ব্ল্যাকমেইল করে ২০২৪ সালে জাপাকে নির্বাচনে এনেছিল হাসিনা সরকার : জিএম কাদের
প্রকাশিত :
০৮:৫৬, ০১ নভেম্বর ২০২৪
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের অভিযোগ করে বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) শেখ হাসিনা সরকার ব্ল্যাকমেইল করে নির্বাচনে এনেছিলেন।
আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বনানী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে কাকরাইল জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এই সংবাদ সম্মেলনে ডাকা হয়। তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে, আমরা আওয়ামী লীগের দোসর, এসবের অপবাদের সত্যতা নেই, এর পেছনে ষড়যন্ত্র চলছে, এইসবের মাঝে কিছু বুদ্ধিজীবী জড়িত।
জিএম কাদের বলেন, আমাদেরকে বলা হয় আওয়ামী লীগের দোসর? কীভাবে ২০০৮ সালে নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। সেই শেখ হাসিনার সরকারে আমি মন্ত্রী ছিলাম। তাই বলে আমরা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও অন্যায়ের ভাগিদার হব কেন? সেই সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী থাকাকালে হজযাত্রীদের খারাপ বিমানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার প্রতিবাদে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, তখন এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে আমি যে সঠিক ছিলাম তা উঠে এসেছিল। যার কারণে আমাকে পদত্যাগ করতে দেয়নি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিতি ছিলেন- জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও স্ত্রী শেরিফা কাদের প্রমুখ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে গড়তে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব। আমরা সকল দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। আন্দোলনরত যে দলগুলো ছিলাম, একসঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা চাই সব দলকে নিয়ে এমন একটি সরকার গঠন করতে যাতে মানুষ তাদের মতামত রাখতে এবং সবাই মিলে কাজ করতে পারবে।’
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। এর আগে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির একক আন্দোলন সফল হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দল ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নেমে এসেছিল বলে আমরা আন্দোলনকে সফল করতে পেরেছি। লাখো কোটি মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ঠিক সেভাবে বিএনপি একা দেশ গড়তে পারবে না। দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে জাতিকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট মাসে সবাই যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সেভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ঐক্যবদ্ধের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বিএনপিকে।’
তিনি বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে রকম ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করে সমাজের ব্যালেন্স নষ্ট করেছিল। আমরা চাই দেশকে পুনর্গঠন করতে। অনেক মানুষ আছেন যারা রাজনীতিতে জড়িত নন বা জড়াতে ইচ্ছুক না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করতে, মতামত রাখতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে চান। তাদের আমরা উচ্চকক্ষে স্থান দিতে পারি- যাতে তাদের মতামত জানতে পারি, যেন তারা ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করা হলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে শহীদদের স্মরণে সেসব স্থাপনার নামকরণ করা হবে। দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক ১০ জেলার নেতাদেরে রাষ্ট্রসংস্কারে দলের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। এতে সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিএনপির মানবাধিকার কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুল।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।