img

মূলধন লাভে কর হ্রাস: ইতিবাচক পথে ফিরেছে শেয়ারবাজার

প্রকাশিত :  ০৬:৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

মূলধন লাভে কর হ্রাস: ইতিবাচক পথে ফিরেছে শেয়ারবাজার

দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। যদিও শেষ দু’দিন পতনেই ছিল। বেশির ভাগ সেক্টরের রিটার্ন সপ্তাহ শেষে বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর ৫০ লাখ টাকার ওপরে মূলধন লাভের ওপর ১৫ শতাংশ করের হার কমানোয় এবং বেশির ভাগ কোম্পানির পজিটিভ আর্নিং প্রকাশিত হওয়ায় বাজারে কিছুটা আশাবাদ বেড়েছে। যদিও অনেক বিনিয়োগকারী তাদের পোর্টফোলিওতে আরো ক্ষতি এড়াতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। গড় টার্নওভার ৪৫.৪০ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর বাজারমূলধন ০.৯৭ শতাংশ বা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানি দর বৃদ্ধিতেই ছিল বলে ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনার তথ্য থেকে জানা গেছে।

সাপ্তাহিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ২৪৪টি শেয়ারের বাজারমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১১২টি শেয়ার এর বাজারমূল্য হ্রাস পেয়েছে। বাজারমূল্যের ভিত্তিতে ১৬টি সেক্টর এই সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে টপ গেইনার ছিল পেপার, সিরামিক্স ও ভ্রমণ খাত। দু’টি সেক্টর এই সপ্তাহে টপ লুজার। মূল্য ও লেনদেনের দিক থেকে সার্বিকভাবে ওরিয়ন ফার্মা সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচকে পয়েন্ট ফিরেছে ১১৬.৯৩ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচকে ৩৯.৪৯ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচকে ৪৩.০১ পয়েন্ট এবং এসএমই সূচকে ৪২.৭১ পয়েন্ট। গড়ে টাকায় লেনদেন ৪৫.৪০ শতাংশ বেড়েছে। বাজারমূলধন ০.৯৭ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে ডিএসইর মূলধনের আকার এখন ছয় লাখ ৭১ হাজার ৮০৯ কোটি টাকার বেশি। শেয়ার বেচাকেনা গড়ে ২৫.৭৬ শতাংশ বেড়েছে। মোট টাকায় লেনদেন বেড়েছে আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর শেয়ার বেচাকেনা মোট বেড়েছে আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৩ কোটি ৫০ লাখ। ব্লক মার্কেটে পুরো সপ্তাহে মোট ৯১ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। যেখানে এসএমই মার্কেটে ৫১ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৪টির, দর পতনের শিকার ১১১টি, দর অপরিবর্তিত ছিল ২৯টির এবং ১৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়নি।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০

বিদায়ী সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪২.৬২ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এই তথ্য জানা গেছে। শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে শাইনপুকুর সিরামিকসের ২৮.৮১ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলসের ২৫.১৬ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ২৪.০১ শতাংশ, আরামিট সিমেন্টের ২২.৮১ শতাংশ, এনভয় টেক্সটাইলের ২১.৬৩ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ২০.৫০ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ২০.৩৭ শতাংশ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসের ২০.০০ শতাংশ এবং ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের ২০.০০ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০.৫৩ শতাংশ কমেছে। দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফার্মা এইডসের ৮.৫৮ শতাংশ, শামপুর সুগার মিলসের ৮.১৫ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৭.৮৮ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৭.৩২ শতাংশ, রেউইক যজ্ঞেস্বরের ৭.২৭ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৬.৯৮ শতাংশ, জিল বাংলা সুগার মিলসের ৬.৯৮ শতাংশ, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৬.৯৯ শতাংশ এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ৬.৮২ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

ডিএসইর লেনদেনের নেতৃত্বে গত সপ্তাহে উঠে এসেছে ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২.৯২ শতাংশ। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকটির প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ৭০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২.৭৬ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকটির প্রতিদিন গড়ে ১৪ কোটি ২৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২.৩৫ শতাংশ।

এছাড়া, প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফারইস্ট নিটিংয়ের ১৩ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ১২ কোটি ৫২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, অগ্নি সিস্টেমসের ১২ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, বেক্সিমকো ফার্মার ১১ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১১ কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ১১ কোটি তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির ১০ কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সিএসইতেও ভালো ছিল সূচকগুলো

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টকে সবগুলো সূচকই গত সপ্তাহে ভালো পরিমাণে পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে বাজারটি আগের সপ্তাহের চেয়ে ইতিবাচক পথেই ছিল। সিএএসপিআই ২.৮৩ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ১.৮৬ শতাংশ, সিএসসিএক্স ২.৮৮ শতাংশ, সিএসআই ৩.৩৪ শতাংশ এবং এসএমই সূচক ১.৭৩ শতাংশ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। ৩১৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। যার মধ্যে দর বেড়েছে ২৮৪টির, পতনে ছিল ৫৭টি এভং ১২টি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল। এক কোটি ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৯৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকা গত সপ্তাহের বাজারমূল্যে। এখানে বাজারমূলধনে এ শ্রেণীর কোম্পানির অংশীদারিত্ব ৭০.৯৮ শতাংশ, বি শ্রেণীর ১৯.৪৫ শতাংশ, এস শ্রেণীর ৭.২৯ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর কোম্পানির ২.৩২ শতাংশ। পর্যালোচনায় রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি শেয়ারবাজারে সাপোর্ট প্রদান ও তারল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই যেসব বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন, তারা এখন বাজারে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে আগ্রহী হতে পারেন। সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলা যায় যে, আগামী সপ্তাহে বাজারের সূচক কিছুটা নি¤œমুখী হওয়ার পাশাপাশি মাঝারি পরিমাণে লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

img

বৈদেশিক ঋণে ধাক্কা, ২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের শঙ্কা

প্রকাশিত :  ০৬:১৫, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এবার রাজনৈতিক পালাবদলের ধাক্কা লেগেছে। অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি নেই। এর ফলে চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে বৈদেশিক সহায়তা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত অর্থবছর ছেঁটে ফেলা হয়েছিল ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ। তবে এবার বেশি টাকার বরাদ্দই বাদ দিতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চাওয়া হচ্ছে বৈদেশিক ঋণ বা অনুদান আছে এমন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়িয়ে ডলার সংগ্রহ বৃদ্ধি করা।

এদিকে এরই মধ্যে সংশোধিত এডিপি তৈরির জন্য প্রকল্পভিত্তিক বৈদেশিক অর্থের বরাদ্দ নির্ধারণে চার দিনের সিরিজ বৈঠকে বসছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। আগামী ৯ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া এসব বৈঠকে ৫১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইআরডির সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আজম বুধবার বলেন, দেশে একটা অনিশ্চিত পরিস্থিতি চলছে। যেভাবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। সেই সঙ্গে প্রশাসনে রদবদল হচ্ছে। নতুন সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে।

সব মিলিয়ে উন্নয়ন সহযোগীরাও একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। ফলে প্রকল্পের কম বাস্তবায়ন এবং অর্থছাড়ও কম হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারও ব্যয় সংকোচনের নীতিতে হাঁটছে। এরই মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। বাস্তবতা বিবেচনায় সংশোধিত এডিপিতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ কমার শঙ্কা তো থেকেই যায়।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা অংশে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ৩৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বাদ দিয়ে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দাঁড়াতে পারে ৮০ হাজার কোটি টাকা।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ এবং আগামী ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দের প্রক্ষেপণ দিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাছে চিঠি দেয় ইআরডি। সেখানে বলা হয়, বৈদেশিক সহায়তাযুক্ত প্রকল্পগুলোর অগ্রগতির ভিত্তিতে বরাদ্দ নির্ধারণ করে ১০ নভেম্বরের মধ্যে বরাদ্দ চাহিদা জমা দিতে হবে। এরই মধ্যে প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ জমা দিয়েছে অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এতে মনে করা হচ্ছে, এবার বেশি অঙ্কের বরাদ্দ কমতে পারে। ইআরডির একাধিক কর্মর্কতার সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

ইআরডি সূত্র জানায়, সিরিজ বৈঠকের অংশ হিসাবে রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে আগামী ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক। এছাড়া ১০ ডিসেম্বর ৯টি, ১১ ডিসেম্বর ১৪টি এবং ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক। এসব বৈঠকে নির্ধারণ করা হবে কোন প্রকল্পে কত বৈদেশিক সহায়তা অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। তবে প্রকৃত বরাদ্দ চূড়ান্ত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

সূত্র জানায়, গত অর্থবছরের মূল এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা (ঋণ ও অনুদান) খরচের লক্ষ্য ছিল ৯২ হাজার ২০ কোটি টাকা। সেখান থেকে কমিয়ে বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে কমানো হয়েছিল ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ইআরডি এবং বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে চার মাসে বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোতে বিরাজ করছে ধীরগতি।

ইআরডি বলছে, গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে ২৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। তুলনামূলক হিসাব করলে দেখা যায়, এ অর্থবছরের চার মাসে ৩৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার কম ছাড় হয়েছে।

এদিকে আইএমইডি বলছে, গত চার মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বৈদেশিক সহায়তা অংশের খরচ করতে পেরেছে ৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে খরচ হয়েছিল ১১ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা বা ওই সময়ের বরাদ্দের ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত কয়েক বছরের তুলনায় চার মাসে অনেক কম অর্থ খরচ হয়েছে।

ইআরডি তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কোনো অর্থবছরই মূল এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা ব্যয়ের লক্ষ্য ঠিক থাকেনি। পরবর্তী সময়ে অর্থবছরের ৬ মাস যেতে না যেতেই বড় অঙ্কের বরাদ্দ ছেঁটে ফেলতে হয়। তবে এক্ষেত্রে গত ২০২২-২৩ অর্থবছর কমেছে ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে কাটছাঁট করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। এ অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ছিল ৯৯ হাজার ২৪ কোটি টাকা। সেখান থেকে বরাদ্দ কমিয়ে সংশোধিত বরাদ্দ ধরা হয় ৭২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ কমানোর রেকর্ড তৈরি হয়। করোনা মহামারির কারণে এ অর্থবছর বাদ দেওয়া হয় ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। এ সময় মূল এ ডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। সংশোধিত বরাদ্দ দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকায়।

এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে মূল এডিপিতে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এডিপি সংশোধনের সময় ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমানো হয়। বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬২ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাদ দেওয়া হয় ৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কমানো হয় ৮ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা।

ইআরডি, আইএমইডি এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অর্থবছর শুরুর আগেই বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ বাড়িয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে দেখা দেয় নানা জটিলতা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-সঠিক সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া প্রকল্প গ্রহণ, প্রকল্প তৈরিতেই দুর্বলতা এবং দক্ষতার অভাব।

এছাড়া যেনতেনভাবে প্রকল্প তৈরি, বাস্তবায়ন পর্যায়ে কার্যকর তদারকির অভাব, নিয়মিত ও কার্যকরভাবে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) এবং পিএসসি (প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি) বৈঠক না হওয়া। সেই সঙ্গে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা, উন্নয়ন সহযোগীদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব। আরও আছে প্রয়োজনীয় অর্থছাড় না হওয়া, প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদলি ইত্যাদি কারণ।