img

কলরেট ও ইন্টারনেট নিয়ে সুখবর দিল এনবিআর

প্রকাশিত :  ১৩:১৬, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৬:০৩, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

কলরেট ও ইন্টারনেট নিয়ে সুখবর দিল এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কলরেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রাহক, মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবাদের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি সূত্র কালবেলাকে জানায়, এনবিআরের পক্ষ থেকে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে।

গত ৯ জানুয়ারি মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে মোবাইল সেবার ওপর বাড়তি ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে ২৩ শতাংশ করা হয়। পাশাপাশি বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের উপর। এতেই দেশব্যাপী সমালোচনা শুরু হয়। নাগরিক জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক জানান, এনবিআরের পক্ষ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে গ্রাহকরাই উপকৃত হবে। আমরা শুল্ক আরোপের পর থেকেই আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। বাড়তি এই শুল্ক আমাদের ওপর যতটা প্রভাব ফেলত তার চেয়ে বেশি গ্রাহকদের ওপর প্রভাব ফেলত।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনবিআরের এমন সিদ্ধান্তের কারণে আমরা সরকার ও এনবিআর উভয়কেই সাধুবাদ জানাই। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভ্যাট আরও কমিয়ে এর দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবার গতি ও মান বাড়াতে হবে। 

img

ইরানে নারীদের পোশাকবিধি মানতে বাড়ানো হচ্ছে ডিজিটাল নজরদারি

প্রকাশিত :  ০৮:২৮, ১৫ মার্চ ২০২৫

ইরানে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধান নিশ্চিত করতে ড্রোন, নজরদারি ক্যামেরা ও বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিন্নমত দমন এবং নারীদের পোশাকবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়িয়েছে দেশটির সরকার।

জাতিসংঘের এই তদন্ত মিশন জানায়, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ নাগরিকদের উৎসাহিত করছে, যেন তারা নারীদের পোশাকবিধি লঙ্ঘনের তথ্য সরবরাহ করে। খবর: বিবিসি 

তদন্তে উঠে এসেছে, ইরানে নারীদের হিজাব পরিধান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিস্তৃত নজরদারি চালানো হচ্ছে। ড্রোন এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করে প্রধান শহরগুলোর রাস্তায় নারীরা হিজাব পরছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয়ে বসানো হয়েছে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার, যা শিক্ষার্থীদের চেহারা স্ক্যান করে এবং নারীদের পোশাক পরীক্ষা করে। এছারাও নাজার (Nazer) নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে ইরানি পুলিশ, যার মাধ্যমে নাগরিকরা নারীদের পোশাকবিধি লঙ্ঘনের তথ্য জানাতে পারেন।

জনসাধারণের যানবাহনে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে, যাতে বাস, মেট্রো, ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সে কোনো নারী হিজাব না পরলে তা শনাক্ত করা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাজার অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট নারীদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দিতে পারেন। এরপর সংশ্লিষ্ট যানবাহনের মালিককে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। একাধিকবার আইন লঙ্ঘিত হলে গাড়ি জব্দ করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজাববিধি লঙ্ঘন করলে নারীদের গ্রেপ্তার, মারধর এমনকি পুলিশি হেফাজতে যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

২০২২ সালে নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশি নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়। তবে ইরানের সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, মাসার মৃত্যু হৃদ্‌রোগজনিত কারণে হয়েছে।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন বলছে, ২০২২ সালে শুরু হওয়া বিক্ষোভের দুই বছরের বেশি সময় পরও ইরানের নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইরানি কর্তৃপক্ষ নাগরিকদেরও নজরদারির কাজে যুক্ত করছে, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন।

এই প্রতিবেদন ১৮ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে। এতে প্রায় ৩০০ জন ভুক্তভোগী নারী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইরানের এই বাধ্যতামূলক হিজাবনীতি ও নজরদারির কঠোর ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে এবং নারীদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।