img

সামরিক আইন জারি : ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত :  ০৫:২০, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সামরিক আইন জারি : ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়ে দেশের পুরো রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তার কী করনীয়— সে বিষয়ে নিজের রাজনৈতিক দল পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে ইউন সুক ইয়োল বলেন, “সম্প্রতি যা ঘটে গেল, সেজন্য আমি খুবই দুঃখিত এবং সবার কাছে অন্তর থেকে ক্ষমা চাইছি।”

“রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য আমার দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা বিনা আপত্তিতে মেনে নেবো। আমি আর এই পদে থাকব কি না— সে ব্যাপারেও দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত থাকবে।”

প্রেসিডেন্টের ভাষণ শেষ হওয়ার পর পিপিপির শীর্ষ নেতা হান ডং হুন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ ইস্যুতে দল কোনোভাবেই ছাড় দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। হান বলেন, “প্রেসিডেন্ট তার পদে থাকা এবং দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতেই হবে। এটা আবশ্যিক।”

গত ৩ ডিসেম্বর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে আকস্মিকভাবে দেশজুড়ে সামরিক শাসন জারি করেন ইউন সুক ইয়োল। ইউন বলেছিলেন, পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সমর্থক শক্তিগুলোর হাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং সংবিধানকে রক্ষা করতে সামরিক আইন প্রয়োজন। তবে ভাষণে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকির কথা উল্লেখ করেননি।

টেলিভিশনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেওয়ার পরপরই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন পার্লামেন্টের বিরোধী ও সরকারি এমপিরা। কারণ সামরিক আইন জারি হলে পার্লামেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে এবং গণমাধ্যম ও প্রকাশকদের সামরিক আইন কমান্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। পার্লামেন্টের ক্ষুব্ধ আইনপ্রণেতারা একযোগে প্রেসিডেন্ট ইউনের জারি করা এ ডিক্রি প্রত্যাখ্যান করেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন জারি ঘোষণার পরপরই হেলমেট পরা সশস্ত্র সেনারা জানালা ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। একই সময়ে পার্লামেন্টের ছাদের ওপরে চক্কর দিতে শুরু করে হেলিকপ্টার। পার্লামেন্টের কর্মীরা অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র থেকে গ্যাস স্প্রে করে সেনাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে প্রতিবাদকারীরা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন।

পার্লামেন্টের চাপের মুখে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পরই তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন ইওল। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামরিক আইন জারির পর মধ্যরাতেই  মন্ত্রিসভা আইন বাতিল করার ব্যাপারে একমত হয়। এরপর বুধবার সকালে এমপি’রা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার আহ্বান জানান।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ইউন সুক ইয়োল সামরিক শাসন জারির পর দেশটির রাজনীতি যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল, গত কয়েক দশকে এমনটা দেখা যায়নি। বিরোধীদলীয় এক এক এমপি ইয়োনহ্যাপকে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করুন আর নাই করুন, আমরা তাকে অভিসংশন করব।”

সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি

img

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত

প্রকাশিত :  ১৭:৩৩, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৩৭, ২২ এপ্রিল ২০২৫

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের একটি গ্রুপের ওপর বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট পহেলগামে এই ঘটনা ঘটেছে। মনোরম এই এলাকাটিকে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন পর্যটককে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এলাকাটি ঘিরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

নিহতদের মধ্যে কর্ণাটকের শিভমগ্গার এক ব্যবসায়ী রয়েছেন। নিহত ব্যক্তির পরিবার জানিয়েছে, তার নাম মুঞ্জুনাথ রাও (৪৭)। তিনি স্ত্রী পল্লবী ও ছেলে অভিজয়কে নিয়ে জম্মু-কাশ্মিরে ঘুরতে গিয়েছিলেন।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৮। সূত্রের খবর, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন।

হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানকার লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেছেন, ঘটনাস্থলে আর্মি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সবুজে ঘেরা বৈসরন উপত্যকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে তাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের কবলে পড়েন। সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা পর্যটকদের জনে জনে নাম জিজ্ঞাসা করে গুলি করেছে বলে ওই সূত্র জানায়। 

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে পহেলগাঁও যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার যেসব ঘটনা সাম্প্রতিক ঘটেছে তার মধ্যেই এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।

আব্দুল্লাহ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। “আমি অবিশ্বাস্য হতবাক। পর্যটকদের ওপর এই হামলা ঘৃণ্য কাজ,” তিনি বলেছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের ভারত সফরের সময়ই হামলা চালাল জঙ্গিরা। এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই এলাকায় ১৯৮৯ সাল থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা কমে আসছিল।



আন্তর্জাতিক এর আরও খবর