img

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা, প্রজ্ঞাপন জারি

প্রকাশিত :  ১৪:৫৬, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা, প্রজ্ঞাপন জারি

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।  

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ২৪ মে ১৯৭২ সালে কলকাতা হতে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয় এবং তার বসবাসের জন্য ধানমন্ডিস্থ ২৮ নম্বর (পুরাতন) সড়কের ৩৩০-বি বাড়িটি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। কবিকে ১৯৭৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় এবং একই বছরে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। জীবনাবসানের পর কবিকে পরিপূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে সম্বোধন করে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮ জারি করা হয়।

এতে বলা হয়, ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের কলকাতার এলবার্ট হলে সমগ্র বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, এস, ওয়াজেদ আলী, দীনেশ চন্দ্ৰ দাশসহ বহু বরণ্যে ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কাণ্ডারি’ এবং ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টাগণ কবিকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। কাজী নজরুল ইসলাম সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃত হলেও তাকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে সরকারিভাবে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যেহেতু কবি কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবির মর্যাদার বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বীকৃত এবং যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাকে জাতীয় কবি ঘোষণা করেয সরকারি প্রজ্ঞাপন প্রত্যাশা করে, সেহেতু তার ঢাকায় আগমনের তারিখ হতে (৪ মে ১৯৭২) জাতীয় কবি ঘোষণাপূর্বক গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রস্তাব গত ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালের ৪ মে থেকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হয়েছে, সে কারণে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি ঘোষণা করা হলো এবং ইহা সকলের অবগতির জন্য গেজেট আকারে প্রকাশ করা হলো।

img

খাগড়াছড়িতে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে চাকমাদের বিজু উৎসব শুরু

প্রকাশিত :  ১২:২৬, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৮, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

সংগ্রাম দত্ত:পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চাকমা সম্প্রদায়ের বৃহত্তম সামাজিক অনুষ্ঠান বিজু উৎসব আজ থেকে শুরু হয়েছে। গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল অর্চনার মাধ্যমে উৎসব শুরু করেছেন খাগড়াছড়ির চাকমা জনগোষ্ঠীরা। 

ফুল বিঝু উপলক্ষ্যে শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর থেকে জেলা সদরের খবংপুড়িয়া এলাকায় চেঙ্গি নদীর দুই পাশে হাজারও নারী-পুরুষ ফুল নিয়ে সমবেত হন। গঙ্গা দেবির উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে পূজা অর্চনা করেন। বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের মিলনমেলায় বর্ণিল উৎসবে রূপ নিয়েছে চেঙ্গি নদীর পার। 

এছাড়া মাঈনি, ফেনী নদীসহ বিভিন্ন জলাধারে ফুল দিয়ে গঙ্গা দেবির অর্চনা করেছেন জেলার অন্যান্য উপজেলায় বসবাসরত চাকমা জনগোষ্ঠীরা। ফুল দিয়ে উৎসব শুরু, আগামীকাল মূল বিজু এবং শেষ দিন নতুন বছর বা গজ্জ্যাপজ্জ্যা পালন করা হবে। 

চাকমা সম্প্রদায়ের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সীরা ফুল সংগ্রহ করে নদী, ছড়া খালে ফুল দিয়ে গঙ্গা দেবির উদ্দেশ্যে পূজা করেন। কেউ একা, আবার অনেকে দলবদ্ধ হয়ে নানা রঙের ফুল গঙ্গা দেবির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে জলাধার। পুরোনো বছরের সব দুঃখ, গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে বরণ করতেই এই ফুল পূজার আয়োজন করেন চাকমারা।

খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গি নদীতে পূজা অর্চনা করতে আসা কৃষ্ণা চাকমা বলেন, ফুল বিঝুর দিন এখানে এসে অনেক আনন্দিত আমি। আগামীকাল হবে মূল বিজু। বাড়িতে পাজনসহ নানা পদের আয়োজন হবে। অতিথিদের আপ্যায়ন করব। পরদিন নতুন বছর উপলক্ষ্যে উৎসব করব, কেয়াং ঘরে যাব, বাতি জ্বালাব, প্রার্থনা করব।

নিতা চাকমা বলেন, এ অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য। আমরা ঐতিহ্য ধারণ করি। আমাদের চাকমাদের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সবাইকে নিয়ে আমরা উৎসব পালন করি।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য বঙ্গ মিত্র চাকমা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎসবমুখর পরিবেশে বিজু উৎসব পালন করছি। আসা করছি অনাগত দিনগুলো ভালো কাটবে। এ সম্মিলিত সংস্কৃতির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভ্রাতৃত্ব বোধ গড়ে উঠবে।

আগামীকাল ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির দেনে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘বৈসু’ এবং বাংলা নববর্ষের দিন থেকে মারমা সম্প্রদায়ের ‘সাংগ্রাই’ উৎসব শুরু হবে। উৎসব চলবে টানা ৩ দিন।