img

কমলগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ২

প্রকাশিত :  ০৬:৩৮, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৫৭, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

 কমলগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ২

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে একজন নিহত হয়েছেন। রোববার গভীর রাতে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নুরজাহান চা–বাগানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আলাল মিয়া। নিহত আলাল মিয়া সিলেট জেলার মোগলাবাজার থানার গোটাটিকর গ্রামের সোনাফর আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আরো দু’জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিনজন।

মাধবপুর ইউপি সদস্য ছালেহ আহমদ জানান, রোববার রাত পৌনে ২টার দিকে ১০/১২ জনের একদল ডাকাত ইউপি সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে চা বাগানের পাগলা ঘন্টা পেটালে স্থানীয় চা শ্রমিকরা ডাকাতদের ঘেরাও দেয়। এসময় ডাকাতরা স্থানীয় জনতার উপর হামলা করতে এগিয়ে গেলে স্থানীয় জনতা তাদের ধরে গণধোলাই দিলে ঘটনাস্থলে আলাল মিয়া নামের এক ডাকাত নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে গেলে রোববার ভোরে রক্তের ছাপ দেখে চা বাগানের ভেতর থেকে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেককে তীরবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসা বাকি ডাকাত সদস্যরা মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিদ আলির ভাতিজা সেজুল মিয়া লংগুরপাড় গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চারজন ডাকাত পালিয়ে গেলেও  সেজুল মিয়াকে আটক করা হয়।

পরে রোববার সকাল ৯ টায় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন এর ফুলবাড়ি চা বাগানের সেকশন থেকে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় শ্রীপুর গ্রামের শ্রাবণ মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরপে জসিমকে আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করে স্থানীয় চা শ্রমিকরা। পুলিশ আহতদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত আলাল মিয়া রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অপর আহত কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরপে জসিম (৩৮) মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

গণপিটুনিতে আলাল মিয়া নামে এক ডাকাত নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আকনজী জানান, আটক ডাকাতদের বিরুদ্ধে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন থানায় ডাকাতির মামলা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, জনরোষ থেকে দুই ডাকাতকে গুরুতর আহত উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ডাকাতির ঘটনায় আটক ৩ জন হলেন কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুরপার গ্রামের আরজদ আলীর ছেলে সেজুল মিয়া (৩৭), শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৪১) ও শ্রাবন মিয়ার ছেলে জাসিম মিয়া ওরপে জসিম (৩৮)। আটককৃতদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

বাহুবলে পাঁচ টাকার বিরোধে ৪ গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত শতাধিক

প্রকাশিত :  ১৫:২২, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে ৫ টাকা টমটম অটোরিকশার ভাড়াকে কেন্দ্র করে চার গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত শতাধিক লোকজন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মৌছাক এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

জানা যায়- উপজেলার সাতপাড়িয়া গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে টমটম অটোরিকশা ৫ টাকা ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা হয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম কবিরপুরের এক ব্যক্তির। এ নিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিষয়টি উভয় গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কবিরপুর গ্রামের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ভেড়াখাল গ্রাম ও সাতপাড়িয়া গ্রামের পক্ষে অবস্থান নেয় বহরুয়া গ্রাম। ভয়াবহ সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত শতাধিক লোকজন আহত হয়।

এদিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর সংঘর্ষ চলায় সড়কের দু’পাশে আটক পড়ে শত শত যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষ চলায় দীর্ঘ হতে থাকে যানবাহনের সারি। পরে বাহুবল থানা পুলিশ ও হাইওয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, টমটম অটোরিকশা ভাড়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর