img

পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হতে পারে ভারত!

প্রকাশিত :  ১০:০৭, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হতে পারে ভারত!

পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে ভারত। এ অবস্থায় পাকিস্তান জানিয়েছিল, ভারতকে খেলতে হলে পাকিস্তানেই আসতে হবে; নয়তো ভারতের বিকল্প কোনো দল খোঁজা হবে কিংবা আগামীতে ভারতের সঙ্গে আর খেলবে না পাকিস্তান।

দুদেশের এই দ্বন্দ্ব মেটানোর কাজ করার কথা ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির। তবে সংস্থাটি এক রকম হাল ছেড়ে দিয়েছে বলা চলে। পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজনে পানি ঢালার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। পাকিস্তানের বদলে অন্য কোথায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজন নিয়ে এখন ভাবতে হচ্ছে আইসিসিকে।

এমনটি হলে বড়সড় ধাক্কায় খেতে হবে পাকিস্তানকে। কেননা, সবশেষ ১৯৯৬ সালে নিজেদের মাটিতে কোনো আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করেছিল পাকিস্তান। মাঝের সময়টাতে লম্বা সময় দেশটিতে হয়নি ক্রিকেট। তবে সেই ধাক্কা সামলে পাকিস্তানে সবগুলো দেশ খেলে আসলেও ব্যতিক্রম কেবল ভারত। আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত দেশটিতে যাচ্ছে না। তাদের দাবি, তাদের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে আয়োজন করার।

দুই দেশের এই সমস্যা মেটাতে না পেরে এখন ভিন্ন আয়োজক খুঁজতে নামতে হচ্ছে আইসিসিকে। পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ভারতের দাবি মেনে না নিলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর সরিয়ে নিতে পারে আইসিসি। সেক্ষেত্রে শ্রীলংকা কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে হতে পারে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। পূর্বে নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার কথা বলা হলেও এ আলোচনা এখন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি।

এদিকে স্পোর্টস টাক একটি ভিডিও রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিসিসিআই-এর অভ্যন্তরীণ আলোচনার মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজনও রয়েছে। কেননা, পাকিস্তান যদি তার অবস্থানে অটল থাকে এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে; তবে টুর্নামেন্টটি ভারতে স্থানান্তরিত হতে পারে।

ক্রিকেট ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ক্রিকবাজ এক ‘কর্মকর্তা’র বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, ওই কর্মকর্তা টুর্নামেন্টের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। আইসিসি পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও সক্রিয় হতে পারত বলেও মনে করেছেন তিনি। 

এসব পরিস্থিতির মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে ধোঁয়াশা ক্রমেই বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে ভারতের আবদার মেনে নেওয়া ছাড়া খুব একটা বিকল্প নেই পাকিস্তানের সামনে।


খুলনাকে হারিয়ে প্রথম জয়ের স্বাদ নিল সিলেট

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ

img

ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

প্রকাশিত :  ১২:০৪, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:১৮, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের ঘরে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের তরুণরা। ফাইনালের বিগ স্টেজে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে। 

আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়া। এর আগে যা করেছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবারে করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই। 

১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। 

অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনেই গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে। 

১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে। 

এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট। 

এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।  

এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।

ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই থামল বাংলাদেশইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি। 

৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি। 

সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৭ রানে।

কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।