কানাডার হোটেলে শ্রীমঙ্গলের সাবেক ব্যাংকারের রহস্যজনক মৃত্যু
স্থানীয় পুলিশের ওয়েবসাইটে মৃত্যু সম্পর্কে কোন তথ্য নেই !
সংগ্রাম দত্ত: কানাডার সাসস্কাচিয়েন অঙ্গরাজ্যের সাসস্কাটন শহরের হেরিটেজ ইন হোটেল এন্ড কনভেনশন সেন্টারের এক নারী কর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
উন্নত দেশে ঘটনার ১৫ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এ যাবৎ কানাডার সাসস্কাটন পুলিশ সার্ভিস তাদের ওয়েবসাইটে পুঙ্খানুপু রূপে তদন্তক্রমে রহস্যজনক মৃত্যু সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ করে নি জানা গেছে।
গত ১৫ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে কানাডার সাসস্কাটন শহরে। উপরোল্লেখিত হোটেলের নিচ থেকে সাসস্কাটন পুলিশ সার্ভিস শ্রীমঙ্গলের সাবেক ব্যাংকার নন্দিতা ভট্টাচার্য মুনমুন এর লাশ উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে যে, বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরের পূর্বাশা আবাসিক এলাকার সাবেক কমিশনার বলাই ভট্টাচার্যের তৃতীয় সন্তান অনুপ ভট্টাচার্যের স্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এর শ্রীমঙ্গল শাখায় একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০২২ সালে জুন মাসের দিকে সপরিবারে উন্নত জীবন যাপনের লক্ষ্যে কানাডার সাসস্কাচিয়েন অঙ্গরাজ্যের সাসস্কাটন শহরে অভিবাসন নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়ই কর্মজীবী ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নন্দিতা ভট্টাচার্য মুনমুন সাসকাটন শহরের হেরিটেজ ইন হোটেল এন্ড কনভেনশন সেন্টারে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন অনুপ ভট্টাচার্য তাঁর স্ত্রীকে সকালে গাড়ি করে নিয়ে পৌঁছে দেন। বিকেল চারটার দিকে তিনি হোটেল থেকে বাসায় নিয়ে আসার জন্য সেখানে যান। প্রায় সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাঁকে মোবাইলে বারবার কল দেওয়ার পর হোটেল থেকে পুলিশ অফিসার তাঁর স্ত্রীর মোবাইল নিয়ে এসে তাঁকে দিয়ে বলেন যে তাঁর স্ত্রী আর নেই। কিন্তু কখন, কিভাবে ছাদের উপরে গিয়ে পড়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন তা' পুলিশ জানাতে পারেনি। কোন সাক্ষী নেই, সিসিটিভি ফুটেজ নেই ও তাঁর পার্সে থাকা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডগুলোও নেই।
ঘটনার দিন ষ্টোর রুম পর্যন্ত তাঁকে ( মুনমুন) যেতে সিসিটিভি ফুটে গিয়ে দেখা গেছে। এরপর আর দেখা যায়নি। এমনকি ছাদে গিয়ে নিচে পড়া পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। ছয়তলা বিশিষ্ট হোটেলটির ছাদে গিয়ে উপর থেকে পড়ে গিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জানা গেছে যে, কানাডা বা পাশ্চাত্য দেশের আইন অনুযায়ী হোটেলের ছাদে উঠার কোন আইন নেই। পুরো হোটেল সিসিটিভির আওতাধীন ও সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ফুটেজ মনিটরিং করা পলিসি রয়েছে । ছাদে উঠার চাবিও নাকি মেনটেনেন্স ডিপার্টমেন্টের কাছে থাকে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন জাগে যে, তিনি কিভাবে, কার কাছ থেকে চাবি নিয়ে গিয়ে ছাদের উপর থেকে পরে মৃত্যুবরণ করলেন । ফলে অনেকের কাছেই ঘটনাটির পিছনে গভীর , অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন।