
ইউরোপ যাওয়া হচ্ছে না সাবিনা-ঋতুর

২০২২ সালে সাফ জেতার পর সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমাদের জন্য ইউরোপে খেলার দরজা উন্মুক্ত ছিল। স্বপ্নটা বাস্তবে ধরা দিতে এসেও হারিয়ে গেল। প্রথমবার দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে সেরা হওয়া মেয়েদের খেলা হয়নি সে সময়।
গত বছরের অক্টোবরে হিমালয়ের কোলে আরেকটি রূপকথা লেখার পর ইউরোপিয়ান ক্লাবে খেলার পথটি সুগম হয়ে যায় সাবিনা ও ঋতুপর্ণার। নর্থ মেসিডোনিয়ার ক্লাব টিভেরিজা ব্রেরার কর্তারা সাবিনা ও ঋতুকে খেলানোর জন্য প্রক্রিয়াও শুরু করেন। এমনকি সে দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দেন তারা। কথা ছিল, এ বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের দুই নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করা। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম মাসের এক সপ্তাহ পার হলেও ইতিবাচক জবাব আসেনি টিভেরিজা ক্লাবের কর্তাদের কাছ থেকে।
উত্তর আসার আর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে গতকাল সমকালকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ নারী দলের গোলরক্ষক কোচ মাসুদ আহমেদ উজ্জল, ‘ইউরোপে আর হবে না। ১৫ তারিখ থেকে ফুটবলারদের চেয়েছিল, আজকে (মঙ্গলবার) জানুয়ারির ৭ তারিখ। তাদের রাজনৈতিক সমস্যা হয়েছে নাকি।’
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সাবেক কোচ মেসিডোনিয়ান ইয়োগোস্লাভ ত্রেনচোভস্কির সঙ্গে গোলরক্ষক কোচ উজ্জলের সুসম্পর্ক রয়েছে। দু’জনের আলাপের মাধ্যমেই মেসিডোনিয়ার ক্লাব টিভেরিজার জার্সিতে সাবিনা-ঋতুর খেলার কথা চলে। কিন্তু সেখানে নারী লিগের মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে বাজেট ঘাটতির বিষয়টি সামনে আনেন টিভেরিজার কর্তারা।
বিষয়টি নিয়ে হতাশ নারী সাফের সেরা ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা, ‘মেসিডোনিয়ার ক্লাবটির নাকি সমস্যা হয়েছে। রাজনৈতিক পালাবদল, আবার তাদের নাকি বাজেট নেই। এসব কারণে আমাদের আর সেখানে খেলা হবে না।’
ইউরোপিয়ান ক্লাব টিভেরিজায় খেলার দরজা বন্ধ হলেও এশিয়ার একটি দেশে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন সাবিনা, ঋতুপর্ণা ও তহুরা খাতুন। যদিও ঋতুপর্ণা দেশের নাম বলতে চাচ্ছেন না, ‘ইউরোপের ক্লাব নাম বলেও সেখানে হয়নি। আমি চাই আগে সব কিছু চূড়ান্ত হোক, তার পর আপনাকে জানাব।’
নারী সাফের সেরা ফুটবলার বিষয়টি গোপন রাখলেও বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নারী লিগের একটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব এসেছে এ তিনজনের। সেই প্রস্তাবটি আরও আগে দিয়েছেন ভারতের নারী দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার বালা দেবি। গত মৌসুমে কলকাতার ক্লাব শ্রীভুমির হয়ে খেলেছিলেন ৩৪ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড।
অবশ্য বালা দেবি প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন যখন সাবিনা-ঋতুদের ইউরোপে খেলা নিয়ে আলোচনা চলছিল। সূত্র জানিয়েছে, সেই সময় বালা দেবি বলেছিলেন যদি ইউরোপে খেলা না হয়, তাহলে তাদের নারী লিগে যেন সাবিনা, ঋতুপর্ণা ও তহুরাকে দেয়। ইউরোপের দরজা বন্ধ হওয়ার পর এখন ভারতের ওমেন্স লিগে খেলার হাতছানি বাংলাদেশের এ ত্রয়ীর। সেটা বালা দেবির ক্লাব শ্রীভুমি নাকি অন্যটা; তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।