জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলহত্যা দিবস স্মরণে গত ৩রা নভেম্বর রোববার এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শাহ আজিজুর রহমান, সহ সভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মাশুক ইবনে আনিছ, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমেদ, জনসংযোগ সম্পাদক রবীন পাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খছরুজ্জামান খছরু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ছুরুক আলী, সহ দপ্তর সম্পাদক খছরুজ্জামান খছরু, ওয়েলস আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মকিস মনসুর, যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আফজল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমদ খান সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভা শেষে ব্রিকলেইন জামে মসজিদে এশার নামাজের পর '৭৫-এর ১৫ আগস্ট এবং ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাসহ নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন, "জেল হত্যা দিবসের এই শোকাবহ বিশেষ দিনে প্রতিটি বাঙালীর কাছে অনুরোধ আমরা যেন ত্যাগের ইতিহাস ভুলে না যাই। ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য বৃহত্তর স্বার্থকে যেন জলাঞ্জলি না দেই। আমাদের মনে রাখতে হবে খুনীরা বাংলাদেশকে পাকিন্তান বানানোর লক্ষ্যে ও জাতির মেরুদণ্ডকে ভেঙে দেওয়ার মানসে ১৯৭৫ এর ১৫ ই আগষ্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও ৩ রা নভেম্বরে জেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো।
"৭৫-এর পর থেকে বছরের পর বছর বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা চলে" বলে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, "রাষ্ট্রদ্রোহী, গণ হত্যাকারী, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী ড. মোহাম্মদ ইউনুস গংদের বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার বা নেতিবাচকভাবে জাতির সামনে হাজির করছে। তারই ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্বীকার করছে। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর জাতীয় চার নেতার মৃত্যুবার্ষিকী তথা জেল হত্যা দিবস সহ ৮ টি দিবস বাতিল করার মাধ্যমে বর্তমান সরকার এসব নেতাকেও অস্বীকার করছে।"
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, ১৭ই মার্চ, ১৫ই আগস্ট ও ৪ঠা নভেম্বর সহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, "আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আজ অত্যন্ত কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অসাংবিধানিক সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে নির্বিচারে মানুষ হত্যার মহোৎসব চলছে, যা গণহত্যার শামিল। নির্বিঘ্নে মানুষের বাসা-বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই চলছে। স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করে সমগ্র জাতিকে একটা চরম সংকটে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল মানুষ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সকলের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সারা দেশে চরম অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা চলছে। একদিকে অপরাধী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিচ্ছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাছ-বিচারহীনভাবে গণহারে গ্রেফতার করে দিনের পর দিন আটক করে রাখা হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর এমনই প্রতিকূল সময় এসেছিল বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের আদর্শের প্রতি আপসহীন মানুষেরা তারপরও মাথা নত করেনি। আমাদের জাতীয় ৪ নেতা এই পথের প্রদর্শক। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি তাঁরা ছিলেন হিমালয়ের মতো অনঢ়। মৃত্যুভয়ও তাঁদের টলাতে পারেনি। তাই তাঁরা জীবন উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠা বোধ করেননি। আজ দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে লগ্নে জাতীয় ৪ নেতা আমাদের অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হিসেবে ধরা দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি তাদের নিরাপস মনোভাব আমাদের জন্য চিরস্মরণীয় ও অনুকরণীয়। তাঁদের আত্মত্যাগ যে কোনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের চেতনার শিখাকে প্রজ্জ্বলিত রাখতে জ্বালানি সরবরাহ করে যাবে।"- সংবাদ বিজ্ঞপ্তি