img

চার দফায় কমার পর বাড়ল সোনার দাম

প্রকাশিত :  ১৪:৪৯, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চার দফায় কমার পর বাড়ল সোনার দাম

টানা চার দফায় কমার পর এবার সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে এবার সর্বোচ্চ দুই হাজার ৯৩৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দাম বাড়ানোর ফলে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৪ হাজার ৫০৯ টাকা।  

আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকাল (২০ নভেম্বর) থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে। এর আগে গত ১৪ ন‌ভেম্বর ভরিতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৮০ টাকা কমানো হয়েছিল।  

নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ৯২ হাজার ২৮৬ টাকায় বিক্রি করা হবে।

সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত আছে রূপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা। 

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর সোনার দাম কমিয়েছিল বাজুস; যা ১৫ নভেম্বর কার্যকর হয়। ওই দামে এতো‌দিন সোনা কেনাবেচা হয়েছে। সেই হি‌সে‌বে আজ‌কে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা সোনা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৯ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ১ লাখ ১০ হাজার ৬১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ৯০ হাজার ২৩৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

গরীব ঋণ নিল, ঋণও রইল—রিকশাও গেল! বড়লোক চিল করে রেডিসনে—এটাই কি নিয়ম?

প্রকাশিত :  ১০:৫২, ১৪ মে ২০২৫

সকালবেলা শহর জেগে ওঠে; কিন্তু সেই জাগরণ সবার জন্য সমান নয়। কেউ উঠে এসির ঠাণ্ডায়, কেউ উঠে ভাঙা চালার নিচে। একজনের সকাল শুরু হয় কফি আর সংবাদপত্র হাতে, অন্যজনের শুরু হয় ভাঙা ছাতার তলায়—বুকভরা ঋণ আর মনের হাজারো দুশ্চিন্তা নিয়ে। এই বৈষম্যের শহরে সূর্য একই হলেও ভাগ্য একেবারে আলাদা।  

শহরের একপাশে বড়লোকদের চিন্তা চলে—\"কীভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশার বাজারে মুনাফা বাড়ানো যায়!\" তারা বিদেশ থেকে রিকশা আমদানি করে, ফ্যাশনেবল ডিজাইন করে গরীবের কাছে বিক্রি করে। কাস্টমসে শুল্ক দেয়, মুনাফা গুণে নেয়, নাম দেয় \"ব্যবসা\"।  

অন্যপাশে একজন গরীব মানুষ, যে দিনের পর দিন পায়ে হেঁটে শেষ সম্বল জড়ো করে কিংবা এনজিওর উচ্চসুদের ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছে। সে স্বপ্ন দেখে—এই রিকশাই তাকে বাঁচাবে। ভাবে, \"মেয়েটাকে স্কুলে পাঠাব, বউকে একদিন চিকেন খাওয়াব, ভাঙা চালা বদলে দেব।\"  

কিন্তু বাস্তব নিষ্ঠুর। কয়েকদিন না যেতেই ট্রাফিক পুলিশ থানার সামনে হুঁশিয়ারি দেয়:  

\"এই রিকশা অবৈধ! লাইসেন্স নেই—ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ!\"  

রিকশা জব্দ করে নিয়ে যায়; থানায় জমা হয়, মামলা হয়।  

পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি চোখে পানি নিয়ে বলে,  

\"স্যার, ঋণ করে কিনেছি… এটা ছাড়া সংসার চলে না…\"  

কিন্তু কেউ মন গলায় না। কেউ বলে না, \"এই দিনমজুরের পাশে দাঁড়াও!\" রিকশা গেল, ঋণ রয়ে গেল।  

ওদিকে সেই বড়লোক, যে রিকশা আমদানি করে বিপুল মুনাফা করে সে এখন রেডিসনের সুইমিংপুলের পাশে মদের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে:  

\"In retro mood—rickshaw nostalgia!\"

পেছনে আরামকেদারা, সামনে সিগারেট—চিল! 

প্রশ্ন ওঠে:  

যে রিকশা বানাল, সে \'উদ্যোক্তা\'; আর যে চালাল, সে \'অবৈধ\'?  

যে টাকা গুণল, তার \'মুনাফা\'; আর যে ঘাম ঝরাল, সে \'ঝামেলা\'?  

রাষ্ট্র শুধু বড়লোকের ব্যবসা রক্ষার জন্য?  

আইন শুধু গরীব দমনের হাতিয়ার?  

নীতিনির্ধারকদের চোখে শুধু ধনীদের স্বার্থ?  

একজন গরীব সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাইল—কেন তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়?  

রিকশা গেল, আয় বন্ধ হল, কিন্তু ঋণ রয়ে গেল।  

শুধু টাকা নয়—  

তার স্বপ্ন ভাঙল, ভরসা হারাল, মানসিক শক্তি নিঃশেষ হল।  

কেউ কি জিজ্ঞাসা করে?

এই পরিবার এখন কী খাবে?  

শিশুটির স্কুলের খরচ জোগাবে কে?  

অন্ধকারে নতুন করে দাঁড়াবে কীভাবে?  

এই অন্যায় কতদিন? 

গরীবের ঘাম \'অবৈধ\' আর স্বপ্ন \'আবর্জনা\' হওয়ার দিন শেষ কবে?  

এটি শুধু আর্থিক বৈষম্য নয়—এটি শ্রেণীভিত্তিক অবিচার,  

মানবাধিকারের লঙ্ঘন,  

রাষ্ট্রের নীরব ষড়যন্ত্র।  

চূড়ান্ত প্রশ্ন:

এই দেশে গরীবের বেঁচে থাকার অধিকার আছে কি?  

নাকি তারা শুধু \'ব্যবহারযোগ্য\'—ভোটের সংখ্যা, শ্রমের যন্ত্র?  

সময় এসেছে প্রতিবাদের: 

গরীবের কান্নাকে গুরুত্ব দেওয়ার।  

চিলের বিরুদ্ধে কান্নার সংগ্রাম গড়ে তোলার।  

স্বপ্ন:

একটি সমাজ যেখানে রিকশাওয়ালার মুখে সম্মান,  

আর বড়লোকের চিলের মধ্যেও ন্যায়বোধ থাকবে।


লেখক : রেজুয়ান আহম্মেদ