img

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গুপ্তহত্যা, নির্বিকার কেন পুলিশ?

প্রকাশিত :  ০৬:৪২, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গুপ্তহত্যা, নির্বিকার কেন পুলিশ?

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের । এসব শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত অপরিচিত ফোনকলে হত্যাসহ নানা হুমকির শিকার হচ্ছেন, যা তাদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। এই গুপ্তহত্যা, হামলা ও হুমকির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার এবং হুমকি প্রদানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। এতে তারা উল্লেখ করেছেন, কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের দাবিতে জুলাই বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিবাদের দোসররা বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে এবং ফোনকলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর দৃশ্যত নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং এটি ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাহস জোগাচ্ছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাহিন সরকার বলেন, হত্যাকাণ্ডগুলো গোপনে সংঘটিত হয়েছে এবং অনেক শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বলছে— এসব ঘটনার পেছনে পারিবারিক বা রাজনৈতিক কারণে ঝামেলা থাকতে পারে। তবে ডিএমপি কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি শাবাব হোসেন মেহের জানান, ১৭ ডিসেম্বর রাতে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি তাকে জানায়, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবে না এবং তার পরিবারকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হবে না। শাবাব ওই নম্বরটি থানায় জানালে পুলিশ ট্র্যাকিং করে গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের পরিচয়ে সরাসরি হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা জনগণের মধ্যে ভীতি তৈরি করবে।

যারা বিপ্লবীদের কাঁধে ভর করে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের লাশ এখন রাস্তায় পড়ে থাকে। অথচ ক্ষমতায় বসে থাকা অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে, যা দেশের জন্য অশনি সংকেত।

এদিকে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থীর গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিল থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এই মিছিল শুরু হয়, যা ‘জুলাই অভ্যুত্থান ও ভারতীয় অগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের তিন সহযোদ্ধার গুপ্তহত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে’ অনুষ্ঠিত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, যারা বিপ্লবীদের কাঁধে ভর করে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের লাশ এখন রাস্তায় পড়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতায় বসে থাকা অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে, যা দেশের জন্য অশনি সংকেত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মঞ্জু জানান, ভারতীয় অগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম চলবে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করার দাবি জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এক বার্তায় জানান, দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গাজীপুরের তাজবির হত্যার পর শিক্ষার্থীরা যে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, তা বাস্তবায়ন করলে প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত হবে। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে টহল জোরদার করতে হবে যাতে আর কোনো মা-বাবার সন্তান এভাবে প্রাণ না হারায়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, এই ঘটনাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অনেক গ্রেপ্তারও হয়েছে।

img

১৩ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শেখ পরিবারের নাম বাদ দিয়ে গেজেট জারি

প্রকাশিত :  ১১:৩২, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গেজেট জারি করেছে সরকার। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অধ্যাদেশটি জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করা হয়। এর আগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অধ্যাদেশটি জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণের জন্য একই ধরনের নাম ব্যবহারের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি ও অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় এবং যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে; সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেন।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন

নেত্রকোনার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নাম হবে ‘নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়’, কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ‘নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়’, মেহেরপুর মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ করা হয়েছে।

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’, জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ‘মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় ‘এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।