img

বেপরোয়া আওয়ামী লীগের জেলে সিন্ডিকেট

প্রকাশিত :  ১৮:৫৯, ০২ নভেম্বর ২০২৪

বেপরোয়া আওয়ামী লীগের জেলে সিন্ডিকেট

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পলায়নকারী হাসিনার পতনের পর বেশির ভাগ এলাকায় ক্ষমতার হাতবদল ঘটেছে। তবে পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া অংশে দলটির নেতাদের জেলে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়। নিষেধাজ্ঞার সময়ও ভয়ে নদীতে অভিযানে যেতে পারে না পুলিশ। যেসব পুলিশ সদস্য সাহস দেখান, তাদের চড়া মূল্য দিতে হয়।

গত ২৮ অক্টোবর এমনই অভিযানে গেলে মেরে জেলেরা পানিতে ফেলে দেয় কুমারখালী থানার এএসআই মুকুল হোসেন ও সদরুল হাসানকে। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জেলেদের হামলায় আহত হন এসআই নজরুল ইসলাম, কয়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন।

আজ রোববার পদ্মায় ইলিশ ধরার ওপর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। স্থানীয়রা জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা ছিল শুধুই কাগজ-কলমে। নদীর কুমারখালী অংশে দিনরাত চলেছে মা ইলিশ নিধন। কয়েকশ জেলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। এসব জেলে সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা। তারা নৌকাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার করে চাঁদা নেন।

সম্প্রতি শিলাইদহ ও কয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পদ্মায় বালু উত্তোলন, মাছ ধরা ও জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ। একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার, কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল খালেক, তার দুই ছেলে– রিপন ও শিপন, কয়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর স্বপন ও তুষার গা-ঢাকা দিলেও, বাকিরা নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন। অন্যপক্ষ সক্রিয় ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে।

ইয়ারুল গ্রুপের জেলে নুর ইসলামের স্ত্রী পূর্ণিমা খাতুন বলেন, নদীতে নামলেই আওয়ামী লীগ নেতা খালেক, স্বপন, ছলিম ও টিটন মেম্বারের লোকজন চড়াও হয়। চাঁদা না দিলে নৌকা ডুবিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান, ২৮ অক্টোবর পদ্মায় পুলিশের ওপর হামলা হয় আব্দুল খালেক ও তার দুই ছেলের নেতৃত্বে। তারা জেলেদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজি করছেন। তবে আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন জানান, তারা নন, নদীর সব অপকর্মে ইয়ারুল জড়িত।

কয়া ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম বলেন, ইয়ারুল জেলেদের কাছ থেকে প্রতিরাতে নৌকাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইয়ারুল সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন ও তুষারের নেতৃত্বে পদ্মায় জেলেদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। মাছ, জাল ও নৌকা কেড়ে নেয়। নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়।’ 

উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পদ্মায় ব্যাপক সিন্ডিকেট রয়েছে। অভিযানে যাওয়ার আগেই জেলেরা খবর পেয়ে যান। সিন্ডিকেটের কাছে সবাই অসহায়।’


img

ভারত থেকে ১৭ দিনে এল ১ হাজার ৬৫৫ টন চাল

প্রকাশিত :  ১১:১৩, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শুল্ককর প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পর থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ১৭ দিনে ভারত থেকে এক হাজার ৬৫৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। দুই বছর পর গত ১৭ নভেম্বর থেকে পুনরায় চাল আমদানি শুরু হয়। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ পরিমাণ চাল আমদানি করা হয়েছে ভারত থেকে।

তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এসব চাল আমদানি করেছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক ভবনের কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল গনি।

তিনি জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মাহবুবুল আলম ফুড প্রডাক্ট, অর্ক ট্রেডিং এবং সর্দার এন্টারপ্রাইজ বেনাপোল বন্দর দিয়ে এ সমস্ত চাল আমদানি করছে।

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে সবশেষ ছয়টি ট্রাকে ২১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়। এ নিয়ে ১৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টা পর্যন্ত ৪৯ ট্রাকে এক হাজার ৬৫৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেয় ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।

ভারত থেকে দুই লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। 

তবে মন্ত্রণালয় আমদানির সময় বেঁধে দিয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর শুল্ককর ছাড়া চাল আমদানির শেষ দিন। সময় সীমিত হওয়া এই পরিমাণ চাল আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা আমদানির সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, ২০২৩ সালের ২০ জুলাই থেকে দেশের বাইরে সিদ্ধ ও আতপ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। তার আগে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সেই সময় চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চালের ওপর ৬২ শতাংশ শুল্ককর আরোপ করা হয়। এরপর থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আর চাল আমদানি হয়নি।

শুল্ক প্রত্যাহার হওয়ায় আবার চাল আমদানি শুরু হয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টা পর্যন্ত সময়ে এক হাজার ৬৫৫ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।