ঘূর্ণিঝড় দানায় বিপর্যস্ত ওড়িশা, বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবের খবর
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১১টা ১২ মিনিটে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরু করে। ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যবর্তী স্থান হয়ে স্থলভাগ তছনছ করছে ঘূর্ণিঝড়টি। প্রায় ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শেষে এটির শেষ ভাগ ধীরে ধীরে ওড়িশা অতিক্রম করে চলেছে। এদিকে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বেলা বাড়ার সঙ্গে ওড়িশার বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, বর্তমানে কোথাও কোথাও ১১০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। এতে বিপর্যস্ত ওড়িশার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিশেষ করে ধামারার একাধিক এলাকায় গাছ উপড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে দিঘার মেরিন ড্রাইভ। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে ওড়িশার একাধিক জেলায়। অবশ্য ভালো খবর হচ্ছে, ইতিমধ্যেই যোগাযোগ স্বাভাবিক করেতে উপড়ে পড়া গাছ কাটার কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে ভুবনেশ্বরে বসে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। ল্যান্ডফল শেষে বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছেন তিনি। অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে বসে রাতভর পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, কলকাতায় এখনও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে বিক্ষিপ্তভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে, যা অন্যান্য সাধারণ বৃষ্টির মতোই অনুভূত হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কলকাতায় ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবের আশঙ্কা কম। দানা আরও এগিয়ে এলে এর প্রভাবে কলকাতায় হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এর আগে বলা হয়েছিল, দানার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে বিপুল জলোচ্ছ্বাস দেখা যাবে। ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৯ ফুট থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। সেই অনুযায়ী উপকূলের বাসিন্দাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। চার জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উপকূলের লাখো মানুষকে।
এদিকে বাংলাদেশেও ঝড়টির তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। শুক্রবার সকালেই দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি থেমে যায়। চালু করা হয়েছে লঞ্চ চলাচলও। তবু সতর্কতার অংশ হিসেবে মাছ ধরা ট্রলারকে গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।