জলবিদ্যুতের জন্য দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেপাল ও ভুটানের উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন ।
আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের সাইডলাইনে সোশ্যাল বিজনেস গ্রুপের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুৎ গ্রিড না থাকায় হিমালয়ের দেশগুলোর বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনা স্তিমিত রয়েছে।
বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী বিদ্যুতের গ্রিডের অভাবে হিমালয় দেশগুলোর বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা অব্যবহৃত রয়ে গেছে। নেপালের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, দেশটির ৪০০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মতো বড় দেশগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সহজেই নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারে, কারণ এটি বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৪০ মাইল দূরে। নেপালের জলবিদ্যুৎও সস্তা হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরি করার কথা ভাবতে হবে।
জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বন্যা রোধে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পানি ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। পানি আমাদের প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। আমাদের এমনভাবে পানি ব্যবস্থাপনা করতে হবে যাতে তা প্রকৃতিকে সমর্থন করে।
যুব উন্নয়ন ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার জানুয়ারিতে তরুণদের জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করবে। যখন দেশের ক্রিকেট বোর্ড তার বার্ষিক টি-টোয়েন্টি বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট করবে। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং আইওসি প্রেসিডেন্ট টোমাস বাখ উৎসবে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নারী ফুটবলের জন্য একটি টুর্নামেন্টেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কেও কথা বলেন, যা শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ বর্বর স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছিল। তিনি কপ২৯-এর মূল বিষয় এবং কার্বন ক্রেডিট নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান আলোচনার বিষয়েও কথা বলেছেন।
জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবতরণ করেন। এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বেলা ১১টার দিকে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।