
HMPV: জনসচেতনতার আহ্বান: শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে সজাগ থাকুন

রেজুয়ান আহম্মেদ
স্বাস্থ্যই জীবনের মূলধন। তবে যখন নতুন কোনো রোগ বা ভাইরাস আবির্ভূত হয়, তখন আমাদের দায়িত্ব হয়ে যায় এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন ও সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় উঠে এসেছে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV), যা শ্বাসতন্ত্রের গুরুতর রোগের জন্য দায়ী। এটি বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক। এই ভাইরাস সম্পর্কে জানুন এবং সতর্ক থাকুন।
HMPV: কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
HMPV একটি শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস যা ২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হয়। এটি সাধারণ ফ্লু বা সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে এই ভাইরাসটি বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য এটি বেশি বিপজ্জনক।
HMPV-এর লক্ষণ
HMPV-এর লক্ষণ হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে।
প্রাথমিক লক্ষণ: নাক দিয়ে পানি পড়া, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি।
গুরুতর লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, বুকের চাপ, তীব্র কাশি, শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত শ্বাস নেওয়া বা বুক দেবে যাওয়া।
করণীয়
যদি উপরের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লক্ষণ অনুযায়ী ঘরোয়া পরিচর্যা চালান।
গুরুতর ক্ষেত্রে অক্সিজেন থেরাপি বা নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হতে পারে।
যারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলো হলো:
১. ৫ বছরের নিচে শিশু।
২. ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্ক।
৩. দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা।
৪. দীর্ঘমেয়াদি হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত রোগী।
সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা
HMPV সনাক্ত করতে RT-PCR টেস্ট বা নাক ও গলার লালার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রোগটি নির্ণয় হলে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
চিকিৎসা:
জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল।
ডিহাইড্রেশন ঠেকাতে প্রচুর তরল গ্রহণ।
গুরুতর ক্ষেত্রে অক্সিজেন থেরাপি।
প্রতিরোধ:
১. নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
২. হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার।
৩. আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকা।
৪. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ।
সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের
HMPV-এর মতো ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা জরুরি। আমরা যদি নিজে সচেতন হই এবং অন্যদের সচেতন করি, তাহলে সংক্রমণের হার কমে আসবে।
শ্বাসতন্ত্রের এই ভাইরাস প্রতিরোধযোগ্য, তবে তার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা। শীতকালে ভাইরাসটি সক্রিয় থাকে, তাই এই সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেই, তাহলে HMPV প্রতিরোধ করা সম্ভব।
চলুন, সচেতন হই, সুরক্ষিত থাকি।
নিজে বাঁচি, অন্যকেও বাঁচাই।