img

শ্রদ্ধায় ভালবাসায় পাঁচজন বিশিষ্ট সাংবাদিককে স্মরণ

প্রকাশিত :  ১০:৩৭, ২১ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:০৮, ২২ অক্টোবর ২০২৪

শ্রদ্ধায় ভালবাসায় পাঁচজন বিশিষ্ট সাংবাদিককে স্মরণ

সহকর্মীদের আবেগঘন স্মৃতিচারণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধায় ও ভালবাসায় ১৮ই অক্টোবর শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে স্মরণ করা হয় পাঁচজন বিশিষ্ট সাংবাদিককে। এঁরা হলেন ঊর্মি রহমান, গোলাম কাদের, কাদের মাহমুদ, গোলাম মুর্শিদ ও শাহীন জামান। প্রত্যেকেই ছিলেন বিবিসিখ্যাত সাংবাদিক। বিবিসি বাংলা বিভাগে কাজ করে সুনাম অর্জন করেন তাঁরা। একইসঙ্গে লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনমত ও নতুন দিনের প্রকাশনায়ও তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সহকর্মীদের স্মৃতিকথায় উঠে আসে বিলেতে বাংলা ভাষার চর্চা ও বিকাশে এবং বাংলা সাহিত্য ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে তাঁদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকার কথা। এ পাঁচজন স্বনামধন্য সাংবাদিক সম্প্রতি অল্প সময়ের ব্যবধানে মৃত্যুবরণ করেন।

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের। সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদের সঞ্চালনায় প্রয়াত সাংবাদিকদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের স্মৃতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মুহিব চৌধুরী, কামাল আহমেদ, দানেশ আহমেদ, খুররম মতিন, নবাব উদ্দিন, জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার, মোস্তফা কামাল মিলন, শামসুল আলম লিটন, মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, তারেক চৌধুরী, জাহেদী ক্যারোল প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে প্রয়াত পাঁচজন সাংবাদিকের কর্মনিষ্ঠা, বন্ধুত্ব, সহকর্মীদের প্রতি গভীর আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ এবং বাংলা ভাষার প্রতি তাঁদের মমতার কথা। এ সময় ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

বিবিসি বাংলার সাবেক সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেন, মূলত পাঁচজন নয়, সৈয়দ আফসার উদ্দিনসহ বিবিসি বাংলার ছয়জন প্রয়াত সাংবাদিকের মধ্যে একটি বিষয়ে অভিন্ন মিল ছিল, আর তা হলো— ব্রিটেনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা ও প্রসারে তাঁরা প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। গোলাম মুরশিদ তাঁর সাহিত্য কর্মের মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। শাহীন জামান শিল্পচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সাপ্তাহিক জনমতের সাবেক সম্পাদক নবাব উদ্দিন বলেন, গোলাম মুরশিদ বাংলার পন্ডিত ছিলেন। মালবারি স্কুলের বাংলা বিভাগের প্রধান থাকাকালে তিনি মালবারি গুচ্ছ প্রকাশ করেন যা বাংলা শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাপ্তাহিক জনমত এ মালবারি গুচ্ছ প্রকাশের দায়িত্ব পালন করে।বইগুলো বাঙালির জীবন কাহিনী নিয়ে সরল ভাষায় রচিত। একইসঙ্গে তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে অভিধান রচনা করেন। তিনি কালাপানির হাতছানি নামে একটি বই লেখেন যা বিতর্কের সৃষ্টি করে।

ঊর্মি রহমান সম্পর্কে নবাব উদ্দিন বলেন, তাঁর সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক ছিল।কাদের মাহমুদ সম্পর্কে তিনি বলেন, জনমতে থাকাকালে কাদের মাহমুদ সাহিত্য পাতা চালু করে লন্ডনে বাংলা সাহিত্য চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি পঞ্চাশটির মতো বই রচনা করেন। এছাড়াও তাঁর রচিত গানের সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক।


সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী প্রয়াত সাংবাদিক গোলাম কাদের সম্পর্কে বলেন, তাঁর প্রতি বিলেতের বাংলা গণমাধ্যমকর্মীদের অনেক ঋণ রয়েছে। বাংলা কাগজগুলোতে বাংলা ফন্ট ব্যবহারের কাজটি তিনি খুব সহজ করে দেন। তিনি আমাদেরকে শিখিয়ে দেন কীভাবে সহজে বাংলা ফন্ট বিজয় ব্যবহার করা যায়।

ঊর্মি রহমান সম্পর্কে মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ খুব নিবিড় ছিল। ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত আন্তরিক ও সদালাপী মানুষ ছিলেন তিনি। পনের বছর আগে প্রেস ক্লাবের একটি নির্বাচনে তিনি নির্বাচন কমিশনার হয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। প্রেস ক্লাবের যে ক'জন সদস্য নির্বাচন কমিশনার হয়েছিলেন তিনি তাঁদের মধ্যে একজন। একটি টেক্সট মেসেজে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে তিনি তাঁর হতাশার কথা উল্লেখ করে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের প্রতি সরকার আরো বেশী শ্রদ্ধাশীল হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

সভায় কবিতা পাঠ করেন ঊর্মি মাযহার ও সারওয়ার-ই আলম। শেষে পাঁচজন সাংবাদিকের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

টাওয়ার হ্যামলেটসে চালু হলো সাঁতার শেখার স্কুল ‘বি ওয়েল—সুইম ওয়েল’

প্রকাশিত :  ১৯:০৭, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইল এন্ড পার্ক লেজার সেন্টারে কাউন্সিলের লেজার সার্ভিসেস ‘বি ওয়েল’ ৪ ডিসেম্বর তাদের নতুন সাঁতার শিখন স্কুল ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’ চালু করেছে। এই সুইম স্কুলের লক্ষ্য হল বাসিন্দাদের সাঁতারের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী ও নিরাপদ করে তোলা।

সুইম ইংল্যান্ডের লার্ন টু সুইম ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করে ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’। এই ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে ইংল্যান্ডের জাতীয় সাঁতার প্রশিক্ষণ কাঠামো। এতে অন্তর্ভুক্তঃ
— দক্ষ ও সদ্য প্রশিক্ষিত প্রশিক্ষক।
— ছোট ছোট ক্লাস, যাতে মনোযোগ ও নির্দেশনায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব।
— সাঁতারের প্রতিটি ধাপের জন্য নির্ধারিত ক্লাস, বিশেষ করে বিশেষ শিক্ষা চাহিদা ও প্রতিবন্ধী (সেন্ড) শিক্ষার্থীদের জন্য সুনির্দিষ্ট ক্লাসের আয়োজন
— প্রতিটি ধাপের স্পষ্ট অগ্রগতি, যা একটি কাঠামোবদ্ধ শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত করে।
— প্রতিটি মাইলফলক উদযাপনে অফিসিয়াল সার্টিফিকেট।

৪ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুইম ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি জেমস প্যারামোর টাওয়ার হ্যামলেটসের সঙ্গে নতুন এই অংশীদারিত্ব এবং সাঁতারকে জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হিসেবে গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অক্টোবরে, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর সঙ্গে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয় এই এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সুইম স্কুলের জন্য নতুন নাম ও মাসকট বাছাই করা হয়।

মে ফ্লাওয়ার প্রাইমারি স্কুলের ইনায়াহ রহমান ডিজাইন করেছে “বাবলস দ্য বি ওয়েল ডাক,” যা বি ওয়েল সুইম স্কুলের অফিসিয়াল মাসকট হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অপরদিকে, ওসমানী প্রাইমারি স্কুলের মুসা হোসেন তৈরি করে সুইম নিরাপত্তা সঙ্গী “অক্টোসেফ,” যা শিশুদের প্রয়োজনীয় সাঁতার নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করবে।

প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও তাদের স্কুলের প্রতিনিধিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের সৃষ্টিশীলতার জন্য পুরস্কৃত হন।