আগামী বছরের (২০২৫ সালে) হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। নতুন সময় অনুযায়ী আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৫ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, সরকারি-বেসরকারি উভয় মাধ্যমে হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।
এত বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে এবং একই সঙ্গে হজ প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করার জন্য সম্মানিত হজযাত্রীদের অনুরোধ করা হলো।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩৯ হাজার ৭৫৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৩৬৯ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৫ হাজার ৩৮৯ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন।
উল্লেখ্য, ওই সময়ের পর আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
দুর্বৃত্তদের গুলিতে রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া নিহত হয়েছেন। তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি খুন করে পালানোর সময় দ্রুত রিকশা না চালানোয় চালককেও গুলি করে তারা।
গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মিরপুরের পল্লবী এলাকার একটি দোকানে ঢুকে প্রকাশ্যে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি করে হেলমেট পরা তিনজন। মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।
গুলি করেই দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় গোলাম কিবরিয়াকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে, চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ভিড় করেন যুবদল ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ড। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার বিচার করতে হবে।
পুলিশ বলছে, হত্যাটি দলীয় কোন্দল নাকি অন্য কোনো কারণে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পল্লবী থানাধীন সেকশন-১২-এর ব্লক-সি, ৫ নম্বর রোডে বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসেছিলেন গোলাম কিবরিয়া। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত সরাসরি দোকানে ঢুকে পড়ে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিবরিয়াকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে মাথা, বুক এবং পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে উপর্যুপরি সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কিবরিয়া। তবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশে থাকা লোকজন এক দুর্বৃত্তকে আটক করে। আটক দুর্বৃত্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাত রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, কিবরিয়াকে গুলি করে অটোরিকশায় পালিয়ে যাওয়ার সময় দ্রুত না চালানোয় চালক আরিফকে (২০) গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আহত অবস্থায় চালককে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. পিয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তিনি মিরপুর সাড়ে ১১, সি ব্লক মোড়ের ঢালে অবস্থান করছিলেন। এ সময় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় তিনি আহত আরিফকে দেখতে পান। কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল না। পরে তিনি নিজেই প্রথমে স্থানীয় ইসলামী হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখান থেকে ঢামেকে আনা হয়।
পিয়ারুল আরও জানান, পথে আহত আরিফ তাকে বলেন, দুজন হেলমেট পরা ব্যক্তি তার রিকশায় উঠে দ্রুত চালাতে বলে। কিন্তু রিকশার ব্যাটারিতে পর্যাপ্ত চার্জ না থাকায় সে দ্রুত চালাতে পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আরিফের কোমরে গুলি করে দ্রুত রিকশা থেকে নেমে পালিয়ে যায়।
পল্লবী থানা পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। ঘটনাটি দলীয় কোন্দল নাকি এতে অন্য কোনো বিষয় রয়েছে; তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।
পল্লবী থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান বলেন, জনগণের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃত যুবকের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে। এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
এদিকে, কিবরিয়াকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে পল্লবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।