img

‘দেশের সাফল্যের জন্য যোগ্য ও অভিজ্ঞ উপদেষ্টা চায় জনগণ’

প্রকাশিত :  ০৮:৫৩, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৭, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

‘দেশের সাফল্যের জন্য যোগ্য ও অভিজ্ঞ উপদেষ্টা চায় জনগণ’

রেজুয়ান আহম্মেদ

বাংলাদেশে সদ্য নিযুক্ত উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে অস্বস্তি ও অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে। তাদের মতে, বর্তমানে যারা উপদেষ্টার পদে রয়েছেন, তারা দেশের প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে পারছেন না। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণ আশা করে যে, দেশের শীর্ষপদে এমন ব্যক্তিরা আসবেন, যারা শুধুমাত্র পদবির জন্য নয়, বরং যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং বিচক্ষণতার বলে জাতির উন্নয়নে অবদান রাখবেন।

দেশের ক্রান্তিকালীন এই মুহূর্তে একমাত্র যোগ্য এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারেন বলে বিশ্বাস করেন জনগণ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই মতামত আরও জোরালো হয়েছে, যখন অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক অবক্ষয়, এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের প্রত্যেককে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সাধারণ মানুষের কাছে উপদেষ্টার পদ শুধু একটি মানসিক আশ্রয় নয়; এটি দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের একটি প্রধান ভিত্তি। জনগণ বিশ্বাস করে, সঠিক নেতৃত্ব এবং উপদেশের মাধ্যমে দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

অনেকেই মনে করেন, সদ্য নিযুক্ত উপদেষ্টারা তাদের যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার যথার্থ প্রমাণ দিতে পারেননি। এর ফলে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিচ্ছে, এবং নীতিনির্ধারণী পদক্ষেপগুলোতে আশানুরূপ গতিশীলতা নেই। জনগণের কাছে এই উপদেষ্টারা যেন বেমানান মনে হয়। একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন দেশটির জন্য কার্যকরী নেতৃত্ব প্রয়োজন হলেও, বর্তমান উপদেষ্টাদের পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্তগুলো তাদের অভিজ্ঞতার অভাবকে স্পষ্ট করে তুলছে। এই অবস্থায় জনগণের মনে প্রশ্ন উঠছে, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া হলো, যারা কার্যত দেশের জন্য দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নমূলক ভূমিকা রাখতে পারছেন না?

বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অভিজ্ঞ ও যোগ্য উপদেষ্টাদের পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এসব উপদেষ্টা সরাসরি নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে থাকেন। আর এই কারণেই জনমনে এই পদগুলোতে যোগ্য ব্যক্তিদের অবস্থান নিশ্চিত করার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।

বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে যে, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা কি সঠিকভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম? দেশের ভবিষ্যৎ এবং উন্নয়নের স্বার্থে এই প্রশ্ন এখন জনসাধারণের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষের জন্ম দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উপদেষ্টাদের যদি সত্যিই যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবিক দূরদর্শিতা থাকে, তবে তারা দেশের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতি সেই আদর্শকে বাস্তবায়িত করতে পারছে না।

এছাড়াও, যাদেরকে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট ধারণার অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের এই ধারণা যে, একজন উপদেষ্টা শুধু উপদেশ প্রদানকারী নন; তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য একটি পথ প্রদর্শকও বটে। তাই তাদের দৃষ্টিতে যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা ছাড়া এই গুরু দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া সম্ভব নয়।

সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা, শীঘ্রই দেশের নেতৃত্ব এমন কিছু উপদেষ্টা নিয়োগ করবে যারা সত্যিকার অর্থেই যোগ্য এবং বিচক্ষণ হবেন। তারা এমন কিছু ব্যক্তিত্ব দেখতে চান, যাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয়। তারা বিশ্বাস করেন, জাতীয় অগ্রগতির স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে একমাত্র সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে।

জনগণ আশা করে, যোগ্য এবং অভিজ্ঞ উপদেষ্টারা দেশের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। কারণ জাতীয় উন্নয়ন এবং প্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য এমন ব্যক্তিত্বদের দরকার, যারা বাস্তবজ্ঞান এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে জাতির সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবেন।

সর্বোপরি, দেশের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব, যা শুধুমাত্র অভিজ্ঞ এবং যোগ্য উপদেষ্টাদের মাধ্যমেই সম্ভব।


রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম

জাতীয় এর আরও খবর

img

সব দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই : তারেক রহমান

প্রকাশিত :  ১৫:১১, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে গড়তে হলে দল-মত নির্বিশেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই দেশ পুনর্গঠন সম্ভব। আমরা সকল দলকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। আন্দোলনরত যে দলগুলো ছিলাম, একসঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা চাই সব দলকে নিয়ে এমন একটি সরকার গঠন করতে যাতে মানুষ তাদের মতামত রাখতে এবং সবাই মিলে কাজ করতে পারবে।’

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক এ কর্মশালার আয়োজন করে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। এর আগে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির একক আন্দোলন সফল হয়নি। অনেক রাজনৈতিক দল ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নেমে এসেছিল বলে আমরা আন্দোলনকে সফল করতে পেরেছি। লাখো কোটি মানুষের মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ঠিক সেভাবে বিএনপি একা দেশ গড়তে পারবে না। দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে জাতিকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট মাসে সবাই যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সেভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ঐক্যবদ্ধের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে বিএনপিকে।’

তিনি বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে রকম ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব জায়গায় বিভেদ তৈরি করে সমাজের ব্যালেন্স নষ্ট করেছিল। আমরা চাই দেশকে পুনর্গঠন করতে। অনেক মানুষ আছেন যারা রাজনীতিতে জড়িত নন বা জড়াতে ইচ্ছুক না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করতে, মতামত রাখতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে চান। তাদের আমরা উচ্চকক্ষে স্থান দিতে পারি- যাতে তাদের মতামত জানতে পারি, যেন তারা ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এ সময় বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা কোনোভাবেই ২০ কোটির কম নয় বলে আমার ধারণা। ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জনশক্তি তৈরি করব। যাতে দেশে কোনো বেকারত্ব না থাকে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করা হলে গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে শহীদদের স্মরণে সেসব স্থাপনার নামকরণ করা হবে। দেশের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক ১০ জেলার নেতাদেরে রাষ্ট্রসংস্কারে দলের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। এতে সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিএনপির মানবাধিকার কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুল।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।


জাতীয় এর আরও খবর