img

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ: ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত :  ০৪:৫৮, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ: ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকেই ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অঞ্চলটির অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে ৩৫০ বছর। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে। 

এমনটাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নসংক্রান্ত শাখা আঙ্কটাডের  প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে যুদ্ধ থামলেও এই জনপদের মানুষের জীবন স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে প্রায় ১৫ বছর।

যুদ্ধের আগে থেকেই দুর্বল অবস্থায় থাকা গাজার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি থমকে গেছে আগ্রাসনের কারণে। কেবল ন্যূনতম মানবিক স্বাস্থ্য ও খাদ্য পরিষেবাগুলো চলছে। তাও এর মধ্যে সুপেয় পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট তীব্রতর এবং এসব পরিষেবা বাইরে থেকেও খুব একটা দেয়া যাচ্ছে না। 

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যখন যুদ্ধ থামবে, তখন গাজাকে আবার প্রায় নতুন করেই গড়ে তুলতে হবে। গাজার এই পুনর্নির্মাণের জন্য শত শত কোটি ডলার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে এমন তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি। 

গাজায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩ হাজারের ছাড়িয়েছে। কোন পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়েছে, কোন পরিবার হারিয়েছে মাথা গোজার ঠাঁই। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে ইসরায়েল দেশটিতে যে পরিমাণ বোমা ফেলছে তাতে গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। 

প্রতিবেদন বলছে, ২শ’রও বেশি সরকারি ভবন, দেড়শ’ বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬১০টি মসজিদ ও ৩টি গির্জা ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার। 

এদিকে,  ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মরদেহ রয়েছে। পুরো গাজা অঞ্চলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কিছু কিছু মানুষ ১০ বারের বেশিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। 

জাতিসংঘ বলছে, ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৫ বছর লাগবে, আর এ কাজে খরচ হবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।

গাজায় অবকাঠামোর যে ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার। গাজার পানি উৎপাদনের সক্ষমতার প্রায় পুরোটাই ধ্বংস। বেসরকারি সংস্থা অক্সফামের প্রতিবেদন বলছে, এই ভূখণ্ডের পানির কূপের ৮৮ শতাংশ এবং পানি লবণমুক্ত করার সব কটি ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

নষ্ট হয়ে গেছে আবাদের জমিও। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বাগানের পর বাগান ধ্বংস হয়েছে। ১১ মাস ধরে গাজায় বোমাবর্ষণ চলছে। ফলে সেখানে খাদ্যাভাব বেড়েই চলেছে। 

এদিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

img

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত

প্রকাশিত :  ১৭:৩৩, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৩৭, ২২ এপ্রিল ২০২৫

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের একটি গ্রুপের ওপর বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট পহেলগামে এই ঘটনা ঘটেছে। মনোরম এই এলাকাটিকে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন পর্যটককে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এলাকাটি ঘিরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

নিহতদের মধ্যে কর্ণাটকের শিভমগ্গার এক ব্যবসায়ী রয়েছেন। নিহত ব্যক্তির পরিবার জানিয়েছে, তার নাম মুঞ্জুনাথ রাও (৪৭)। তিনি স্ত্রী পল্লবী ও ছেলে অভিজয়কে নিয়ে জম্মু-কাশ্মিরে ঘুরতে গিয়েছিলেন।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৮। সূত্রের খবর, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন।

হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানকার লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেছেন, ঘটনাস্থলে আর্মি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সবুজে ঘেরা বৈসরন উপত্যকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে তাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের কবলে পড়েন। সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা পর্যটকদের জনে জনে নাম জিজ্ঞাসা করে গুলি করেছে বলে ওই সূত্র জানায়। 

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে পহেলগাঁও যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার যেসব ঘটনা সাম্প্রতিক ঘটেছে তার মধ্যেই এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।

আব্দুল্লাহ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। “আমি অবিশ্বাস্য হতবাক। পর্যটকদের ওপর এই হামলা ঘৃণ্য কাজ,” তিনি বলেছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের ভারত সফরের সময়ই হামলা চালাল জঙ্গিরা। এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই এলাকায় ১৯৮৯ সাল থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা কমে আসছিল।



আন্তর্জাতিক এর আরও খবর