img

জলবিদ্যুতের জন্য দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত :  ০৮:৩৪, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:০০, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

 জলবিদ্যুতের জন্য দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেপাল ও ভুটানের উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন । 

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের সাইডলাইনে সোশ্যাল বিজনেস গ্রুপের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুৎ গ্রিড না থাকায় হিমালয়ের দেশগুলোর বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনা স্তিমিত রয়েছে।

বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুতের গ্রিডের অভাবে হিমালয় দেশগুলোর বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা অব্যবহৃত রয়ে গেছে। নেপালের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, দেশটির ৪০০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মতো বড় দেশগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সহজেই নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারে, কারণ এটি বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৪০ মাইল দূরে। নেপালের জলবিদ্যুৎও সস্তা হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরি করার কথা ভাবতে হবে।

জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বন্যা রোধে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পানি ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। পানি আমাদের প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। আমাদের এমনভাবে পানি ব্যবস্থাপনা করতে হবে যাতে তা প্রকৃতিকে সমর্থন করে।

যুব উন্নয়ন ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার জানুয়ারিতে তরুণদের জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করবে। যখন দেশের ক্রিকেট বোর্ড তার বার্ষিক টি-টোয়েন্টি বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট করবে। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং আইওসি প্রেসিডেন্ট টোমাস বাখ উৎসবে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নারী ফুটবলের জন্য একটি টুর্নামেন্টেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কেও কথা বলেন, যা শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ বর্বর স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছিল। তিনি কপ২৯-এর মূল বিষয় এবং কার্বন ক্রেডিট নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান আলোচনার বিষয়েও কথা বলেছেন।

জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবতরণ করেন। এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বেলা ১১টার দিকে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

জাতীয় এর আরও খবর

img

সব দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই : তারেক রহমান

প্রকাশিত :  ১৫:১১, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে গড়তে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব। আমরা সকল দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। আন্দোলনরত যে দলগুলো ছিলাম, একসঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা চাই সব দলকে নিয়ে এমন একটি সরকার গঠন করতে যাতে মানুষ তাদের মতামত রাখতে এবং সবাই মিলে কাজ করতে পারবে।’

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। এর আগে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির একক আন্দোলন সফল হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দল ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নেমে এসেছিল বলে আমরা আন্দোলনকে সফল করতে পেরেছি। লাখো কোটি মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ঠিক সেভাবে বিএনপি একা দেশ গড়তে পারবে না। দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে জাতিকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট মাসে সবাই যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সেভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ঐক্যবদ্ধের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বিএনপিকে।’

তিনি বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে রকম ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করে সমাজের ব্যালেন্স নষ্ট করেছিল। আমরা চাই দেশকে পুনর্গঠন করতে। অনেক মানুষ আছেন যারা রাজনীতিতে জড়িত নন বা জড়াতে ইচ্ছুক না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করতে, মতামত রাখতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে চান। তাদের আমরা উচ্চকক্ষে স্থান দিতে পারি- যাতে তাদের মতামত জানতে পারি, যেন তারা ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করা হলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে শহীদদের স্মরণে সেসব স্থাপনার নামকরণ করা হবে। দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক ১০ জেলার নেতাদেরে রাষ্ট্রসংস্কারে দলের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। এতে সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিএনপির মানবাধিকার কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুল।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।


জাতীয় এর আরও খবর