img

সিরিজ বাঁচাতে বিকেলে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত :  ০৭:৪০, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

সিরিজ বাঁচাতে বিকেলে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বাজেভাবে হারের পর সিরিজ খোয়ানোর শঙ্কা জাগছে বাংলাদেশের। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামতে যাচ্ছে টাইগাররা। সিরিজ বাঁচাতে হলে জয়ের বিকল্প নেই নাজমুল হোসেন শান্তদের। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল চারটায়।

ঘরে বাইরে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না বাংলাদেশের। ভারতের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার পর চিত্রটা বদলায়নি ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও। আফগান সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য ছিল টিম টাইগার্সের। 

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। ২ উইকেট হারিয়ে দলীয় শতক স্পর্শ করেছিল টাইগাররা। তবে ৩ উইকেটে ১৩১ থেকে আর ১২ রান যোগ করতেই বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ৯২ রানে ম্যাচ হেরে সিরিজে পিছিয়ে আছে টাইগাররা।

এ ম্যাচের আগে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। কারণ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন মুশফিকুর রহিম। আঙুলের চোটে আগামী ১ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে।

ম্যাচের আগের দিন গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ বলছিলেন, \'দলের সমন্বয়ের কথা যদি বলেন দেখুন, আমাদের কিন্তু অপশনও খুব বেশি নেই। লিটন দাস অসুস্থ, সে থাকলে দলের সমন্বয়টা আরও ভালো থাকতো হয়ত। যেহেতু ওইরকম সুযোগ নেই, জাকের আলির জন্য বেস্ট অব লাক।\'

উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে জাকের আলি ছাড়া আর কোনো বিকল্পও নেই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য। তাকে নিয়ে মিরাজ আরো বলেন, \'ওর জন্য ভালো একটা সুযোগ। সুযোগ আসছে, ও যদি শতভাগ দিতে পারে অবশ্যই ওর নিজের ক্যারিয়ারের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো হবে।\'

তবে এখনো সিরিজ জয়ের সুযোগ দেখছেন মিরাজ, \'দেখুন, যেহেতু আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনও দুইটা ম্যাচ আছে। সুতরাং আমরা দুইটা ম্যাচ চিন্তা না করে পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমরা একটু ব্যাকফুটে আছি। যেহেতু আমরা একটা ম্যাচ খেলেছি এখানে, অনেক বছর পর ওয়ানডে খেলেছি। ৭-৮ মাস পর খেলেছি সবার মাঝে ওই জিনিসটাও একটু কাজ করছিল অনেকদিন পর আমরা ওয়ানডেতে খেলছে। আমরা প্রস্তুতিটা ওইভাবে নিচ্ছি, আশা করি যেহেতু অনেকদিন পর এই মাঠে খেলছি। ভালো মোমেন্টাম কিভাবে পেতে সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি।\'

সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার পরও, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ১৭টি ম্যাচের মধ্যে ১০টিতে জয়ী এবং ৭টিতে হেরেছে টাইগাররা। গত বছরের জুলাইয়ের আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই হারের আগ পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল টাইগারদের।

নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটে সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেকটাই বাজে অধ্যায়ের সূচনা হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে চাপে থাকবে বাংলাদেশ। কারণ এ ম্যাচও হেরে গেলে আফগানদের কাছে টানা দ্বিতীয়বারের মত সিরিজ হারবে টাইগাররা। ইতোমধ্যে দলের সাথে যোগ দিয়েছেন ভিসা জটিলতায় সফরের শুরু থেকে দলের সাথে না থাকা বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার নাহিদ রানা।

ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া মুশফিকুরের বদলি এখনও জানায়নি বাংলাদেশ। যদিও তার জায়গায় পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে টাইগার একাদশে এক বা দু’টি পরিবর্তন আসতে পারে ।

বাংলাদেশ স্কোয়াড : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মাহমুদউ ল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।

খুলনাকে হারিয়ে প্রথম জয়ের স্বাদ নিল সিলেট

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ

img

ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

প্রকাশিত :  ১২:০৪, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:১৮, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের ঘরে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের তরুণরা। ফাইনালের বিগ স্টেজে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে। 

আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়া। এর আগে যা করেছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবারে করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই। 

১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। 

অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনেই গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে। 

১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে। 

এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট। 

এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।  

এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।

ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই থামল বাংলাদেশইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি। 

৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি। 

সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৭ রানে।

কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।