img

অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়: রেজুয়ান আহম্মেদ

প্রকাশিত :  ০৫:১৫, ১১ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৫:৩০, ১১ নভেম্বর ২০২৪

অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়: রেজুয়ান আহম্মেদ

“ছাগল দিয়ে যেমন হাল বাওয়া যায় না, তেমনি যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতার নেতৃত্ব ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়।” এই প্রবাদটির মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর জীবনবোধ। দেশের সঠিক পরিচালনার জন্য যেমন কৌশলী, বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতার প্রয়োজন, তেমনি একজন যোগ্য উপদেষ্টার সহায়তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একজন উপদেষ্টা কেবল সরকারের পরামর্শদাতা নন; তিনি জাতির প্রকৃত পথপ্রদর্শক, যিনি সংকটময় মুহূর্তে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম।

এখানে প্রশ্ন ওঠে, বর্তমান সময়ে যারা উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হচ্ছেন, তারা কি আদৌ এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য যথেষ্ট দক্ষ ও যোগ্য? সাধারণ জনগণ তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে চলছেন। সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত হলে একটি জাতি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে; কিন্তু দুর্বল নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞতার অভাবে একটি জাতি পিছিয়ে যেতে বাধ্য। তাই নেতৃত্ব ও উপদেষ্টাদের উপরই নির্ভর করে জাতির অগ্রগতি এবং নাগরিকদের কল্যাণ।

দেশের নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো সরাসরি জনগণের জীবন ও ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলে। একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ উপদেষ্টা, যিনি আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও কৌশলগত জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ, তিনি মন্ত্রিপরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়ক হতে পারেন এবং দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি কেবল একজন প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং উন্নয়নের প্রধান কারিগর। তার দূরদর্শী দিকনির্দেশনা দেশকে সংকটমুক্ত করতে এবং সম্ভাবনার শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম করে।

তবে দেশ পরিচালনায় পরীক্ষামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ কখনোই কাম্য নয়। বিশেষ করে এমন একটি দেশে, যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। প্রায় ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের ভার যদি এমন ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ, তবে তা দেশকে সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য একজন উপদেষ্টার প্রয়োজন গভীর জনকল্যাণবোধ এবং রাজনৈতিক চাপের ঊর্ধ্বে থেকে বিবেকের নির্দেশনায় কাজ করার মানসিকতা।

অতএব, উপদেষ্টার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং জনকল্যাণের প্রতি দায়বদ্ধতা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত। একজন উপযুক্ত উপদেষ্টা হলেন তিনি, যিনি জনগণের সমর্থন ও আস্থার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের নীতি ও পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে পারেন। দেশের উন্নয়ন কেবল আর্থিক অগ্রগতির উপরই নির্ভর করে না, বরং মানবিক মূল্যবোধের উন্নয়নের সঙ্গেও যুক্ত। একজন দূরদর্শী ও আদর্শ নেতৃত্বই দেশের মানুষকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে পারেন।

সুতরাং, দেশের ভবিষ্যৎ পরিচালনায় যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বের গুরুত্ব কোনোভাবেই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। আমাদের উচিত এমন উপদেষ্টাদের নিয়োগ করা, যারা আদর্শ নেতৃত্বের মানদণ্ডে দেশকে সমৃদ্ধ করতে এবং দেশের মানুষকে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হন।

রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

জাতীয় এর আরও খবর

img

সব দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই : তারেক রহমান

প্রকাশিত :  ১৫:১১, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে গড়তে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব। আমরা সকল দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। আন্দোলনরত যে দলগুলো ছিলাম, একসঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা চাই সব দলকে নিয়ে এমন একটি সরকার গঠন করতে যাতে মানুষ তাদের মতামত রাখতে এবং সবাই মিলে কাজ করতে পারবে।’

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। এর আগে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির একক আন্দোলন সফল হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দল ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নেমে এসেছিল বলে আমরা আন্দোলনকে সফল করতে পেরেছি। লাখো কোটি মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ঠিক সেভাবে বিএনপি একা দেশ গড়তে পারবে না। দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে জাতিকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট মাসে সবাই যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সেভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ঐক্যবদ্ধের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বিএনপিকে।’

তিনি বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে রকম ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করে সমাজের ব্যালেন্স নষ্ট করেছিল। আমরা চাই দেশকে পুনর্গঠন করতে। অনেক মানুষ আছেন যারা রাজনীতিতে জড়িত নন বা জড়াতে ইচ্ছুক না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করতে, মতামত রাখতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে চান। তাদের আমরা উচ্চকক্ষে স্থান দিতে পারি- যাতে তাদের মতামত জানতে পারি, যেন তারা ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করা হলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে শহীদদের স্মরণে সেসব স্থাপনার নামকরণ করা হবে। দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক ১০ জেলার নেতাদেরে রাষ্ট্রসংস্কারে দলের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। এতে সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিএনপির মানবাধিকার কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুল।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।


জাতীয় এর আরও খবর