টিউলিপ বহু জায়গায়, যেমন—সিরিয়া ও গাজায় মানবাধিকার নিয়ে সক্রিয়ভাবে কথা বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের দ্রুত অবনতি হওয়া মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অদ্ভুতভাবে নীরব থেকেছেন এবং বারবার বলেছেন যে তিনি কেবল ‘একজন ব্রিটিশ এমপি’। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে টিউলিপের সম্পর্কই তার রাজনৈতিক জীবনে বিপদ ডেকে আনে।

বাংলাদেশে রেজিম পরিবর্তনের সুযোগে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই প্রতিশোধ নিতে তাদের পূর্বসূরিদের বিরুদ্ধে মামলা এবং তদন্তের মাধ্যমে বিদ্বেষ চরিতার্থ করে থাকে। কিন্তু হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো (এবং টিউলিপ সম্পর্কে ওঠা প্রশ্নগুলো) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। রাজনীতিবিদদের অভিযোগ তোলার পেছনে যাই উদ্দেশ্য থাকুক না কেন, বাস্তবতা হলো—বিশ্বব্যাংক পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ বাতিল করেছিল বিশ্বাসযোগ্য দুর্নীতির অভিযোগের কারণে। এ ছাড়া হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা কর্মীদের দমন করার ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।