img

কাউন্সিলের নতুন বাড়ি কেনার সুযোগ বন্ধ হচ্ছে?

প্রকাশিত :  ১১:১৪, ০৭ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:০৩, ০৭ নভেম্বর ২০২৪

কাউন্সিলের নতুন বাড়ি কেনার সুযোগ বন্ধ হচ্ছে?

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: বিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার বলেছেন, তিনি ইংল্যান্ডে নতুন কাউন্সিল বাড়িগুলি রাইট টু বাই স্কিমের আওতায় বিক্রি হওয়া বন্ধ করতে চাচ্ছেন।

অ্যাঞ্জেলা রেনার গত কাল বুধবার বিবিসিকে বলেন, সরকার ইংল্যান্ডে নতুন সোশ্যাল হাউজিংয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে।

কয়েক দশক ধরে, ইংল্যান্ডে রাইট টু বাই স্কিম এর মাধ্যমে সোশ্যাল হাউজিংয়ের ভাড়াটেগণ বড় অংকের ডিসকাউন্টে তাদের বাড়ি কেনার সুযোগ ভোগ করছিলেন।

উপপ্রধানমন্ত্রী রেনার বলেন, বর্তমানে ইংল্যান্ড দেশটি গৃহহীনতার বিপুল সংকট এর মুখোমুখি হয়েছে। কারণ, তিনি শীতের মধ্যে রাস্তায় কিংবা যেখানে সেখানে রাত্রিযাপন করা মানুষের সাহায্য করার জন্য দশ মিলয়ন পাউন্ড সহায়তার ঘোষণা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের রক্ষণশীল সরকারের সময় রাইট টু বাই স্কিম চালু করা হয়েছিল৷ তখন থেকে দুই মিলিয়নেরও বেশি বাড়ি বিক্রি হয়েছে৷

রাইট টু বাই স্কিম নীতিটি প্রাথমিকভাবে বাড়ির মালিকানার হার বৃদ্ধির জন্য করা হয়ে থাকলেও সম্প্রতি গৃহহীনদের পরিমান বৃদ্ধিতে এই পদ্ধতিকে দায়ী করা হয়েছে।

লেবার দল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সোশ্যাল হাউজিং এবং কাউন্সিল হোম নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে, উপপ্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, তিনি নিয়মবহির্ভূত ভাবে এই নতুন নির্মিত সম্পত্তিগুলি হারাতে চান না।

তিনি বলেন, "আমরা তাঁদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করব যাতে আমদের সেই বাড়িগুলি হারাতে না হয়। ব্রিটেনের মন্ত্রীপরিষদ এই বছরের শেষের দিকে এই বিষয়ে একটি আলোচনা শুরু করবে বলে জানা যায়।

২০১২ সালে কনজারভেটিভ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার দ্বারা রাইট টু বাই স্কিম পুনরায় চালু করা হয়েছিল। এ সময় ভাড়াটিয়া তাদের বাড়ি কেনার সময় যে আরও অধিক পরিমানে ছাড় গ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। বর্তমানে এটি লন্ডন ব্যতীত সমগ্র ইংল্যান্ডে প্রায় ১ লক্ষ ২ হাজার পাউন্ড। লন্ডনে এই ছাড়ের পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার পাউন্ড।

উল্লেখ্য, বর্তমান উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার ২০০৭ সালে রাইট টু বাই স্কিমের মাধ্যমেই নিজের সম্পত্তি কিনেছিলেন।

২০১৬ সালে স্কটল্যান্ডে রাইট টু বাই স্কিমের আওতায় বাড়ি ক্রয়ের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছিল এবং ২০১৯ সালে ওয়েলশ সরকার এ নীতিটি বন্ধ করে।

এনজেলা রেনার বলেছেন, গৃহহীনতার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড একটি বিপর্যয়কর জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।

দক্ষিণ লন্ডনে রাস্তায় ঘুমানো মানুষের জন্য একটি হোস্টেল পরিদর্শন করে তিনি এমন কয়েকজনের সাথে দেখা করেছিলেন, যাদের সম্প্রতি ফুটপাতে না ঘুমানোর জন্য সাহায্য করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, এই বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিন মাসে ৪,৭৮০ জন মানুষকে শহরে রাস্তায় বা এখানে সেখানে ঘুমাতে দেখা গেছে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ।

অস্থায়ী আবাসে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যাও রেকর্ড পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার এরও বেশি শিশু রয়েছে। এ সমস্যাটি রাতারাতি ঠিক করা হবে না স্বীকার করে, মিসেস রেনার বলেন, গৃহহীনতা মোকাবেলায় বিভিন্ন সরকারী বিভাগকে সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনার ওপর জোর দেয়ার দাবি জানান।

গৃহহীন দাতব্য সংস্থা সেন্ট মুঙ্গোর প্রধান নির্বাহী এমা হাদ্দাদ বলেছেন, ভাড়ার অধিকার বিলের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সংকল্পে তিনি উৎসাহিত হয়েছেন।

বিলটি ইংল্যান্ডে ধারা ২১ এর উচ্ছেদের অবসান ঘটাবে, যেখানে বাড়িওয়ালারা ভাড়াটেদেরকে কারণ না জানিয়েই চলে যেতে বলতে পারেন।

তিনি বলেন, “আমরা জানি যে বেশিরভাগ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে এবং বেসরকারি খাত থেকে বেরিয়ে আসছে। তিনি বলেন, ধারা ২১ একটি বড় চতুর প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বাড়ির মালিকরা সহজেই ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করতে পারেন।


কমিউনিটি এর আরও খবর

img

টাওয়ার হ্যামলেটসে চালু হলো সাঁতার শেখার স্কুল ‘বি ওয়েল—সুইম ওয়েল’

প্রকাশিত :  ১৯:০৭, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইল এন্ড পার্ক লেজার সেন্টারে কাউন্সিলের লেজার সার্ভিসেস ‘বি ওয়েল’ ৪ ডিসেম্বর তাদের নতুন সাঁতার শিখন স্কুল ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’ চালু করেছে। এই সুইম স্কুলের লক্ষ্য হল বাসিন্দাদের সাঁতারের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী ও নিরাপদ করে তোলা।

সুইম ইংল্যান্ডের লার্ন টু সুইম ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করে ‘বি ওয়েল সুইম ওয়েল’। এই ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে ইংল্যান্ডের জাতীয় সাঁতার প্রশিক্ষণ কাঠামো। এতে অন্তর্ভুক্তঃ
— দক্ষ ও সদ্য প্রশিক্ষিত প্রশিক্ষক।
— ছোট ছোট ক্লাস, যাতে মনোযোগ ও নির্দেশনায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব।
— সাঁতারের প্রতিটি ধাপের জন্য নির্ধারিত ক্লাস, বিশেষ করে বিশেষ শিক্ষা চাহিদা ও প্রতিবন্ধী (সেন্ড) শিক্ষার্থীদের জন্য সুনির্দিষ্ট ক্লাসের আয়োজন
— প্রতিটি ধাপের স্পষ্ট অগ্রগতি, যা একটি কাঠামোবদ্ধ শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত করে।
— প্রতিটি মাইলফলক উদযাপনে অফিসিয়াল সার্টিফিকেট।

৪ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুইম ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি জেমস প্যারামোর টাওয়ার হ্যামলেটসের সঙ্গে নতুন এই অংশীদারিত্ব এবং সাঁতারকে জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হিসেবে গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অক্টোবরে, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর সঙ্গে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয় এই এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সুইম স্কুলের জন্য নতুন নাম ও মাসকট বাছাই করা হয়।

মে ফ্লাওয়ার প্রাইমারি স্কুলের ইনায়াহ রহমান ডিজাইন করেছে “বাবলস দ্য বি ওয়েল ডাক,” যা বি ওয়েল সুইম স্কুলের অফিসিয়াল মাসকট হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অপরদিকে, ওসমানী প্রাইমারি স্কুলের মুসা হোসেন তৈরি করে সুইম নিরাপত্তা সঙ্গী “অক্টোসেফ,” যা শিশুদের প্রয়োজনীয় সাঁতার নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করবে।

প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও তাদের স্কুলের প্রতিনিধিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের সৃষ্টিশীলতার জন্য পুরস্কৃত হন।