img

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তৃতীয় দিনের মতো চলছে শ্রমিকদের অবরোধ

প্রকাশিত :  ০৫:৫২, ১১ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তৃতীয় দিনের মতো চলছে শ্রমিকদের অবরোধ

বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। এদিকে পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বারবার চেষ্টা করেও তিন দিন ধরে চলা এই সমস্যার সমাধান করতে পারছে না।

গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকায় টিএনজেড গ্রুপের ছয়টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গত শনিবার সকাল থেকে টানা তিন দিন ধরে ব্যস্ততম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি অবরোধ করে আছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে মোগরখাল এলাকায় গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন এসে তাদের বেতন পরিশোধ করার জন্য সাত দিনের সময় চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেটা মানেননি। কারণ গত প্রায় এক মাস ধরে বিভিন্ন সময় অনেক তারিখ দিয়েও মালিক এবং প্রশাসন তাদের কথা রাখতে পারেনি। তাই তারা কোনো কথাতেই আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

জানা যায়, শ্রমিকরা দ্বিতীয় রাতও মহাসড়কে কাটিয়েছে। তারা পালাক্রমে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের পক্ষে বিক্ষোভ করছেন। সড়কের পূর্ব পাশে একটি অটোরিকশায় মাইক লাগিয়ে শ্রমিকদের মহাসড়কে অবস্থান করতে বলা হচ্ছে।

এদিকে শ্রমিক অবরোধের কারণে তৃতীয় দিনের মতো গাজীপুর থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার গণপরিবহনের যাত্রী, শ্রমিক, কর্মচারী সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষকে গাজীপুর চন্দনা চৌরাস্তায় নেমে পায়ে হেঁটে অথবা বিকল্প পথ দিয়ে রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। আর ঢাকা থেকে যে সকল মানুষ উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তারা বিকল্প পথ দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা ও চন্দ্রা হয়ে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস দিয়ে এবং জয়দেবপুর থেকে বনমালা হয়ে টঙ্গী দিয়েও কিছু যানবাহন চলাচল করছে।

ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ইউনাইটেড পরিবহনের এক চালক  জানান, শনিবার সকাল ৯টা থেকে তিনি কলম্বিয়া গার্মেন্টসের উত্তর পাশে এসে আটকা পড়েছেন। ওইদিন যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে চলে গেলেও তিনি এবং তার দুই সহকারী তিন দিন যাবত আটকা পড়ে আছেন।

তিনি আরও জানান, রাস্তা বন্ধ থাকায় ঘুরে পেছন দিয়ে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। তিন দিন ধরে গোসল খাওয়াসহ নানা সমস্যায় পড়লেও কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে গাড়িতেই অবস্থান করছেন।

একইভাবে উত্তরাঞ্চল থেকে মালবোঝাই কাভার্ডভ্যানের চালক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তিন দিন যাবত আটকা পড়ে আছি সড়কে। কোম্পানির মাল ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। কিন্তু সড়ক অবরোধের কারণে যেতে পারছি না। খাওয়া ও গোসলে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, শনিবার আন্দোলনের শুরু থেকেই গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের আমাদের ক্রাইম ডিভিশন, ট্রাফিক ডিভিশন, শিল্প পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সকলে মিলে কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে টিএনজেড এর শ্রমিক ভাইয়েরা যে অবরোধ করে রেখেছে, আমরা তাদের বারবার বলেছি রাস্তাটা ছেড়ে দিয়ে সরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা যে বেতন পাচ্ছে না, এটার দাবিতে তারা অবস্থান নিয়েছে। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়টি বিজিএমইএ’সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা করা হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে।

img

ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৯৬ নতুন রোগী

প্রকাশিত :  ১৩:৩৮, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৯৬ জন।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৯৮, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩০, খুলনা বিভাগে ৭২ জন রয়েছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ৩২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২০ জন, রংপুর বিভাগে ৮ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৭৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৪৬৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৬ হাজার ২২৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৫২৯ জনের। এছাড়াও গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।