img

মাসব্যাপী ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’র উদ্বোধন: মঞ্চায়িত নাটকগুলো বাঙালি অভিবাসীদের জীবনসংগ্রামের ভাষ্য

প্রকাশিত :  ১৬:৩০, ০৫ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৬:৫৯, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

মাসব্যাপী ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’র উদ্বোধন: মঞ্চায়িত নাটকগুলো বাঙালি অভিবাসীদের জীবনসংগ্রামের ভাষ্য

|| হামিদ মোহাম্মদ ||

লন্ডন, ৪ নভেম্বর: লন্ডনে বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের উদ্যোগে গত ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’। এবারের ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’র  থিমস হলো ‘হোপ’বা ‘আশা’।  উদ্বোধন হয়েছে পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্টস সেন্টারের থিয়েটার হলে। উদ্বোধনী  দিনে সন্ধ্যা ৭টায় ছিল ‘মঞ্চশৈলী’ নাট্য সংগঠনের প্রযোজিত নাটক ‘দি থিভস অব হোয়াইটচ্যাপেল’।  

নাটক শুরুর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রেস্টলেস বিয়িংয়ের রহিমা বেগম, হেড অব আর্টসের ক্যাথারিন বইড, ড্রামা ডিপার্টমেন্টের মজিসলা এডিবইও, লীড মেম্বার অব কালচারাল এন্ড রিক্রিয়েশন—এর কাউন্সিলার কামরুল হোসেইন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টাওয়ার হ্যামলেটসের নাট্যবিভাগের কর্মকতার্ কাজী  রোকশানা বেগম। শো শুরু হওয়ার আগে লেবাননী তরুণী আবু লায়লা প্যালেস্টাইনের মুক্তি সংগ্রাম ভিত্তিক স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।  

বাংলা সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে বিলাতের মাটিতে তুলে ধরার ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’র উদ্বোধনী পর্বের পর মঞ্চস্থ  হয় নাটক ‘দি থিভস অব হোয়াইটচ্যাপেল’। নাটকটি লিখেছেন কথাসাহিত্যক ও নাট্যকার সাঈম চৌধুরী। পরিচালনা করেন রাজীব দাশ, সহপরিচালক ছিলেন রুহুল আমিন। এছাড়া ২ নভেম্বর শনিবারে সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মঞ্চায়নে শিশুশিল্পীদের অভিনীত ‘হোপ, হ্যাপিল্যান্ড’। নাটকটি লিখেছেন নাট্যকার বুলবুল হাসান। সহযোগী ক্ষুদে লেখক ছিলেন সিরিনা, ইয়াসনা, রামিরা, আধ্যিয়াত, অনিন্দিতা, সারথি, ইয়ামীর ও সায়মা। পরিচালনা করেন সৈয়দা সায়েমা আহমেদ।  এবং ৩ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় লীডসের ‘মুক্তমঞ্চ’ নাট্য সংগঠনের ‘আশার ধ্বনি শুনি’। নাটকটি লিখেছেন রাশিদ গায়েন, পরিচালনা করেন আশরাফ চৌধুরী মিঠু।


‘দি থিভস অব হোয়াইটচ্যাপেল’ এর একটি দৃশ্য।

প্রতিদিনের প্রতিটি শো’তে  ছিল থিয়েটার হল দর্শকে পরিপূর্ণ, কোনো সিট খালি ছিল না। দর্শনীর বিনিময়ে নাটকগুলো উপভোগ করতে—আসা দর্শকদের মধ্যে ছিল বিপুল উতসাহ উদ্দীপনা। নাটক যে বিনোদনের একটি শক্তিশালি মাধ্যম তা দর্শকদের উপস্থিতি দেখেই বুঝা যায়। তাই, বাঙালি নাট্যমোদী দর্শক প্রতি বছর নভেম্বর মাসের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন। বছরের শুরুতে থেকেই নাট্যকমীর্রাও নিয়মিত নাটকের মহড়া শুরু করেন ও নাট্যচর্চায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অভিবাসী বাঙালি সম্প্রদায়ের কর্মব্যস্ত জীবনে একটু স্বস্থিদান ও  বিনোদন প্রদানে টাওয়ার হ্যামলেটসের ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’র বয়স এবারে গড়ালো ২১ বছর। ২০০৩ সালে শুরু হয় এর উদ্দীপ্ত পথচলা। 

উদ্বোধনী সন্ধ্যায়  নাটক ‘দি থিভস অব হোয়াইটচ্যাপেল’ উপভোগের পর টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় অতিথি ও দর্শক—শ্রোতাদের সম্মানে নৈশভোজ। ভোজসভায় অংশ নেন উপস্থিত দর্শক শ্রোতাবৃন্দ। লক্ষণীয় ছিলÑখাবার টেবিলেও একে অন্যের সাথে নাটকের বিভিন্ন চরিত্র, দৃশ্য ও থিম নিয়ে মেতে ওঠেন দর্শকরা।  চোখেমুখে ছিল তৃপ্তিপূর্ণ দীপ্তির ঝলকানি। 


বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মঞ্চায়নে শিশুশিল্পীদের অভিনীত ‘হোপ, হ্যাপিল্যান্ড’ এর একটি দৃশ্য।

এছাড়া ৩ নভেম্বর রোববারের আরেকটি বিশেষ আয়োজনের মধ্যে ছিল ‘শাড়ী’ প্রদর্শনী ও বিক্রয়। দুপুর ১টা থেকে ব্রাডি আর্টস সেন্টারের মূল হলে আয়োজিত এ শাড়ী মেলায় অংশ নেয় বাঙালি নারীদের ব্যবস্থাপনায় ৮টি স্টল। সঙ্গে ছিল কয়েকটি বাঙালি খাবার  দোকানও। মনোমুগ্ধকর এ প্রর্দশনী ও মেলায় খাদ্য রসিকরা যেমন বাঙালি মজাদার খাবার খান, তেমনি শাড়ী ক্রয়—বিক্রয়েও ছিল উল্লেখ্যযোগ্য নারী সমাগম। মন খুলে কেনা—বেচায় নারীদের অংশগ্রহণ ছিল চাঞ্চল্যেপূর্ণ। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনটি বেলা বাড়ার সাথে সাথে রূপ নেয়  অনন্য মিলনমেলায়। 

উল্লেখ্য, সিজন অব ড্রামা’র প্রথম দিন থেকে শুরু হয়েছে চিত্র প্রদর্শনী। বাংলাদেশী চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্র ব্রাডি আর্টস সেন্টারের ভেতরের হলরুমের দেয়াল বর্ণিল চিত্রে রাঙিয়ে উঠেছে। দর্শকরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন ও উপভোগ করছেন। প্রতিটি চিত্রে রয়েছে বাংলার প্রকৃতি ও জীবনবৈচিত্রের নানা রূপ। 

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

টাওয়ার হ্যামলেটসে চালু হলো সাঁতার শেখার স্কুল ‘বি ওয়েল—সুইম ওয়েল’

প্রকাশিত :  ১৯:০৭, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইল এন্ড পার্ক লেজার সেন্টারে কাউন্সিলের লেজার সার্ভিসেস ‘বি ওয়েল’ ৪ ডিসেম্বর তাদের নতুন সাঁতার শিখন স্কুল ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’ চালু করেছে। এই সুইম স্কুলের লক্ষ্য হল বাসিন্দাদের সাঁতারের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী ও নিরাপদ করে তোলা।

সুইম ইংল্যান্ডের লার্ন টু সুইম ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করে ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’। এই ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে ইংল্যান্ডের জাতীয় সাঁতার প্রশিক্ষণ কাঠামো। এতে অন্তর্ভুক্তঃ
— দক্ষ ও সদ্য প্রশিক্ষিত প্রশিক্ষক।
— ছোট ছোট ক্লাস, যাতে মনোযোগ ও নির্দেশনায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব।
— সাঁতারের প্রতিটি ধাপের জন্য নির্ধারিত ক্লাস, বিশেষ করে বিশেষ শিক্ষা চাহিদা ও প্রতিবন্ধী (সেন্ড) শিক্ষার্থীদের জন্য সুনির্দিষ্ট ক্লাসের আয়োজন
— প্রতিটি ধাপের স্পষ্ট অগ্রগতি, যা একটি কাঠামোবদ্ধ শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত করে।
— প্রতিটি মাইলফলক উদযাপনে অফিসিয়াল সার্টিফিকেট।

৪ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুইম ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি জেমস প্যারামোর টাওয়ার হ্যামলেটসের সঙ্গে নতুন এই অংশীদারিত্ব এবং সাঁতারকে জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হিসেবে গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অক্টোবরে, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর সঙ্গে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয় এই এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সুইম স্কুলের জন্য নতুন নাম ও মাসকট বাছাই করা হয়।

মে ফ্লাওয়ার প্রাইমারি স্কুলের ইনায়াহ রহমান ডিজাইন করেছে “বাবলস দ্য বি ওয়েল ডাক,” যা বি ওয়েল সুইম স্কুলের অফিসিয়াল মাসকট হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অপরদিকে, ওসমানী প্রাইমারি স্কুলের মুসা হোসেন তৈরি করে সুইম নিরাপত্তা সঙ্গী “অক্টোসেফ,” যা শিশুদের প্রয়োজনীয় সাঁতার নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করবে।

প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও তাদের স্কুলের প্রতিনিধিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের সৃষ্টিশীলতার জন্য পুরস্কৃত হন।