img

HMPV: জনসচেতনতার আহ্বান: শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে সজাগ থাকুন

প্রকাশিত :  ০৮:৫০, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

HMPV: জনসচেতনতার আহ্বান: শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে সজাগ থাকুন

রেজুয়ান আহম্মেদ

স্বাস্থ্যই জীবনের মূলধন। তবে যখন নতুন কোনো রোগ বা ভাইরাস আবির্ভূত হয়, তখন আমাদের দায়িত্ব হয়ে যায় এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন ও সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় উঠে এসেছে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV), যা শ্বাসতন্ত্রের গুরুতর রোগের জন্য দায়ী। এটি বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক। এই ভাইরাস সম্পর্কে জানুন এবং সতর্ক থাকুন।

HMPV: কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

HMPV একটি শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস যা ২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হয়। এটি সাধারণ ফ্লু বা সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে এই ভাইরাসটি বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য এটি বেশি বিপজ্জনক।

HMPV-এর লক্ষণ

HMPV-এর লক্ষণ হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে।

প্রাথমিক লক্ষণ: নাক দিয়ে পানি পড়া, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি।

গুরুতর লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, বুকের চাপ, তীব্র কাশি,  শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত শ্বাস নেওয়া বা বুক দেবে যাওয়া।

করণীয়

যদি উপরের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লক্ষণ অনুযায়ী ঘরোয়া পরিচর্যা চালান।

গুরুতর ক্ষেত্রে অক্সিজেন থেরাপি বা নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হতে পারে।

যারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ

এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলো হলো:

 ১. ৫ বছরের নিচে শিশু।

 ২. ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্ক।

 ৩. দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা।

 ৪. দীর্ঘমেয়াদি হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত রোগী।

সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা

HMPV সনাক্ত করতে RT-PCR টেস্ট বা নাক ও গলার লালার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রোগটি নির্ণয় হলে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

চিকিৎসা:

জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল।

ডিহাইড্রেশন ঠেকাতে প্রচুর তরল গ্রহণ।

গুরুতর ক্ষেত্রে অক্সিজেন থেরাপি।

প্রতিরোধ:

 ১. নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।

 ২. হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার।

 ৩. আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকা।

 ৪. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ।

সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের

HMPV-এর মতো ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা জরুরি। আমরা যদি নিজে সচেতন হই এবং অন্যদের সচেতন করি, তাহলে সংক্রমণের হার কমে আসবে।

শ্বাসতন্ত্রের এই ভাইরাস প্রতিরোধযোগ্য, তবে তার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা। শীতকালে ভাইরাসটি সক্রিয় থাকে, তাই এই সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেই, তাহলে HMPV প্রতিরোধ করা সম্ভব।

চলুন, সচেতন হই, সুরক্ষিত থাকি।

নিজে বাঁচি, অন্যকেও বাঁচাই।


রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম
img

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে ট্রাম্পের পোস্ট, যা জানা গেল

প্রকাশিত :  ০৬:৪৪, ১৬ মার্চ ২০২৫

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সম্প্রতি, বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরত আসা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প “Sheikh Hasina is coming back as Bangladesh PM soon.” শীর্ষক এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেছেন দাবিতে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কোনো পোস্ট করেননি। বরং, ট্রাম্পের নাম ব্যবহার করে তৈরি একটি ফ্যান অ্যাকাউন্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে এই ভুয়া দাবি ছড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত এক্স পোস্ট খুঁজে বের করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ১৩ মার্চ ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটি করা হয়। তবে অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসল অ্যাকাউন্ট নয়। অ্যাকাউন্টটিতে ডোনাল্ড জুনিয়র ট্রাম্প নামের পাশে ‘Update’ শব্দ লেখা রয়েছে। অর্থাৎ, এটি ট্রাম্প বা তার বিষয়ে নিয়মিত আপডেট প্রদানকারী অ্যাকাউন্ট বলে প্রতীয়মান হয়।

এক্সের হেল্প সেন্টারে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক্স-এ মানুষ প্যারোডি, ধারাভাষ্য, এবং ফ্যান অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে, কিন্তু তাদের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে যাতে অ্যাকাউন্টগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে। অ্যাকাউন্টের নাম এবং বায়োতে “প্যারোডি,” “ফেক,” “ফ্যান,” এমন শব্দ অন্তর্ভুক্ত করে স্পষ্ট করতে হবে যে এসকল অ্যাকাউন্ট মূল ব্যক্তি বা ব্র্যান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও, এক্স প্ল্যাটফর্মে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট দেখা যায়। এর মধ্যে ইলন মাস্ক, ভ্লাদিমির পুতিনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নামেও ফ্যান বা প্যারোডি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট আবার নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে ভেরিফাই হতেও দেখা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত এক্স পোস্টটির সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্পর্ক নেই। তার নাম ব্যবহার করে তৈরি একটি ‘আপডেট’ অ্যাকাউন্ট থেকে করা পোস্টকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা পোস্ট ভেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

এছাড়া, ট্রাম্পের মূল এক্স অ্যাকাউন্টে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। সুতরাং, শেখ হাসিনা দেশে ফেরা নিয়ে ড্রোনাল্ড ট্রাম্প এক্স-এ পোস্ট করেছেন দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।