img

লন্ডন মুসলিম সেন্টারে ইসলামফোবিয়া বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত :  ০৭:১৭, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

লন্ডন মুসলিম সেন্টারে ইসলামফোবিয়া বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মুসলিম কমিউনিটি এসোসিয়েশন (এমসিএ) এর উদ্যোগে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর ২০২৪)  \"ইসলামফোবিয়া উন্মোচিত: মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব\" বিষয়ক  সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ নভেম্বর শুক্রবার  সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারের ২য় তলায় অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এমসিএ এর সাবেক প্রেসিডেন্ট দেলোয়ার হোসেন খান, শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার সংগঠন মুসলিম ভয়েস এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহফুজ নাহিদ। 

সেমিনারে অতিথি ছিলেন মিডল ইস্ট আই’র পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক, লেখক ও কলামিস্ট পিটার ওবোর্ন, ব্রিটিশ গিল্ড অফ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাডেল ইভান্স অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সাংবাদিক তারেক হোসেন, মুসলিম কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি, মুসলিম এইডের সাবেক সিইও ব্যারিস্টার হামিদ হোসেন আজাদ,  মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল, লেখক ও গবেষক ডক্টর মোহাম্মদ আব্দুল বারি, লন্ডন ইস্ট একাডেমির সাবেক প্রিন্সিপাল, লেখক ও সংগঠক মুসলেহ ফারাদী, ব্যারিস্টার খালেদ নুর, ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক মো: আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারলসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়াকর্মীরা।

অনুষ্ঠিত সেমিনারে লেখক ও কলামিস্ট পিটার ওবোর্ন বলেন, ইসলামোফোবিয়া ইউরোপ জুড়ে এবং যুক্তরাজ্যে বাড়ছে, যা আমাদের সম্প্রদায়, রাজনীতি এবং মিডিয়াকে প্রভাবিত করছে। আমরা এই ক্রমবর্ধমান হুমকির মোকাবিলা করছি, বিশেষ করে ব্রিটিশ রাজনীতি এবং মিডিয়ার মধ্যে, এবং চ্যালেঞ্জ এবং এটিকে অতিক্রম করার উপায়গুলি অন্বেষণ করি৷ 

 ইউরোপীয় ইতিহাস এবং ইসলামফোবিয়া এর উপর চমৎকার আলোচনা করেন লেখক ও সাংবাদিক তারিক হোসেন। 

ব্যারিস্টার হামিদ আজাদ বলেন, ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলা করা শুধু মুসলমানদের দায়িত্ব নয়; এটি একটি বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা যার জন্য সরকারী পদক্ষেপ সহ সমষ্টিগত পদক্ষেপের প্রয়োজন। এই সেমিনার থেকে তিনি দাবি জানান যে সরকারকে অবশ্যই ইসলামোফোবিয়ার একটি আইনি সংজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে এবং দেশের নাগরিক হিসাবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো মুসলিম সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করতে হবে।

আসুন আমরা এমন একটি বিশ্ব গড়তে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করি যেখানে ঘৃণা ও কুসংস্কারের উপর পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়ার জয় হয়। এই সেমিনারটি আমাদের সৃষ্টিকর্তার দ্বারা নির্ধারিত প্রতিটি মানুষের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য টেকসই প্রচেষ্টার সূচনা করুক।

সেমিনারটি প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে শেষ হয় ।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

নিঃসঙ্গতা ও অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে পলাতক হাসিনার পুত্রের!

প্রকাশিত :  ০৮:২০, ১৬ মার্চ ২০২৫

ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া : বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর, একসময়ের ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এখন নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছেন। একসময় তিনি দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করতেন। তবে বর্তমানে প্রবাস জীবনের বাস্তবতায় খাপ খাওয়ানোর কঠিন লড়াইয়ে রয়েছেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা গেছে, তিনি ওয়াশিংটন ডিসির ভার্জিনিয়ার ডালাস শপিং মলে একাকী হাঁটছেন। সঙ্গে নেই কোনো দেহরক্ষী বা রাজনৈতিক সহযোগী। মাত্র ২২১ দিন আগেও যিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ জীবনযাপন করতেন, তার সেই অতীত এখন কেবলই স্মৃতি। মুখে ক্লান্তির ছাপ, চোখে উদ্বেগ—সব মিলিয়ে স্পষ্ট, নতুন বাস্তবতা তাকে সংকটে ফেলেছে।

গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। একসময় যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন, তারা আজ রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক পরিসরও ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। ফলে দলীয় উচ্চপর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি শেখ হাসিনার পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে বিদেশে পলাতক থাকা এই ব্যক্তি এখন গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। মাত্র সাত মাসের ব্যবধানে তার চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো তার জন্য সহজ হচ্ছে না।

একসময় যিনি ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, যিনি রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক দাপটের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে নিজের প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, তিনি এখন সময়ের কাছে এক নিঃসঙ্গ চরিত্র হয়ে উঠেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতা হারানোর ফলে তিনি শুধু রাজনৈতিকভাবেই নয়, ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবেও বড় পরিবর্তনের মুখে পড়েছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সকল সুবিধা তিনি উপভোগ করতেন, তা এখন পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।

একসময় বাংলাদেশের প্রশাসনে তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তার পরোক্ষ ভূমিকা ছিল বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছিল। ক্ষমতার দাপটে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস করেননি। কিন্তু বাস্তবতা এখন ভিন্ন। সেই গ্ল্যামার, সেই ক্ষমতার আস্ফালন—সবকিছুই এখন অতীত।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন আসার পর আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ যেমন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। ওয়াশিংটন থেকে ইউরোপের কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে আওয়ামী লীগের সমর্থন আগের মতো আর নেই।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ায় তারা আর আগের মতো সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ যে সংকটে পড়েছে, তা বিশ্লেষকরা একাধিকবার উল্লেখ করেছেন। বিশেষত, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রাজনৈতিক পুনরুদ্ধারের সুযোগ ক্রমশ কমে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার পুত্রের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটিও বড় প্রশ্ন। একসময় যিনি সরকারপ্রধানের সন্তান হিসেবে অবাধ ক্ষমতা ভোগ করতেন, তিনি এখন সেই অবস্থান থেকে অনেক দূরে।

বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের জন্য রাজনৈতিক পুনরুদ্ধারের সুযোগ কমে যাওয়ায় তাদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা আন্তর্জাতিক অভিযোগ এবং বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতি—সব মিলিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

ওয়াশিংটন ডিসির সাম্প্রতিক ছবিটি যেন সেই বাস্তবতারই প্রতিচিত্র। একসময় ক্ষমতাধর এই ব্যক্তি এখন নিঃসঙ্গ, হারিয়ে ফেলেছেন তার প্রভাব ও প্রতিপত্তি। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে তার জন্য কোনো নতুন পথ খোলা থাকে কি না, নাকি এই নিঃসঙ্গতাই তার নতুন বাস্তবতা হয়ে থাকবে!

কমিউনিটি এর আরও খবর