img

শেখ পরিবারের কারোরই রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই: তাজকন্যা শারমিন

প্রকাশিত :  ০৯:১১, ০১ নভেম্বর ২০২৪

শেখ পরিবারের কারোরই রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই: তাজকন্যা শারমিন

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে শারমিন আহমদ ।  তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশে মাফিয়া লীগে পরিণত হয়েছিল। শেখ হাসিনা বা তার পরিবারের কারও আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই। শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ নেতৃত্বে থাকা দলের নেতাদের বিচারের দাবিও করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। 

শারমিন আহমদ বলেন, মাফিয়াতন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের দল থেকে বহিষ্কার করে, পরিচ্ছন্ন কারোর হাতে নেতৃত্ব দিলে এক বা দুই যুগ পরে আওয়ামী লীগ আবার দেশে রাজনীতির মাঠে ফিরে আসতে পারে। তবে, আপাতত এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনার পর শারমিন আহমদের মা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগের হাল ধরে বিলুপ্তির হাত থেকে দলটিকে রক্ষা করেন। এ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে শারমিন আহমদ বলেন, ‘আমার মা (১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর) দলের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু পররবর্তীতে সে দলটি হাইজ্যাক হয়ে গেল এবং একটি পরিবারের হাতে বন্দি হয়ে গেল। এবারের প্রেক্ষাপটটি কিন্তু আরও ভিন্ন। কারণ, গণঅভ্যুত্থানের সময় এবার এ দলটির হাতে এত এত তরুণের মৃত্যু, জগণের মৃত্যু, মানুষের দেহে এখনও বুলেট। কাজেই আমরা কেন আওয়ামী লীগে যাব? এ আওয়ামী লীগতো একটি মাফিয়া লীগ। এমন আওয়ামী লীগ আমরা কেন করব, যাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই?’

শারমিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের ভালো লোকগুলোকে একত্র করে, জনতার পাশে দাঁড়িয়ে মাফিয়া লীগের নেতৃত্বে যারা ছিল তাদের বহিষ্কারের দাবি জানাতে হবে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কারোরই আর দেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। আমি মনে করি শেখ হাসিনা বা শেখ পরিবারের কারোরই আর রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।

জাতির পিতা প্রশ্নে শারমিন আহমদ বলেন, জাতির পিতা বলার আগে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধে কার কী ভূমিকা ছিল সেটা বিবেচনায় নিতে হবে। এটা জনগণই নির্ধারণ করবে। মুক্তিযুদ্ধের আসল ঘটনা জাতির সামনে খুলে দেওয়া হলে জনগণই সেটা বিবেচনা করবে, কার কী ভূমিকা ছিল। জনগণ যদি দেখে মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, তাহলে তারাই সেটা ঠিক করবে। আর জনগণ যদি জনগণ মনে করে, তার সেই ধরনের ভূমিকা ছিল না, তাহলে সেটা হবে না।


জাতীয় এর আরও খবর

img

সব দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই : তারেক রহমান

প্রকাশিত :  ১৫:১১, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে গড়তে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব। আমরা সকল দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। আন্দোলনরত যে দলগুলো ছিলাম, একসঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা চাই সব দলকে নিয়ে এমন একটি সরকার গঠন করতে যাতে মানুষ তাদের মতামত রাখতে এবং সবাই মিলে কাজ করতে পারবে।’

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। এর আগে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির একক আন্দোলন সফল হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দল ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নেমে এসেছিল বলে আমরা আন্দোলনকে সফল করতে পেরেছি। লাখো কোটি মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ঠিক সেভাবে বিএনপি একা দেশ গড়তে পারবে না। দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে জাতিকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট মাসে সবাই যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সেভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ঐক্যবদ্ধের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বিএনপিকে।’

তিনি বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে রকম ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করে সমাজের ব্যালেন্স নষ্ট করেছিল। আমরা চাই দেশকে পুনর্গঠন করতে। অনেক মানুষ আছেন যারা রাজনীতিতে জড়িত নন বা জড়াতে ইচ্ছুক না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করতে, মতামত রাখতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে চান। তাদের আমরা উচ্চকক্ষে স্থান দিতে পারি- যাতে তাদের মতামত জানতে পারি, যেন তারা ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করা হলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে শহীদদের স্মরণে সেসব স্থাপনার নামকরণ করা হবে। দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক ১০ জেলার নেতাদেরে রাষ্ট্রসংস্কারে দলের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। এতে সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিএনপির মানবাধিকার কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুল।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।


জাতীয় এর আরও খবর