অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়: রেজুয়ান আহম্মেদ
“ছাগল দিয়ে যেমন হাল বাওয়া যায় না, তেমনি যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতার নেতৃত্ব ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়।” এই প্রবাদটির মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর জীবনবোধ। দেশের সঠিক পরিচালনার জন্য যেমন কৌশলী, বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতার প্রয়োজন, তেমনি একজন যোগ্য উপদেষ্টার সহায়তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একজন উপদেষ্টা কেবল সরকারের পরামর্শদাতা নন; তিনি জাতির প্রকৃত পথপ্রদর্শক, যিনি সংকটময় মুহূর্তে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম।
এখানে প্রশ্ন ওঠে, বর্তমান সময়ে যারা উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হচ্ছেন, তারা কি আদৌ এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য যথেষ্ট দক্ষ ও যোগ্য? সাধারণ জনগণ তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে চলছেন। সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত হলে একটি জাতি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে; কিন্তু দুর্বল নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞতার অভাবে একটি জাতি পিছিয়ে যেতে বাধ্য। তাই নেতৃত্ব ও উপদেষ্টাদের উপরই নির্ভর করে জাতির অগ্রগতি এবং নাগরিকদের কল্যাণ।
দেশের নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো সরাসরি জনগণের জীবন ও ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলে। একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ উপদেষ্টা, যিনি আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও কৌশলগত জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ, তিনি মন্ত্রিপরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়ক হতে পারেন এবং দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি কেবল একজন প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং উন্নয়নের প্রধান কারিগর। তার দূরদর্শী দিকনির্দেশনা দেশকে সংকটমুক্ত করতে এবং সম্ভাবনার শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম করে।
তবে দেশ পরিচালনায় পরীক্ষামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ কখনোই কাম্য নয়। বিশেষ করে এমন একটি দেশে, যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। প্রায় ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের ভার যদি এমন ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ, তবে তা দেশকে সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য একজন উপদেষ্টার প্রয়োজন গভীর জনকল্যাণবোধ এবং রাজনৈতিক চাপের ঊর্ধ্বে থেকে বিবেকের নির্দেশনায় কাজ করার মানসিকতা।
অতএব, উপদেষ্টার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং জনকল্যাণের প্রতি দায়বদ্ধতা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত। একজন উপযুক্ত উপদেষ্টা হলেন তিনি, যিনি জনগণের সমর্থন ও আস্থার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের নীতি ও পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে পারেন। দেশের উন্নয়ন কেবল আর্থিক অগ্রগতির উপরই নির্ভর করে না, বরং মানবিক মূল্যবোধের উন্নয়নের সঙ্গেও যুক্ত। একজন দূরদর্শী ও আদর্শ নেতৃত্বই দেশের মানুষকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে পারেন।
সুতরাং, দেশের ভবিষ্যৎ পরিচালনায় যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বের গুরুত্ব কোনোভাবেই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। আমাদের উচিত এমন উপদেষ্টাদের নিয়োগ করা, যারা আদর্শ নেতৃত্বের মানদণ্ডে দেশকে সমৃদ্ধ করতে এবং দেশের মানুষকে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হন।