মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলতে আসছেন সাকিব, জানালেন বিসিবি নির্বাচক
প্রকাশিত :
০৮:০৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
এবার সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা নিয়ে তার ভক্তদের সুখবরই দিলো বিসিবি। মিরপুরে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলার কথা জানালেন বিসিবির নির্বাচক হান্নান সরকার।
ঘরের মাটিতে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন সাকিব। যদিও টাইগার এই অলরাউন্ডারের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়া গিয়েছিল আগেই। এবার বিসিবির তরফেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেল।
হান্নান সরকার নিজের ফেসবুকে সাকিবের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, সাকিব আল হাসান, আশা করছি মিরপুরে তার শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলবেন। এই ম্যাচের পর তার লাল বলের ক্রিকেট মিস করবে বিশ্ব ক্রিকেট। তুমি চিরকাল মনে থাকবে.... কিংবদন্তি। বরাবরের মত শুভ কামনা। সেই সঙ্গে লাভ ইমোজি জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
এর আগে বিসিবির একটি সূত্রে ঢাকা পোস্ট নিশ্চিত হয়েছিল, নিরাপত্তা ইস্যুতে আশ্বস্ত হয়ে বিদায়ী টেস্ট খেলতে ঢাকায় ফিরছেন সাকিব। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমেরিকা থেকে দেশে ফিরছেন তিনি। আগামী ২১ অক্টোবর থেকে ঘরের মাঠে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। প্রোটিয়া সিরিজ সামনে রেখে অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। সাকিবের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই ঘোষণা করা হতে পারে স্কোয়াড।
ভারত সিরিজ শেষ করেই আমেরিকায় উড়ে গিয়েছিলেন সাকিব। সেখানে অবশ্য টুর্নামেন্টে খেলা ঘিরেই ব্যস্ততা ছিল। এরই মধ্যে নীরবতা ভেঙে ফেসবুকে এক পোস্ট আলোড়ন তুলেছিল। আলোচিত সেই স্ট্যাটাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নীরব ভূমিকা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন সাকিব।
বিদায়ী টেস্ট খেলতে দেশে ফেরার কথা জানিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের সমর্থনও চেয়েছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। সাকিবের এমন পোস্টের পরপরই অনেকের ধারণা, দেশে ফেরা ও নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের একটা পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে সাকিবের।
সাকিবের দেশে আসা কিংবা খেলা শেষে দেশত্যাগ নিয়ে সম্প্রতি এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো থাকার কথা নয়। আমি যতটুকু জানি। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না।’
প্রকাশিত :
১২:০৪, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ সর্বশেষ আপডেট: ১৫:১৮, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের ঘরে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের তরুণরা। ফাইনালের বিগ স্টেজে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে।
আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়া। এর আগে যা করেছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবারে করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই।
১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনেই গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে।
১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে।
এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট।
এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।
ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই থামল বাংলাদেশইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।
৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি।
সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৭ রানে।
কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।