ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন

img

শেখ হাসিনার দোসররা ব্যাংকিং খাত থেকে লুট করেছেন ১৭ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত :  ১১:৪১, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৪৪, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

শেখ হাসিনার দোসররা ব্যাংকিং খাত থেকে লুট করেছেন ১৭ বিলিয়ন ডলার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর ধনকুবেররা দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার লুট করেছেন । তাদের এসব কাজে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ৫ আগস্টে গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হন আহসান এইচ মনসুর। সংবাদমাধ্যমটির এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালকরা নেতৃস্থানীয় ব্যাংকগুলোকে জোরপূর্বক দখলে সহায়তা করেছিলেন।

মনসুর বলেন, ব্যাংক দখলের পর পর আনুমানিক ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এজন্য নতুন শেয়ারহোল্ডারদের ঋণ দেওয়া এবং আমদানি চালান স্ফীত করার মতো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটিই সবচেয়ে বড়, সর্বোচ্চ ব্যাংক লুটপাট। এভাবে এমন পরিসরে কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। এর পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। এ ছাড়া গোয়েন্দারা (ব্যাংকের সাবেক সিইওদের) মাথায় বন্দুক না রাখলে এটি ঘটতে পারে না।

গভর্নর বলেন, এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার সহযোগীরা সংস্থার সহযোগিতায় বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ন্যূনতম হিসাবে ১০ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের নামে ঋণ দিয়ে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

সাইফুল আলমের পক্ষে ল ফার্ম কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গভর্নর যে অভিযোগ করেছেন তার কোনো সত্যতা নেই।

তারা জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত প্রচারণা যথাযথ প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিগুলোকেও সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ইতোমধ্যে বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়েছে। অর্থনীতিতে গ্রুপের রেকর্ড এবং অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নরের অভিযোগগুলো আশ্চর্যজনক এবং অযৌক্তিক।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সংস্থাটির বক্তব্য জানতে চেষ্টা করা হলে তারা তাতে সাড়া দেননি।

গত মাসে সংবাদমাধ্যমটিকে আইএমএফের সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, শেখ হাসিনার মিত্রদের বৈদেশিক সম্পদের তদন্তের জন্য যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তার শাসনামলে নেতৃস্থানীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বোর্ডের সদস্যদের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদের বাড়ি থেকে তুলে হোটেলসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান এবং বন্দুকের মুখে ব্যাংকের সমস্ত শেয়ার এস আলমের কাছে বিক্রি করতে এবং তাদের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। একের পর এক ব্যাংকে তারা এটি করেছেন।

একটি ব্যাংকের সাবেক সিইও এফটিকে বলেন, জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের অংশ হিসেবে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। দেশের অন্যতম বড় ঋণদাতা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক সিইও মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি তৎকালীন সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাপে পড়েছিলেন।

উল্লেখ্য, গত এক দশকে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকিং খাতে বৈচিত্র্য এনেছে। গ্রুপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ ৭টি ব্যাংকে তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।


img

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে অভিমত চেয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

প্রকাশিত :  ০৫:৩১, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৫:৫৩, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বদলীয় সংলাপের পরবর্তী কর্মপন্থা হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজনের কাছ থেকে অভিমত নেওয়া হচ্ছে।

আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছেন, আপনাদের সুচিন্তিত অভিমত চিঠি মারফত পাঠাতে পারেন- ‘মাহফুজ আলম, উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়’ এই ঠিকানায়। আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চিঠি মারফত আপনাদের অভিমত জানাতে পারবেন। অভিমতগুলো পর্যালোচনা করে একটি সংশোধিত ও সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জনগণের উপস্থিতিতে তা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, গণতন্ত্র মঞ্চ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আরও আলোচনা হবে। কাজটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য কমিটিও গঠন করা হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে এ বিষয়ে দ্রুত একটি কর্মকৌশল ঠিক করা হবে।

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। সবাই বলেছেন, এ ধরনের একটা ঘোষণাপত্র করার দরকার আছে। তবে এখানে অনেক সাজেশন (পরামর্শ) এসেছে। মোটাদাগে হলো ঘোষণাপত্রে সবার অবদান বলতে হবে, ধারাবাহিকতা উল্লেখ করতে হবে। ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক বা আইনি প্রকৃতি কী হবে, সেটা স্পষ্ট করতে হবে।

তিনি বলেন, এটার জন্য যতটা সময় লাগা প্রয়োজন, ততটা সময় নেওয়া যেতে পারে। তবে অযথা কালবিলম্ব বা সময়ক্ষেপণ যেন না হয়। সবাই একমত পোষণ করেছে, সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে আরও নিবিড় আলোচনার মাধ্যমে এ ধরনের ঘোষণাপত্র হওয়া উচিত।

সবাই এই প্রক্রিয়ায় সফল হওয়ার আশাবাদ জানিয়েছেন উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সবাই একত্রে যেভাবে ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি, তেমনি সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে পারব।

ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনোরকম দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। শুধু কী পদ্ধতিতে এটা করা হবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন রকম মতামত এসেছে। সব মতামতকে আমরা স্বাগত জানাই। কোথাও আমরা অনৈক্যর সুর দেখি না, বরং সবাই বলেছেন এই ঘোষণাপত্রে যেন সবার মালিকানা থাকে।


জাতীয় এর আরও খবর